কলকাতা ব্যুরো: আ গয়া, আ গয়া।
ভ্যাকসিন আ গয়া।
মোটেও ভুল কথা নয়।
ভারতে এসে গিয়েছে ভ্যাকসিন।
ভারতে আবিষ্কৃত নয় অবশ্য। বিলেতে তৈরি।
জ্ঞানের ধাত্রীভূমি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে।
ভাবছেন, আর কী, এবার তুড়ি মেরে তোমায় উড়িয়ে দেবো করোনা!
না মশাই, অত লাফাবেন না।
ভ্যাকসিন এসেছে বটে, তবে আমার- আপনার শরীরে ছুঁচে ভরে ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য নয়।
এই ভ্যাকসিন এল হিউম্যান ট্রায়ালের জন্য।
হ্যাঁ, মানুষের দেহে এই ভ্যাকসিনের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য এই ট্রায়াল।
আপাতত পেটি পেটি ভ্যাকসিনগুলি আছে পুনেতে। মঙ্গলবার পৌঁছে গিয়েছে লম্বা বিমান সফর করে।
অক্সফোর্ড থেকে মহারাষ্ট্রের পুনেতে। আপাতত সযত্নে ভ্যাকসিনগুলি রাখা আছে সিরাম ইনস্টিটিউটের গবেষণাগারে।
না মশাই, ইনস্টিটিউটটি মোটেও সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়।
পুরোপুরি বেসরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা। অন্য নানা রোগের ভ্যাকসিন তৈরিতে শুধু দেশে নয়, বিদেশেও অত্যন্ত জনপ্রিয় সিরাম।
আসল কথা শুনুন, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি করেছে সিরাম ইনস্টিটিউট।
ভ্যাকসিনটি বৈজ্ঞানিক ও সরকারি ছাড়পত্র পেলে বাণিজ্যিক উৎপাদনের অধিকার পাবে সিরাম।
পুনের ওই ইনস্টিটিউটে এজন্য গোটা পৃথিবী থেকে ছেঁচে বিজ্ঞানীদের এনে রাখা আছে।
ছাড়পত্র একবার পেলে হল, হাজার নয়, লক্ষ নয়, কোটি কোটি ভ্যাকসিন উৎপাদনের পরিকাঠামো রেডি করে বসে আছে সিরাম।
এই সংস্থার তত্ত্বাবধানে হিউম্যান ট্রায়াল চলবে আপাতত। এজন্য দেশে ১৭টি কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা এই কেন্দ্রগুলিতে কম করে ৩৫০ জনের ওপর এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে।
ভাববেন না যে টিকা দেওয়া হল আর সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া বুঝে ফেলবেন বিজ্ঞানীরা।
সব কিছুতে পাশ করলে সঙ্গে সঙ্গে আপনার ব্যবহারের জন্য এসে যাবে। মোটেও তা নয়।
এই সব কিছুতে পাশ করার জন্য ভ্যাকসিন দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট লোকটিকে নজরে রাখতে হবে।
দিনের পর দিন। বাহ্যিক মানে ওপরে লোকটির শরীরে কোন পরিবর্তন হচ্ছে কিনা, সে তো দেখা হবেই, ক্লিনিক্যালিও নিয়মিত নজরদারি চলবে যন্ত্র আর নানা ধরনের পরীক্ষায়।
ভারতে এসে গেল বলেই তাই লাফাবেন না যেন।
দিল্লি এখনও অনেকদূর। হ্যাঁ, এটা বলতে পারেন, হাতের মুঠোয় তো এসেছে।
আশায় বাঁচুক চাষা।
হরিবোল।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version