অর্পণ বর্ধন

এই দিনটি আর পাঁচটা সাধারণ দিনের মতো নয়। সাধ্য থাক বা না থাক এই দিনটি সব বয়সের মানুষের কাছে একটু হলেও আলাদা মাত্রা যোগ করে। আর আমরাও চেষ্টা করি প্রতিবছর একটু অন্যভাবে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে। ঠিক আঁচ করেছেন “জন্মদিনের” কথা বলছি। এই দিনটিতে কেউ বাড়িতে পঞ্চব্যঞ্জন রান্না করে হোক কিংবা হোটেল বা রেস্তোরাঁয় সেলিব্রেশন মাস্ট। তবে এবার এক মজাদার, রোমাঞ্চকর তার থেকেও বেশি আশ্চর্যজনক ঘটনা আপনাদের শোনাবো। কথা দিচ্ছি শুনলেই মন নেচে উঠতে বাধ্য। ভাবুন তো পাহাড়ে চা বাগানের মধ্যে পালিত হচ্ছে আপনার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিনটি।

না এখানেই শেষ নয়। এ তো শুধু ট্রেলার। আসল গল্প এবার বলবো। পাহাড়ি চড়াই উতরাই পথ, সঙ্গে চা বাগান আর আপনি বসে আছেন বিলাসবহুল টয় ট্রেনের কামরায়। সঙ্গে রয়েছেন আপনার সবথেকে কাছের মানুষজন ও বন্ধুবান্ধব। সারাদিন চলবে কেক কাটা, খাওয়াদাওয়া আর দেদার আনন্দ।

তবে শুধুমাত্র টয় ট্রেনে বসেই নয়। স্টেশনে নামুন। প্রকৃতির আসল রূপ উপভোগ করুন। আপনি হাত বাড়ালেই পেয়ে যাবেন স্থানীয় মানুষজন ও বাচ্চাদের। যারা আপনার দিনটি আরও বেশি স্পেশ্যাল করে তুলবেন।

সম্প্রতি এমনই এক অভূতপূর্ব ঘটনার সাক্ষী হলো রাজ্যবাসী। শিলিগুড়ি নিবাসী রাজেশ, যিনি উত্তরবঙ্গের তরাই ও ডুয়ার্স অঞ্চলে জীবন কাটিয়েছেন। শনিবার তাঁর নাতনির ৩ বছরের জন্মদিন। আর সেই কারনেই দাদু নাতনির জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এক বিশেষ প্ল্যান করেন। শরণাপন্ন হন দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের। জানান নাতনির জন্মদিনে তাঁর বিশেষ গিফটের কথা। যেমন কথা তেমন কাজ। হিমালয়ান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও নিরাশ করেন নি রাজেশবাবুকে। একটি গোটা টয় ট্রেনের ব্যবস্থা করে দেন। আর দাদুর এমন গিফট পেয়ে বছর তিনেকের নাতনির আনন্দের অন্ত নেই।

শনিবার নাতনির সারাদিন কাটলো পরিবার-পরিজন, বন্ধু ও বন্ধুর বাবা-মায়ের সঙ্গে কেক কাটা, খাওয়া দাওয়া, দেদার হুল্লোড় করে। উপস্থিত ছিলেন ১২ জন বাচ্চা ও তাদের অভিবাবকেরা। কেক কাটা হয় শুকনা ফরেস্টের কাছে, এলাকার কচিকাঁচাদের নিয়ে। যা জন্মদিনের অনুষ্ঠানকে আরও বিশেষ মাত্রা দেয়। সফর শেষ হয় রংটং স্টেশনে।

সম্প্রতি শিলিগুড়ি থেকে রংটং স্টেশন পর্যন্ত দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ “ডিএইচআর জঙ্গল টি সাফারি” কে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে চাইছে। আর শনিবারের এই পদক্ষেপ পর্যটক তথা শিলিগুড়ির মানুষকে (তরাই ও ডুয়ার্স) আরও বেশি আকৃষ্ট করবে বলেই মত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের।

চাইলে আপনিও পারেন আপনার প্রিয়জনের জন্মদিন বা কোনও বিশেষ দিনের অনুষ্ঠান এই ভাবে উপভোগ করতে। তাহলে চিন্তা কিসের? একবার ট্রাই করে দেখুন না! কথা দিচ্ছি দিনটি সারাজীবন স্পেশ্যাল হয়ে থাকবে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version