সূর্য গুপ্ত

কি জ্বালা কি জ্বালা!!! অস্থান-কুস্থানের সব লোমকূপ জ্বালিয়ে দিল মাইরি! আরে, আমার এই সম্পাদক মশাই- এমনিতে দাদা আমি সাতে-পাঁচে থাকিনা- কিন্তু চাকরির ভয় ষোলো আনা! এই অবস্থায় কিছু বলতেও পারিনা আর ছোট বেলা থেকেই আমার আবার writer’s block । আসলে আমার বাবা রাইটার্স বিল্ডিংয়ের কেরানি ছিলেন তাও সেই বাম আমলে।সেই সুবাদে খুব ভালো টুয়েন্টি নাইন খেলা জানতেন, কিন্তু বিধি তখন সত্যি সত্যি বাম ছিল, ওই সব খেলা প্রতিক্রিয়াশীলরা অলিম্পিক, এশিয়ান গেমস বা রণজি ট্রফিতেও খেলতে দেয়নি। এই দেখো- আবার ধান ভানতে শিবের গীত- মাস্কবাদ থেকে মার্কসবাদ চলে যাচ্ছি ……আমার চাকরি থাকলে হয়!
সকাল বেলা থেকেই কি লিখব ভাবতে ভাবতে কিছুই মাথায় ঢুকছে না- তিন কাপ চা আর ছ’টা বিড়ি খেয়ে তিনবার পায়খানায় বসেও যখন কিছু মাথায় আসছে না ঠিক তখনই, ঠিক তখনই চোখ পড়ে গেলো মোবাইলে-ইয়া হুউউউউ- মিল গ্যয়া, হমকো আইডিয়া মিল গ্য়া। এক এক করে বন্ধুদের পাকড়াও করবো- দেখি কি হয়!।

পুজো সংগঠক: দ্যাখ ভাই,এবার তো মাস্ক আর ছ ফিট মাস্ট । এমনিতেই লোকজন ভয়-ভয়ে বেড়োবে- স্পনসর পাওয়ার মুশকিল ,এবার আমরা অনলাইন দর্শনের আয়োজন করছি ,একশো টাকায় পাঁচ মিনিট- পেটি,অ্যামা, গু সবরকম পে চলবে- বলে দিস সবাইকে! মনে মনে চার অক্ষরের একটা গালি দিয়ে ফোন কাটলাম।

সুন্দরী বান্ধবী: আমার খুব কষ্ট হচ্ছে রে , আমার চারটে ভাইযের মতো বন্ধুতো চারদিনের চারটে ড্রেস দেবে বলেছে। তিনটে বেস্ট ফ্রেণ্ড একজন মোবাইল, একজন ডিজাইনার শাড়ি আরেকজন পুজোর হাতখরচ কুড়ি হাজার টাকা দেবে বলেছিল । আমার বয়ফ্রেন্ড্ তো মান্তাসা দেবেই
– ম্যাচিং মাস্ক সব আমাকে কিনতে হবে রে, অনেক খরচ।

অতিবিপ্লবী বান্ধবী: শোন, পরিষ্কার করে কান খুলে শুনে রাখ ,আমি মাস্ক পড়বো না! তুই তো জানিস আমি কোনদিন ব্রা-প্যান্টিও পড়িনি- আমার শরীর আমার অধিকার! আর ছ-ফিট !!!?? অসম্ভব!! এটা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস- এরকম করে তো আর্মি মার্চ করে-এরকম অগ্রেশন আমি মানছি না। উৎসবে আমি সামিল হবো কিন্তু নিয়ম আমি মানবো না।

অভিনেতা বন্ধু: এতদিন পরে মনে পড়ল? কি বলবো বল , মাস্ক পড়লেই চোখে জল চলে আসছে- নিজের এই অপূর্ব মুখটা বড্ড মিস করছি। আর পুজোর সময় একটু উদ্বোধন টুদ্বোধন করে, কিশোর-শানুর দু-এক লাইন গেয়ে কুড়ি-পঁচিশ করে আসতো -মাস্ক পড়লে কে দেখবে আর কি শুনবে ………ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ফোন কেটে দিল!

টেলি মিডিয়া বন্ধু: মাস্ক পড়ে থেকে থেকে কুঁচকির মতো চুলকানি হয়ে গেল ভাই ঠোঁটে- খুব ব্যস্ত ভাই- পড়ে কথা হবে। ছ মাস পড়ে দেখা হবে।

ডাক্তার বন্ধু: ##$$%%##@@@ @#$$£¥¥¥¥¥ $$%%%%%%
আরো গালি দেবো না ফোন রাখবি???

ফ্যাশন ডিজাইনার বন্ধু: শোন না,আমি না খুব ব্যস্ত, ব্যাগ গোছানো হয়নি- প্যারিস যাচ্ছি পুজোর সময়- VICTORIA SECRET আমার ডিজাইন করা বিকিনি মাস্ক launch করছে! আরে শোন …নাকের দুটো ফুটোতে দুটো ঢাকনা আর দুটো ঠোঁটের মাঝখানে হাল্কা লেস ……কাউকে বলিস না please । একদিন রাতে সময় করে চলে আসিস ….দুষ্টু!!

পুলিশ বন্ধু: শুয়োরের বাচ্চা তোর ##$$$@!€££%$$#¥₩₩₩¥

আর কাকে ফোন করা যায় খুঁজতে গিয়ে দেখি ব্যাটারি লো বলতে বলতে ফোনটাও পঁইইইইক শব্দ করে অক্কা পেলো আর তাছাড়া এতো গালি খেয়ে মনটা কিরকম খারাপ হয়ে গেল! আমার চাকরি আর থাকবে না বুঝে নিয়েছি- যাই,আরেকবার পায়খানা গিয়ে দেখি, যদি কিছু মাথায় আসে !!

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version