মৈনাক শর্মা
বিতর্কের নাম পাকিস্তান। কখনো মহিলাদের পোশাক নিয়ে মন্তব্যের জেরে বিতর্কে জড়ান পাক প্রধানমন্ত্রী, আবার কখনো সার্জিকাল স্ট্রাইকের নিশানায় নাম সেই পাকিস্থানের। তবে এইবার বয়কট ফ্রান্স ও ফ্রান্সের রাষ্ট্র দূতকে ফেরানোর দাবীর প্রেক্ষিতে রণক্ষেত্রের আকার ধারণ করে পাকিস্তান। গ্রেপ্তার করা হয় বিরোধী দল তেহরিক ই লাব্বাইক পাকিস্তান দলের নেতাকে।

ঘটনার শুরু

বিগত কয়েক বছরে বেড়েছে ফ্রেঞ্চ ও পাকিস্থানের কূটনৈতিক সম্পর্কের দূরত্ব। দুরত্ব এতই যে ইসলাম ভাবাবেগে আঘাত দিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন ফ্রেঞ্চ রাষ্ট্রপতি। বিতর্কর জল এতোই গড়ায় যে ফ্রেঞ্চ জিনিসের উপর বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয় পাক আম জনতা। তাই এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইমরান খানের সরকারকে চাপে ফেলতে বার বার বয়কট ফ্রান্স ও ফ্রেঞ্চ রাষ্ট্রদূতকেও ফেরৎ পাঠানোর দাবী তোলে বিরোধী দল টি এল পি পার্টি।

আন্দোলনকে প্রথমে সমর্থন করলেও, অর্থনীতির ও সামরিক ক্ষেত্রে লক্ষে পরে নরম হয় ইমরান খানের সরকার। কারণ সামরিক দিকে পাকিস্তানকে দেওয়া অস্ত্র গুলিকে মেরামত ও আপডেটে অস্বীকার করে ফ্রান্স প্রধান মন্ত্রী মাক্রণ। তাই আন্দোলনকে থামাতে বিরোধী দলকে ব্ল্যাকলিস্ট করে গ্রেপ্তার করা করা হয় টি এল পি দলের নেতা সাদ রিজভীকে। তার পরেই রণক্ষেত্রের আকার ধারন করে লাহোর ও ইসলামাবাদ। বিরোধের ফলে ফ্রান্সের নাগরিকদের দেশে ফেরবার আর্জি জানান মাক্রন সরকার। আপাতত বহু জায়গায় বন্ধ ইন্টারনেট পরিসবা।

ভবিষ্যতে কি হতে পারে

 বিরোধের ফলে ফ্রান্সের নাগরিকদেরকে দেশে ফেরবার আর্জি জানান মাক্রন সরকার। মাত্র চার হাজারের মতো ফরাসি নাগরিক ফেরৎ গেলে আপাতত ক্ষতির মুখে না পড়লেও ভবিষ্যতে চিন্তা বাড়বে ইমরান খানের সরকারের। কারণ এই সংখ্যক ফরাসি নাগরিকই বৃহৎ মাপে শিল্প চালায় পাকিস্থানে। মত ৩২ টি সংস্থা রয়েছে, যাদের অন্যতম হলো পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন এন্ড ডিজাইন, পি আই এফ ডি কোলাবরেশন ইন্টারন্যাশনল ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড ইনস্টিটিউট মত সংস্থা। অর্থাৎ শিক্ষা থেকে শিল্প ও পরিবহন থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং – সর্বত্র ক্ষেত্রেই রয়েছে ফ্রান্স। শুধু তাই নয়, প্রায় ১৮৫ টি ফরাসি সংস্থা বর্তমানে পাক -ফ্রান্স বিজনেস চুক্তির সদস্য।

 ক্ষতিr সম্ভাবনা সামরিক ও অর্থনীতিতেও । ২০১৭র তথ্য অনুযায়ী, দ্বিপাক্ষিক বানিজ্য হয় ১.৪ ইউরোর। যা প্রতিবছর গড়ে বেড়ে দাঁড়ায় ৪.৬ শতাংশ। তাছাড়া অল্প কিছু ক্ষেত্রে আপাতত দিল্লির সাথে বাণিজ্যর দরজা খোলা থাকলেও, ভবিষ্যতে তা বন্ধ হলে আরও চিন নির্ভর হবে পাক সরকার। 

ফ্রেঞ্চ ও পাকিস্থানের কূটনৈতিক সম্পর্কের দূরত্ব প্রভাব পড়বে অন্যান্য দেশের বানিজ্য সংস্থা গুলির উপর। ভবিষ্যতে ফ্রান্স নিজের প্রভাবকে কাজে লাগালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ গুলির কাছে কোণঠাসা হতে পারে ইসলামাবাদ। বিভিন্ন দেশে ব্ল্যাকলিস্টেড হতে পারে পাক পাসপোর্ট। যা অবশ্য ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক ফলদায়ক হতে পারে দিল্লির জন্যে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version