কলকাতা ব্যুরো: ৪১ বছরের লড়াই-সংগ্রামের সঙ্গী স্ত্রীকে হারিয়েছেন অক্টোবরে। সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছিলেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের ভোটে লড়বেন না। তবে সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে সিদ্ধান্ত বদলান প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। ভোটে দাঁড়ান, জোরকদমে প্রচারও করেন। তবে ভোট দিতে এসে চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না বর্ষীয়ান বাম নেতা। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কেঁদে ফেলেন অশোকবাবু। এই প্রথম স্ত্রীকে ছাড়া ভোট দিলেন তিনি।

শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। এদিন বেলা ১২টায় শিলিগুড়ি নেতাজি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৬/২০১ নম্বর বুথে ভোট দেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘এই প্রথম একা ভোট দিচ্ছি। প্রয়াত স্ত্রীর ছবিতে মালা দিয়েই ভোট দিতে এসেছি। ও থাকলে খুব খুশি হত। একসঙ্গে ভোট দিতে আসতাম।’ কথা বলতে বলতে চোখে জল চলে আসে প্রবীণ বাম নেতার। কোনও ক্রমে নিজেকে সামলান তিনি।

অক্টোবরের শেষের দিকে স্ত্রীকে হারান অশোক। ফুসফুসের সংক্রমণের চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় অশোক ভট্টাচার্যর স্ত্রী রত্না ভট্টাচার্যর। সেই সময় অশোকবাবু সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, আমার ৪১ বছরের জীবনের সঙ্গী, আমার লড়াই সংগ্রামের সঙ্গী, আমার অনুপ্রেরণা, আমার স্ত্রী রত্না ভট্টাচার্য চলে গেল। ও ছিল একজন প্রকৃত ভালো মেয়ে। উদার, নমনীয়। মন্ত্রী বা মেয়রের স্ত্রী হিসেবে ওঁর নিজের মধ্যে কোনওদিন কোনও ঔদ্ধত্য ছিল না।

শিলিগুড়ি ভোট নিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী বলেন, শহরের সব জায়গাতেই আমাদের পোলিং এজেন্ট গিয়েছে। সব দলেরই এজেন্ট রয়েছে। সবাই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিচ্ছেন। শিলিগুড়ির রাজনৈতিক ঐতিহ্য মেনে সারাদিনটা এরকম শান্তিপূর্ণই ভোট হবে বলে আশা রাখছি। পুলিশ-প্রশাসন আরেকটু সজাগ হলে আরও ভালো হত। এই পরিবেশ যদি বজায় থাকে, তাহলে ২০১৫ সালের মত এবারও সিপিএম জিতবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পুরবোর্ড গঠন করবে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version