কলকাতা ব্যুরো: সমস্ত জল্পনার অবসান। মানিক সাহা হচ্ছেন ত্রিপুরার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার পরিষদীয় মিটিংয়ের পরে তাঁর নাম ঘোষণা করেন সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। আর তিনি মানিক সাহাকে উত্তরীয় পরিয়ে দিতেই তুমুল হই-হট্টোগোল শুরু হয়ে যায়। বৈঠকের মধ্য়েই মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল এনিয়ে আপত্তি দেখাতে শুরু করেন। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতেই কার্যত হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়।

সূত্রের খবর, মানিক সাহা ত্রিপুরা বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তিনি রাজ্যসভারও সাংসদ। এলাকায় দক্ষ সংগঠক হিসাবেও পরিচিত। দলের সংকটের দিনে তিনি শক্ত হাতে দলকে রক্ষা করেছিলেন। তার হাতেই এবার উঠছে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাটন। তবে এই চেয়ারকে ঘিরে দলের অন্দরের দ্বন্দ্ব এদিন প্রকাশ্যে চলে আসে।  

শুক্রবার অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক। আর শনিবার মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন বিপ্লব দেব। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই তাঁকে ইস্তফা দিতে বলা হয়। কয়েক মাস পরেই ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোট। ইতিমধ্যে সেখানে সংগঠন মজবুত করতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের যে অংশে সংগঠন মজবুত করছে তৃণমূল কংগ্রেস, সেই পূর্ব ত্রিপুরারই জনপ্রিয় নেতা মানিক সাহা। তবে কি মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত বদলের পিছনে ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়া তৃণমূলের ক্ষমতাকেই ভয় পাচ্ছে গেরুয়া শিবির? তা নিয়েই ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে জল্পনা। তবে বিপ্লবের ইস্তফাকে বিজেপিরই মাস্টারস্ট্রোক বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

প্রসঙ্গত,  রাজ্যসভায় সাংসদ হয়েছিলেন মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলে তাঁকে সাংসদ পদ ত্যাগ করতে হবে। এদিকে মানিক সাহা বলেন, নতুন দায়িত্ব পেলাম। এতদিন যে ভাবে বিজেপির একজন কার্যকর্তা হিসেবে কাজ করেছি, এখনও তাই করব। এখন প্রশ্ন বিপ্লব দেবকে কোন দায়িত্বে দেখা যাবে? বিজেপি সূত্রে খবর, বিপ্লব দেবকে রাজ্যসভার সাংসদ করা হতে পারে। আবার তাঁকে পুরোনো দায়িত্ব অর্থাৎ বিজেপির রাজ্য সভাপতি করা হতে পারে।

২০১৮ সালের ৯ মার্চ তিনি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেছিলেন। আর বিধানসভা ভোটের আগের বছর আচমকাই মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার ছেড়ে দিলেন তিনি। শোনা যাচ্ছে তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ করা হতে পারে। ফের তিনি দলের রাজ্যসভাপতির দায়িত্বেও ফিরতে পারেন। এনিয়ে জল্পনার পারদ চড়ছে। তবে বিপ্লবকে নিয়ে দলীয় স্তরে বিক্ষোভ দেখা যায়। তাঁকে নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়ে গেরুয়া শিবির। বেঁফাস মন্তব্যের জন্যও সমালোচিত হন বিপ্লব। এই পরিস্থিতিতে ত্রিপুরায় তাঁর জন্য দলের ভাবমূর্তিতে প্রভাব পড়ছিল বলে অভিযোগ। 

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version