গৌর শর্মা
একজন নিজেকে ঘরের মেয়ে প্রমাণে চিকিৎসক বাবার নাম করে চালাচ্ছেন প্রচার। অন্যজন তখন দিদির ছায়া হিসেবে নিজেকে খবরে রাখছেন। কলকাতা থেকে যাওয়া দুই নারীর প্রচারে অনেকটাই ফিকে সিপিএমের উকিল বাবু। আসানসোল দক্ষিনে এবার লড়াই বিজেপির ফ্যাশন ডিজাইনার প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল এর সঙ্গে তৃণমূলের টিভি তারকা প্রার্থী সায়নী ঘোষের। এদের পিছনে রয়েছেন সিপিএমের প্রশান্ত ঘোষ।
বছর খানেক আগে বিজেপি দলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই সংগঠনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আসানসোলে যাতায়াত শুরু করেছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা। একেবারেই আধুনিক ঝাঁ-চকচকে উপস্থাপনায় নিজেকে আলাদা করে চেনাতে প্রথম থেকেই মরিয়া তিনি। পাশাপাশি আসানসোলে তার চিকিৎসক বাবার পরোপকারের পুরনো কথা তুলে নিজেকে এই শহরের মেয়ে বলে প্রমাণ করতে প্রতিটি সভাতেই প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।


সে দিক থেকে উঠতি তারকা সায়নী ঘোষের একেবারেই প্রথম প্রার্থী হিসেবে আসানসোলে দলের তরফে পা রাখা। একসময় তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে কলকাতায় অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস এর সামনে পথসভায় গা গরম করা বক্তৃতা দিয়ে প্রচারের আলোয় এসেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে আকথা কুকথায় নিজেকে বিতর্কের মধ্যে নিয়ে যান। শেষ মুহূর্তে সেই সায়নীকে তৃণমূল প্রার্থী করে আসানসোলে। প্রথমদিকে যাবতীয় সমালোচনার ঝড় সামাল দিতে তাকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে যদিও তিনি টিকিট পাওয়ার পর থেকেই একটি বাক্য বলেছেন, নেত্রীর নির্দেশ তার হয়ে লড়াই করতে এসেছেন।
যদিও উড়ে আসা দুই তারকা প্রার্থীকে নিয়েই দুই দলেই রয়েছে ক্ষোভ বিক্ষোভ, সমালোচনা। কারণ আসানসোলের মত জায়গায় কেন, দল এই মাটিতে দাঁড়িয়ে সংগঠন করা ভূমিপুত্রদের প্রার্থী করেনি, তা নিয়ে ক্ষোভ দুই সংগঠনের নিচু তলায়। কিন্তু এখন আর এ নিয়ে কেউই তেমন মুখ না খুললেও, অনেকেই অন্য বিধানসভায় পছন্দের দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে সময় দিচ্ছেন এই বিধানসভা ছেড়ে।


কয়েকদিন আগে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা স্মৃতি ইরানির সভায় মাত্র কয়েকশো লোকের আগমন দেখে যথেষ্ট স্থানীয় সংগঠনের উপরে ক্ষুব্দ হন প্রার্থী। সেই তুলনায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালিয়ে সায়নী নিজেই পায়ের তলার মাটি শক্ত করার চেষ্টা করছেন। এই দুজনের লড়াইয়ে সিপিএম প্রার্থী, আইনজীবী তার মতো করেই প্রচার চালালেও তেমন নজরে এখনো আসছেন না। ফলে এখানকার বহু বামপন্থী ভোটার তাই তাদের ভোট নষ্ট না করতে তৃণমুলকেই প্রথম পছন্দ হিসেবে রাখতে পারেন। বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠনের আলোচনাতেই উঠে আসছে এমন তথ্য। বিজেপিকে দূরে রাখতে তারা তৃণমুলকেই ভোট দিতে আগ্রহী। যদিও বাস্তবে গত লোকসভা ভোটে এই বিধানসভা থেকে প্রায় ৫২ হাজার ভোটে লিড ছিল বিজেপির। সেখানে দাঁড়িয়ে ওই ভোট পুনরুদ্ধার করে জয়ের রাস্তায় পৌঁছনো কঠিন লড়াই টেলি অভিনেত্রীর কাছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version