কলকাতা ব্যুরো: নদিয়ার হাঁসখালি গণধর্ষণের তদন্তে ঘটনাস্থলে পৌঁছল সিবিআই। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী ব্যুরোর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা মূল অভিযুক্ত সোহেল গয়ালির বাড়িতে দরজা ভেঙে ভিতরে যান। তারপর সেখানে নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু করেন।

এছাড়া তদন্তকারীদের একটি দল নির্যাতিতার বাড়িতে যান ৷ সেখানে গিয়ে নির্যাতিতার মা ও বাবার সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া কথা বলে জানার চেষ্টা করেন সেই রাতে ঠিক কী হয়েছিল। উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে হাঁসখালি গণধর্ষণের তদন্তে নেমেছে সিবিআই। এই ঘটনা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে উত্তাল গোটা রাজ্য। গোটা ঘটনায় কাঠগড়ায় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের স্থানীয় নেতার সমরেন্দ্র গয়ালির ছেলেই মূল অভিযুক্ত।

তবে এদিন তদন্তে গিয়ে অভূতপূর্ব এক পরিস্থিতির মুখে পড়েন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত সোয়েল গয়ালির ঘরে তল্লাশি শেষ করে বেরোতেই সিবিআইয়ের ডিআইজি অখিলেশ সিংয়ের সামনে হাত জোড় করে কান্নায় ভেঙে পড়েন নির্যাতিতার প্রতিবেশী এক মহিলা। হাত জোড় করে বলেন, স্যার একটা কথা আছে। স্যার আমারা বাড়ি থেকে বেরোতে পারি না। আমাদের ছেলেদের ধরে ধরে মারে। পুলিশ অভিযোগ নেয় না। আমরা এখানে শান্তিতে থাকতে চাই। এরপর সিবিআই আধিকারিক জানতে চান, কে মারে? মহিলা বলেন, সোয়েল গয়ালি।

এরপর সংবাদমাধ্যমকে তিনি আরও জানান, তাঁকেও ধর্ষণের হুমকি দিয়েছে অভিযুক্ত সোয়েলের বাবা সমরেন্দ্র গয়ালি। তিনি বলেন, ওরা গুন্ডা। ছেলে যেমন ধর্ষণ করেছে বাবা সমরেন্দ্র গয়ালি আমাকে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছিল। বলেছিল রেপ করে দেবে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সমরেন্দ্র গয়ালির বাড়িতে তালা ভেঙে ঢোকেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। রাত প্রায় ৯টা পর্যন্ত তল্লাশি চালান তাঁরা। তবে সন্ধে নামতেই এলাকায় রহস্যজনকভাবে লোডশেডিং হয়ে যায়। কখনো গাড়ির আলো জ্বালিয়ে, কখনো টর্চের সাহায্যে তল্লাশি চালান তাঁরা।

নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে গণধর্ষণ করা হয় ওই নাবালিকাকে। পরে বাড়িতে ফেলে দিয়ে যায় অভিযুক্তরা। পরে মেয়েটির মৃত্যু হয়। অভিযুক্তদের হুমকির জেরেই নির্যাতিতার চিকিৎসা করানো যায়নি বলে অভিযোগ। তাতেই মৃত্যু হয় বলে দাবি পরিবারের। তাঁদের আরও অভিযোগ, মৃত্যুর পর জোর করে মেয়েটির সৎকার করে অভিযুক্তরা। ঘটনার পাঁচদিন পর পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয় ৷ পুলিশ তদন্ত শুরু করে ৷ দু’জনকে গ্রেফতারও করে ৷ তারপর আদালতের নির্দেশে তদন্তে নামে সিবিআই ৷

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version