কলকাতা ব্যুরো: আট বছর তদন্তের পরেও সারদা কেলেঙ্কারিতে (Saradha Scam) উঠে আসা তথ্য সম্পর্কে আদালতকে অবগত করতে পারেনি সিবিআই। বৃহস্পতিবার তা নিয়েই হাই কোর্টের কড়া সমালোচনার মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

মামলায় সিবিআইয়ের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায়, “২০১৪ সাল থেকে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা সারদার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে সিবিআই (CBI)। এর পরেও সারদায় কাণ্ডে উঠে আসা তথ্য সম্পর্কে আইনজীবীর কোনও তথ্য নেই? এতদিন পরেও সিবিআইয়ের আইনজাবী আদালতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলছে ইনস্ট্রাকশনের জন্য সময় নিতে হবে!” এদিন কড়া সমালোচনার সুরে সেই প্রশ্নই তুলেছে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।

উল্লেখ্য, তৎকালীন সময়ে কাঁথি পুর এলাকায় একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ করেছিলেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন (Sudipta Sen)। সম্প্রতি কাঁথি পুরসভা থেকে সেই সংক্রান্ত নথি উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় তদন্ত চালাচ্ছে কাঁথি থানার পুলিশ। সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নির্দেশে যে মামলার তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই সেই মামলার তদন্ত রাজ্যের সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ করে কী করে, সেই প্রশ্ন তুলে এবং তদন্তকারী সংস্থা স্থানান্তরিত করার আরজি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন আইনজীবী অনিন্দ্যসুন্দর দাস। সেই মামলাতেই এদিন সিবিআইয়ের উদ্দেশে প্রশ্ন তোলে আদালত।

মামলাকারীর তরফে আইনজীবী সৌম্য মজুমদার বলেন, “ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করছে। সরদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনি এখন জেলে আছেন।” যদিও রাজ্যের তরফে আইনজীবী আমিতেশ বন্দোপাধ্যায় জানান, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিবিআই সরদার মানি লন্ডারিং কেসের তদন্ত করছে। কিন্তু কাঁথি থানা যে তদন্ত করছে সেটা চুরির তদন্ত। ফাইল লোপাটের তদন্ত। তার সাথে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্তের কোন যোগ নেই।” প্রশ্ন তুলে রাজ্যের দাবি, “২০১৪ থেকে সিবিআই তদন্ত করছে। কি করতে পেরেছে। সিবিআই ইন কনফিডেন্ট নয়। যে এত বছর তদন্ত করেও কিছু করতে পারেনি। সিবিআই যদি মনে করত তাহলে এই চুরির তদন্ত করতেই পারতো। কিন্তু তারা এই চুরির তদন্ত করেনি। এর থেকেই প্রমাণিত সিবিআই যে যে ধারায় তদন্ত করেছে, তার সাথে বর্তমান অভিযোগের কোন যোগ নেই। তাই কাঁথি থানা এ বিষয়ে তদন্ত করতেই পারে।”

এর প্রেক্ষিতে এপর্যন্ত সারদা মামলায় কী কী তথ্য উঠে এসেছে তা জানতে চায় আদালত। কিন্তু এবিষয়ে সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতকে অবগত করতে না পারায় আপাতত শুনানি মুলতুবি রেখেছে আদালত। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর এনিয়ে সিবিআইকে আদালতে তথ্য দিতে হবে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version