কলকাতা ব্যুরো: ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলি বনাম বিসিসিআই প্রধান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় দ্বৈরথ। বুধবার দিনভর ভারত জুড়ে উত্তাল-উত্তেজনার বিতর্কের পর শেষ রাতের পরিস্থিতি বলছে কোহলির ওপর বোর্ড কর্তারা এতটাই চটেছেন যে প্রয়োজনে দক্ষিণ আফ্রিকার ভূমিতে তাঁকে শোকজ করলেও অবাক হওয়ার মতো কিছু নেই। বিরাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অসত্য ভাষণ এবং পদের শালীনতা ভঙ্গের। আজ পর্যন্ত  ভারতীয় ক্রিকেটের ঊননব্বই বছরের ইতিহাসে বোর্ডেরই দেওয়া মঞ্চে বোর্ডেরই ওপর ভারত অধিনায়কের গোলাবর্ষণের মতো আজব কাহিনী আর দুটো নেই। আর কোহলি তো শুধু তীব্র সমালোচনাই করেননি বোর্ড প্রধানকে প্রকাশ্যে মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করে ছেড়েছেন।

কেউ কেউ আবার বলেছেন প্রথম টেস্টের আগে বিদেশের মাঠে শোকজ করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হবে। আবার কেউ কেউ বলেছেন এই ধরনের আচরণের প্রতিবাদ না করলে আমরা আছি কেন? কিছু একটা ব্যবস্থা তো নিতেই হবে। চিঠি দিতে হবে। কোহলি কেন এমন কথা বললো সেটারও কারণ দর্শাতে হবে তাঁকে।

শ্রীলঙ্কা কিংবা পাকিস্তানের ক্রিকেটে এমনটা মাঝেমধ্যে হলেও কোনও এক অজ্ঞাত কারণে সেই পরিবেশ ভারতীয় ক্রিকেটে আমদানি করতে চাইলেন বিরাট। সৌরভ বলেছিলেন, তিনি নিজে বিরাট কোহলিকে টি ২০ অধিনায়কত্ব ছাড়তে বারণ করেছিলেন। কিন্তু বিরাট সেই অনুরোধ রাখেননি। এরপর নির্বাচকরাও সাদা বলের ফরম্যাটে আলাদা অধিনায়ক রাখতে চাননি। তবে বিরাট পাল্টা দাবি করেন, তাঁকে কেউ অধিনায়কত্ব ছাড়ার অনুরোধ করেননি।

তবে বিরাট কোহলি বিতর্কে বৃহস্পতিবার মুখ খোলেন সৌরভ গঙ্গেপাধ্যায়। বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সাফ জানিয়ে দিলেন যে, তিনি কোনও বিবৃতি দেবেন না। বিষয়টা বিসিসিআই দেখছে। বুধবার দিনভর কার্যত মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ‘বিরাট বিস্ফোরণে’র পর বিবৃতি দেয়নি বোর্ডও। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ আজ সকাল থেকেই সৌরভের বাড়ির সামনে ছিল সংবাদমাধ্যমের ভিড়। এদিন দুপুরে সৌরভের কাছে বিরাট ইস্যুতে প্রশ্ন করা হলে বিসিসিআই প্রধান বলেন, “এই নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। বিসিসিআই ব্যাপারটা দেখছে। আমার কোনও বিবৃতি দেওয়ার নেই। এর বেশি আরেকটি মন্তব্যও করেননি সৌরভ। এরপর নিজের দফতরে ঢুকে যান তিনি।

বিসিসিআই সূত্রে খবর, বিরাটকে বোর্ডের তরফে যা যা বলা হয়েছিল তার সব কল রেকর্ডস বা ভিডিও কনফারেন্সের ফুটেজ রয়েছে। সেটা সামনে এলে আরও অস্বস্তিতে পড়বেন বিরাট। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিরাট কোহলির সম্পর্ক এমন তলানিতে পৌঁছেছে গতকালের সাংবাদিক বৈঠকের আগে তা বোঝাই যায়নি। বহুবার বিরাটের হয়ে ব্যাট ধরতে দেখা গিয়েছে সৌরভকেও।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, যিনি তাঁর ব্যক্তিগত অফিসে কেউ কাঙ্ক্ষিত কাজ না করা সত্ত্বেও তাঁকে সরান না, সেখানে বিরাটের অভিযোগ ভিত্তিহীন। দুধ আর জল আলাদা হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। তবে বিরাটের বক্তব্যে চটেছেন অনেকেই। কেউ মনে করাচ্ছেন, অনিল কুম্বলের সঙ্গে বিরাট কোহলির অভব্যতা আর অসৌজন্যের উদাহরণ। ইট মারায় পাটকেলটি যে খেতেও হবে বিরাটকে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর বিরাটকে টেস্ট অধিনায়কত্ব থেকে সরানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version