কলকাতা ব্যুরো: তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় কর্মসমিতিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কমিটিতে তৃণমূল সুপ্রিমো সহ মোট ২০ জন সদস্য রয়েছে বলে জানান তিনি। তবে এদিন প্রথমে ১৬ জনের নাম ঘোষণা করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।ফলে বাকি চারজন কারা থাকছেন কর্মসমিতিতে, তা নিয়ে বেশ ধোঁয়াশা তৈরি হয়। কিন্তু তার কিছুক্ষণ পরই ফের সাংবাদিক বৈঠক করেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানান, যশবন্ত সিনহা, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও থাকছেন তালিকায়। তবে কেন এই দুই দফায় সাংবাদিক বৈঠক, তৃণমূলের তরফে তার কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি।

Tmc announces name of its working committee members today

এক নজরে দেখুন তৃণমূলের ওয়ার্কিং কমিটির তালিকা:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

অমিত মিত্র

পার্থ চট্টোপাধ্যায়

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

সুব্রত বক্সী

ফিরহাদ হাকিম

অরূপ বিশ্বাস

যশবন্ত সিনহা

শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়

বুলুচিক বরাইক

চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য

কাকলি ঘোষ দস্তিদার

সুখেন্দু শেখর রায়

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক

অসীমা পাত্র

রাজীব ত্রিপাঠী

গৌতম দেব

মলয় ঘটক

অনুব্রত মণ্ডল

কিন্তু, এখনও কোনও পদাধিকারীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। ফলে আপাতত সমস্ত পদের অবলুপ্তি ঘটানো হয়েছে। তবে জাতীয় কর্মসমিতিতে যে নামগুলি রয়েছে তাঁরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের দীর্ঘদিনের কর্মী। ফলে এতদিন পর্যন্ত তৃণমূলের শীর্ষস্তরে যে পদগুলি ছিল তা আর রইল না অর্থাৎ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে মহাসচিব পদগুলির দায়িত্ব কারা পাবেন সেই নাম শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে। এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, খুব শীঘ্রই চেয়ারপার্সন পদাধিকারীদের নামের তালিকা মনোনীত করবেন এবং তা সর্বভারতীয় নির্বাচন কমিশনে জানিয়ে দেওয়া হবে।

পার্থবাবু আরও জানিয়েছেন, আপাতত এই জাতীয় কর্মসমিতিই সব কাজ সামলাবে। তবে কোনও পদাধিকারীর নাম এখনই থাকছে না। তবে যে বিষয়গুলির দিকে সবার নজর ছিল, মূলত এক ব্যক্তি এক পদ নীতিকে কেন্দ্র করে দলের অভ্যন্তরে বিভাজন কিংবা আইপ্যাক সংক্রান্ত ইস্যু– সেই সব নিয়ে কোনও প্রশ্নেরই জবাব দিতে চাননি তিনি।

ফিরহাদ বলেন, আমাকে দলের পক্ষ থেকে যেটুকু বলতে বলা হয়েছে, তার বাইরে কোনও কথা বলব না।

তবে শনিবারের বৈঠক শেষে তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় দলের অভ্যন্তরের কলহের কথা অস্বীকার করেছেন। সুদীপবাবুর দাবি, এদিন দলের কর্মসমিতি নির্ধারণ করা ছাড়া, আর কোনও বিষয়ে আলোচনা হয়নি। 

প্রসঙ্গত, কয়েক দিন ধরেই সোশাল মিডিয়ায় ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নিয়ে চাপানউতোর চলছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইবোনেরা এবং সংগঠনে তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিতরা তৃণমূলে এক ব্যক্তি, এক পদ নীতি চালুর দাবিতে সোশাল মিডিয়ায় সরব হন। আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়, অদিতি গায়েন, সার্থক বন্দ্যোপাধ্যায়, অগ্নিশা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো  অভিষেকের তুতো ভাইবোনেরা সোশাল মিডিয়ায় এই নীতির পক্ষে সওয়াল করতে থাকেন। অস্বস্তিতে পড়তে হয় শীর্ষ নেতৃত্বকে। তারপরই আসরে নামতে হয় ফিরহাদ হাকিমকে। দলের অবস্থান স্পষ্ট করে ফিরহাদ বলেন,  এই বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। এক ব্যক্তি, এক পদ নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট হচ্ছে। আসলে এখানে নেত্রীর পুরো কথা তুলে ধরা হয়নি। কলকাতার মেয়রের দাবি, এক ব্যক্তি, এক পদকে সমর্থন করেছেন মমতা। কিন্তু তিনি এটাও স্পষ্ট করেছেন, পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন তিনিই। ফিরহাদের এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টায় মধ্যে শনিবার কালীঘাটে জরুরি বৈঠক ডাকেন মমতা। সেখানেই নতুন করে জাতীয় কর্মসমিতি ঠিক হয়।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version