কলকাতা ব্যুরো : আগাথা ক্রিস্টি বা ফেলু মিত্তির ও হার মানবেন। ফেসবুক লাইভ করে বছর পঁচিশ এর যুবক আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন দিল্লিতে। আয়ারল্যান্ড-এ বসে ফেসবুক এক অধিকর্তা তা দেখে ফোন করলেন দিল্লি পুলিশকে। দিল্লি পুলিশের সাইবার সেল সক্রিয় হয়ে উঠলো সঙ্গে সঙ্গে। এবং মুম্বাই পুলিশের এক ইন্সপেক্টর ও তার স্ত্রীর সক্রিয় চেষ্টায় ও অবশেষে প্রাণ বাঁচলো যুবকের। এক্কেবারে যেনহলিউড ফিল্ম স্ক্রিপ্ট।

ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৭.১০ নাগাদ ফেসবুক আধিকারিক কাল ফোন করেন দিল্লি পুলিশের সাইবার সেল এর ডিসিপি অনবেশ রায় কে। ফেসবুক আধিকারিক যে একাউন্ট থেকে ফেসবুক লাইভ করা হয় তার আইপি ফেসবুক একাউন্ট ও লাইভ ভিডিও দেওয়া হয় ফেসবুক দপ্তর থেকে দিল্লি পুলিশকে। তারপরই দিল্লি পুলিশ সেটা ট্র্যাক করা শুরু করে।
একটু খোঁজ নিয়েই জানা যায়, এটি পূর্ব দিল্লির মান্ড ওয়ালির ঘটনা। পূর্ব দিল্লির ডিসিপি জাসমিত সিং এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন সাইবার সেলের অফিসাররা। জাসমিত সিং জানিয়েছেন মাধুবিহার এর স্টেশন অফিসার সঙ্গে সঙ্গে ওখানে পৌঁছে যায়। দেখেন সেটি এক মহিলার নম্বর। মহিলা জানান ,আসলে সেই নম্বরটি ব্যাবহার করেন তার স্বামী। তবে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয় এবং সেই ব্যাক্তি মুম্বাই চলে গেছেন। তার পর থেকে মহিলা তার স্বামী সম্পর্কে কিছুই জানেন না। এদিকে সময় চলে যাচ্ছে। যে কোনো মুহূর্তে অঘটন ঘটে যেতে পারে। ডিসিপি অনবেশ রায় তখন যোগাযোগ করেন মুম্বাই পুলিশের সাইবার সেলের সঙ্গে। মুম্বাই সাইবার সেলের ইন্সপেক্টর ওই ব্যক্তি ও তার স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন।
সে সময় দিল্লিতে তার স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা গেলেও ওই ব্যক্তির ফোনে বারে বারে ফোন করা সত্বেও তিনি ফোন তুলছিলেন না।
তখন পুলিশের তরফে তার স্ত্রীকে সব জানানো হয় এবং বলা হয় হোয়াটস অ্যাপ এ স্বামীকে সংবেদনশীল একটি মেসেজ ছেড়ে রাখতে আর তাদের সন্তান এর ছবি পাঠিয়ে দিতে।
রাত প্রায় ১১.৩০ এ স্ত্রী জানান স্বামী মোবাইল এ তার ভয়েস মেসেজ দেখেছেন। তখনই তাকে তার স্বামী কে ফোন করতে বলা হয়। সে চেষ্টা সফল না হলে, পুলিশ থেকে সেই ব্যাক্তি কে ফোন করে স্ত্রী কে কফেরেন্স কল এ ধরিয়ে দেওয়া হয়। স্বামী স্ত্রীর বাদানুবাদ চলতে থাকে। এদিকে মুম্বাই পুলিশ কল ট্রেস করে পৌঁছে যায় মুম্বাই এর ভায়ান্দর এ। এদিকে স্ত্রী ব্যাক্তি কে কিছুতেই বোঝাতে পারছেন না দেখে মুম্বাই পুলিশের ইন্সপেক্টর তার নিজের স্ত্রী কে ব্যাক্তি টিকে কাউন্সিলিং এর দায়িত্ব দেন।
রাত বেশ হবে। প্রায় তিনটে । মুম্বাই পুলিশ ওই ব্যক্তির বাড়ি পৌঁছায়। ওই ব্যাক্তি কে বুঝিয়ে আত্মহত্যা থেকে রুখে দেয়। ইন্সপেক্টর জানান, সে ব্যক্তি পুলিশ কে পরে ধন্যবাদ দেন।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version