কলকাতা ব্যুরো: জয় বাবা ফেলুনাথ-র কথা মনে আছে ?

  • ফেলু বাবু, কাশিতে মন্দিরের সংখ্যা কত ?
  • তেত্রিশ কোটি।

মন্দির দেখলেই প্রণাম করা যদি অভ্যাস থাকে, তাহলে অযোধ্যাতে গেলেও হাত ব্যাথা হবে নিশ্চিত। যা দেখে ফেলু মিত্তির হয়তো বলবে, তার চেয়ে হাতটা মাথাতেই ঠেকিয়ে রাখুন না। নয়তো হাত ব্যাথা হয়ে যাবে যে।
শহরের ডাইনে বাঁয়ে যত বাড়ি দেখা যায়, সবার ছাদে একটা করে মন্দির। আসলে ওগুলো ঠাকুরঘর। আধুনিক শহরে ঠাকুরঘর থাকে বাড়ি বা ফ্ল্যাটের অভ্যন্তরে। জলের ট্যাঙ্ক নিয়ে করা হয় বিভিন্ন রকম নকশা। অযোধ্যাতে ঠিক উল্টো। কার ছাদের ঠাকুর ঘর দেখতে কত সুন্দর, সেটা নিয়েই প্রতিযোগিতা চলত সেই সময়।
কলকাতা আড়ে বহরে বাড়ছে উত্তরে,দক্ষিণে আর পূর্বে। পশ্চিম প্রান্তের শ্রীবৃদ্ধি আটকে দিয়েছে গঙ্গা। ঠিক তেমনি অযোধ্যার উত্তরে বয়ে চলেছে সরযু, পুণ্যতোয়া নদী। টলটলে জল, গভীর গম্ভীর এবং শান্ত প্রকৃতির।
উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনৌ থেকে অযোধ্যা ১৪০ কিলোমিটার। রাজপথ বারাবাঁকি অযোধ্যা হয়ে চলে গেছে পাটনার দিকে। অযোধ্যা নামের একটা রেলস্টেশন আছে বটে, কিন্তু থাকাই সার। কখন কতক্ষণে ট্রেন আসবে তার কোন ঠিকানা নেই।
হাইওয়ে থেকে একটা সোজা রাস্তা চলে গেছে অযোধ্যা নগরীতে সরযূ নদী পর্যন্ত। মূল নগরীতে ঢোকার আগেই রাস্তার ওপর একটা তোরণ, লেখা,
রাম জন্মভূমিতে আপনি স্বাগত।

ভারতের প্রাচীন এই শহরটিকে ঘিরে বিতর্ক যাই থাকুক না কেন, অযোধ্যা শহরটি কিন্তু বেশ। বারাণসী কিংবা লখনৌ থেকেও ঘুরে আসা যায় ওই শহরটিতে। আগে এখানে টাঙা চলতো। এখন অবশ্য অটো মেলে। ভোরবেলা সরযুর তীরে বসে আহির ভৈরব রাগ শুনলে যেন অন্য এক অনুভূতি জাগে। আবার সন্ধ্যায় সরযুর অন্য রূপ।
রাম মন্দিরের ভূমি পূজন উপলক্ষ্যে আবারও নজরে অযোধ্যা। আসুন এই সুযোগে খানিক ঘুরে নেওয়া যাক অযোধ্যার আনাচে কানাচে।

রাম জন্মভূমি
এখানেই শ্রী রামচন্দ্র জন্মেছিলেন বলে মনে করা হয়। হিন্দুদের কাছে অতি পুণ্য একটি স্থান।

কনক ভবন
রাম জন্মভূমির উত্তর পূর্বে তুলসী নগরে অবস্থিত। নয়া নির্মাণ ১৮৯১ সালের। রামচন্দ্র এবং সীতার নামে উৎসর্গীকৃত। সোনে কা ঘর নামেও পরিচিত ওই ভবনটি।

নগেশ্বরনাথ মন্দির
স্থানীয় দেবতার নামে তৈরি মন্দিরটি। প্রচলিত বিশ্বাস, রামচন্দ্র-র পুত্র কুশ এই মন্দিরটি তৈরি করিয়েছিলেন।

হনুমান গারহি
সাই নগরে এটি হনুমানের খুব জাগ্রত মন্দির হিসেবে মনে করা হয় হনুমান গারহি কে। রাম নবমী এবং হনুমান জয়ন্তীতে অগণিত ভক্ত সমাগম ঘটে এখানে।

সীতা কি রসুই
রাম জন্মভূমির উত্তর পশ্চিম দিকে অবস্থিত। বিশ্বাস, এখানেই ছিলো সীতার রান্নাঘর। এখন অবশ্য তা মন্দিরের রূপ পেয়েছে।

গুলাব বাড়ি
বৈদেহী নগরে অবস্থিত। ওয়াধের তৃতীয় নবাব সুজা-উদ-দৌল্লার সমাধি স্থল। এটি গার্ডেন অফ রোজেস নামেও পরিচিত।

ত্রেতা কি ঠাকুর
সরজুর নয়া ঘাটে অবস্থিত। এটিও অযোধ্যার অন্যতম একটি মন্দির। রাম, সীতা, হনুমান, লক্ষন, ভরত, সুগ্রীবের মূর্তি আছে এখানে। কথিত রয়েছে, রামচন্দ্র এখানে অশ্বমেধ যজ্ঞ করেছিলেন।
এছাড়াও বাল্মীকি ভবন, তুলসী স্মারক ভবন, বহু বেগম কি মকবারা ও দেখতে পারেন।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version