কলকাতা ব্যুরো: ‘কালী’ তথ্যচিত্রের পোস্টার নিয়ে মহুয়া মৈত্রের মন্তব্যে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। এবার তৃণমূল সাংসদের গ্রেপ্তারির দাবিতে সরব বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে সর্বোচ্চ আটদিন সময় বেঁধে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এর মধ্যে পদক্ষেপ না করা হলে আদালতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধী দলনেতাoppositionleader

সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া। সেখানেই ‘কালী’ তথ্যচিত্রর পোস্টার নিয়ে শুরু হওয়া বিতর্কে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়। জবাবে মহুয়া বলেন, আমার কাছে কালী এমন একজন দেবী যিনি মাংস ও মদ খান। আপনার স্বাধীনতা রয়েছে নিজের মতো করে আপনার ঈশ্বরীকে কল্পনা করার। কয়েকটি স্থানে তো দেবতাদের উদ্দেশে হুইস্কিও উৎসর্গ করা হয়। আবার কোথাও কোথাও তা নিন্দার্হ।

তাঁর এই মন্তব্যের পরই বিতর্কের ঝড় ওঠে। যদিও তৃণমূলের তরফে ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, মহুয়া মৈত্রর মন্তব্য তাঁর সম্পূর্ণ ‘ব্যক্তিগত’। দল কোনও ভাবেই এই মন্তব্যকে সমর্থন করে না বরং এই ধরনের মন্তব্যের কড়া নিন্দাই করে। এরপর থেকেই কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে সোচ্চার গেরুয়া শিবির।

বুধবার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিনে ভবানীপুরে তাঁর মূর্তিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে এসে শুভেন্দু অধিকারীর মুখে ঘুরেফিরে এল সেই প্রসঙ্গ। তিনি বলে দেন, পয়গম্বর বিতর্কে নূপুর শর্মার গ্রেপ্তারির দাবি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কালী নিয়ে তো এরকম কিছু হচ্ছে না। আমরা সাত-আটদিন অপেক্ষা করব। তারপরও যদি রাজ্য সরকার কোনও কড়া পদক্ষেপ না করে তাহলে সব FIR এক জায়গায় করে আদালতে যাব।

পাশাপাশি তিনি জানান, তৃণমূল সাংসদের মন্তব্যের বিরোধিতায় কৃষ্ণনগরে মা কালীর প্রতিমা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে বিজেপি। এই বিতর্ক নিয়ে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, রাজনীতির লড়াই হবে রাজনীতির ময়দানে। কিন্তু এখন সবকিছুকেই আদালতে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে শুভেন্দুর দাবি, বিষয়টি রাজনীতির ঊর্ধ্বে। মহুয়ার মন্তব্যে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে।

এদিকে এদিন সকাল থেকে বউবাজার থানায় ডেপুটেশন জমা দিয়ে থানার সামনে মহুয়া মৈত্রর গ্রেপ্তারির দাবিতে সরব হন বিজেপির মহিলা মোর্চা। তাঁদের অভিযোগ, মহিলা হয়ে মা কালীকে নিয়ে মহুয়ার বিতর্কিত মন্তব্য মানা যায় না। অবিলম্বে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে হবে। নাহলে ধরনায় বসার হুমকিও দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই মহুয়ার বিরুদ্ধে রঘুনাথপুর এবং রবীন্দ্র সরোবর থানায় FIR দায়ের হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version