কলকাতা ব্যুরো: শান্তিনিকেতনের ছাতিমতলায় শুরু হলো ঐতিহ্যবাহী পৌষ উৎসব। বৃহস্পতিবার সকালে উদ্বোধনী সংগীতের মাধ্যমে তার সূচনা করে দিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তবে এ বছর পৌষমেলা না হওয়ার জন্য তিনি পরোক্ষে দায়ী করলেন রাজ্য সরকারকেই। এদিন সকালে সূচনা বক্তৃতায় প্রথমে পৌষমেলা না করতে পারার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন তিনি। তারপরই রাজ্য সরকারের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। সরকারের অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন। যা নিয়ে দিনের শুরুতেই তৈরি হল বিতর্কের আবহ।

পৌষমেলা নয়, এ বছর বিকল্প মেলা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে। একাধিক টানাপোড়েনের মাঝে শেষমেশ এই বিকল্প মেলাতেই সিলমোহর দেয় বিশ্বভারতী। বৃহস্পতিবার থেকে পৌষ উৎসবের সময়ই চলবে হস্তশিল্পের এই মেলা। কিন্তু এ বছর ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা না হওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে দোষারোপের সুর শোনা গেল বিশ্বভারতী উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর গলায়।

বৃহস্পতিবার পৌষ উৎসবের সূচনা পর্বে ছাতিমতলায় অনুষ্ঠানে তিনি অভিযোগ করেন, আমরা পৌষ মেলা করার জন্য অক্টোবর মাস থেকেই উদ্যোগ নিয়েছিলাম। সেই মতোই অনুমতি নেওয়ার জন্য আমরা প্রথমে কেন্দ্র কে চিঠি পাঠাই। কিন্তু কেন্দ্র জানায় রাজ্যকে চিঠি দিয়ে এ সম্পর্কে জেনে নিতে। এর পরেই রাজ্য স্বাস্থ্য সচিবকে আমরা চিঠি পাঠাই। এমনকী এর পরে তিনবার রিমাইন্ডার দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও উত্তর মেলেনি। এর পরেই প্রায় শেষে আমরা সিদ্ধান্ত নিই পৌষ মেলা করা সম্ভব নয়।

করোনা পরিস্থিতির জন্য গত বছর বন্ধ ছিল পৌষ মেলা। এ বছরও সেই সিদ্ধান্তে অনড় ছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তবে এতদিন কেন মেলা বন্ধ, তার কোনও কারণ কেউ সঠিকভাবে বলতে পারেনি। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল কিন্তু বৃহস্পতিবার উপাচার্যের দাবিতে শুরু হলো নয়া বিতর্ক। গত কয়েক বছরে মেলা থেকে পাঁচিল, একাধিক বিষয়ে রাজ্যের সঙ্গে সঙ্ঘাতে গিয়েছেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এবার বিদ্য়ুৎবাবুর দাবিতে আবারও এক বিতর্কের আভাস পাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল। এখন রাজ্যের তরফে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া আসে সেটাই দেখার।

তবে শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা বন্ধ হওয়ায় মন খারাপ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। তাঁদের বিক্রিবাটার অন্যতম সময় পৌষ মেলা। তবে শান্তিনিকেতনে পৌষ মেলা না হওয়ায় একটি বিকল্প মেলার আয়োজন হয়েছে বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে। এই বছর মেলা না হওয়ায় পরপর দু’বছর বন্ধ থাকল শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা। তবে এর আগেও মোট দু’বার বন্ধ রাখতে হয়েছিল এই ঐতিহ্যবাহী মেলাকে। সেই হিসাবে পৌষ মেলা শুরু হওয়ার পর থেকে এখনো পর্যন্ত চারবার বন্ধ হল।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version