কলকাতা ব্যুরো: রবিবার রাজ্যের ১০৮ পুরসভায় নির্বাচন। সকাল থেকেই একাধিক জায়গা থেকে চরম অশান্তির খবর সামনে আসছে। কাঠগড়ায় তৃণমূল কংগ্রেস। ঝরলো রক্তও। কোথাও বিজেপি প্রার্থীকে মারধর, কোথাও বুথ জ্যাম করে দেদারে ছাপ্পা, আবার কোথাও নির্বাচনী এজেন্টকে বুথ থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। রক্ষা পেলেন না সাংবাদিকরাও। জানা গিয়েছে এদিন সকালে খবর করতে গিয়ে উত্তর দমদমের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রান্ত সাংবাদিক। অন্যদিকে, কাঁথিতে ক্যামেরাম্যানকে মেরে চোখ ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। হয়েছে ক্যামেরা ভাঙচুরও। সকাল থেকেই উত্তর দমদমের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে উত্তেজনা। স্থানীয় সিপিএমের কাউন্সিলরকে মারধরের অভিযোগ। তাঁকে বাঁচাতে গেলে আক্রান্ত হন কাউন্সিলরের অনুগামীরাও। প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সিপিএমের নেতা-কর্মীরা। 

Kanthi 2No Ward the BJP has alleged that Outsider have gathered infront of booth and BJP beaten

উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ার পুরসভায় বিজেপি প্রার্থীর এজেন্টকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ অস্বীকার রাজ্যের শাসকদলের। এদিন বাড়ি থেকে বেরনোর পরই বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। বিক্ষোভ, ইঁটবৃষ্টিতে ধুন্ধুমার এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। জানা যাচ্ছে নিজের ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী না থাকায় পুর নির্বাচনে ভোটই দিলেন না অর্জুন সিং।

এছাড়া মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর পুরসভার অন্তর্গত একাধিক বুথে কংগ্রেস প্রার্থীর এজেন্টদের বসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। বুথে বুথে ঘুরে এজেন্ট বসাচ্ছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর  চৌধুরী। তাঁর অভিযোগ, মহিলা প্রার্থীদের উপর হামলা করা হচ্ছে। পাশাপাশি বহরমপুর পুরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের ৪৬ নং বুথে বহরমপুর জিটি আই স্কুলে বুথের ভিতরে কংগ্রেস এজেন্টকে ব্যপক মারধর ও কান ফাটিয়ে রক্ত বের করে দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী।

এছাড়া কালিয়াগঞ্জের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ৪১ নম্বর বুথে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, বুথের সামনে তৃণমূল কর্মীরা জটলা পাকাচ্ছেন। যার দরুন সাধারণ ভোটাররা ভোট দিতে পারছেন না। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। অন্যদিকে জলপাইগুড়ি পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী নারায়ণ সরকারকে ১২/২ নম্বর বুথে থেকে  ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বুথ এজেন্ট থাকা সত্বেও বুথের ভিতর দাঁড়িয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করছিলেন তিনি। এই নিয়ে জলপাইগুড়ি পুলিশের সদর ডিএসপি সমীর পালের সাথে তর্কাতর্কি শুরু হয় কংগ্রেস প্রার্থীর।পরে প্রার্থীকে ধাক্কা মেরে বুথ থেকে বের করে দেয় পুলিশ।

অন্যদিকে গঙ্গারামপুর পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে ভোটারদের ভোট দিতে না দেওয়ার অভিযোগ। এই অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি প্রার্থী কানাই বিশ্বাস। এছাড়া ধুলিয়ানের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে রায়গঞ্জ জিএসএফ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৭/১ বুথে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বহরমপুর পুরসভার ১৩ নং ওয়ার্ডের মহাকালী পাঠশালার ৯১ ও ৯২ নং বুথে বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ বিশ্বাসকে মারধর করে রক্তাক্ত করার অভিযোগ। অভিযোগের তীর তৃণমূলের দিকে।

পাশাপাশি মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। অভিযোগের তীর তৃণমূলের দিকেই। অন্যদিকে তুফানগঞ্জ পুর এলাকার ১১ নং ওয়ার্ডের ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী প্রসেনজিৎ বসাককে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এ বিষয়ে তুফানগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে তুফানগঞ্জের বিধায়ক মালতি রাভা রায় জানিয়েছেন। বিধায়কের আরও অভিযোগ, নিজের বিধানসভা এলাকার মধ্যে তুফানগঞ্জ পুরসভা হলেও তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না শহরে। 

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version