কলকাতা ব্যুরো: সর্বসম্মতিক্রমে বিরোধী শিবিরের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হলেন যশবন্ত সিনহা। মঙ্গলবার দিল্লিতে ১৮ টি বিরোধী দলের বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে যশবন্তের নামে সিলমোহর দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকালেই ‘বৃহত্তর বিরোধী স্বার্থে কাজ করার লক্ষ্যে’ তৃণমূল ছাড়েন যশবন্ত। তখন থেকেই জল্পনা ছিল তিনিই রাষ্ট্রপতি পদে বিরোধীদের প্রার্থী হবেন। সেই জল্পনাতেই সিলমোহর পড়ল।
বস্তুত, রাষ্ট্রপতি পদে বিরোধীদের প্রার্থী হিসাবে এর আগে শরদ পওয়ার, ফারুখ আবদুল্লাহ, গোপালকৃষ্ণ গান্ধীদের নাম ভেসে আসছিল। তবে বিভিন্ন কারণে এরা লড়াই থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন। সূত্রের দাবি, এরপরই এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী হিসাবে যশবন্ত সিনহার নাম প্রস্তাব করেন। মঙ্গলবার ১৮টি বিরোধী দল বৈঠকে বসার আগেই মোটামুটি যশবন্তের নাম চূড়ান্ত হয়েই গিয়েছিল। বৈঠকে শুধু সরকারি সিলমোহরটুকু পড়ল। কংগ্রেস এবং বামেরাও মমতার ঠিক করে দেওয়া প্রার্থীকে মেনে নিতে একপ্রকার বাধ্য হল।
যশবন্তকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করার কিছুক্ষণ পরই টুইটে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা বলেন, আমি বিরোধী শিবিরের সর্বসম্মত প্রার্থী হওয়ার জন্য যশবন্ত সিনহাকে শুভেচ্ছা জানাই। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য সমস্ত গঠনমূলক বিরোধী দলই তাঁকে সমর্থন করবে। উনি সম্মানীয় এবং বুদ্ধিমান মানুষ। ওঁর হাতেই আমাদের মহান দেশের ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ থাকবে।
এদিন বৈঠক শেষে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে সরকার এবং বিরোধীদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমেই কাউকে পাঠানো উচিত। এক্ষেত্রে সরকার পক্ষই প্রাথমিক উদ্যোগ নেয়। কিন্তু বিজেপি সরকার ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রার্থী নির্ধারণ করার কোনও সদিচ্ছা দেখায়নি। তাই আমরা সর্বসম্মতিক্রমে প্রার্থী হিসাবে যশবন্ত সিনহার নাম প্রস্তাব করছি।
সিনহার নাম ঘোষণার পর সরকারপক্ষেরও সমর্থন প্রত্যাশা করেছেন জয়রাম রমেশ। সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে যে ১৮ দল উপস্থিত ছিল, তারা তো বটেই এর বাইরেও আম আদমি পার্টি এবং টিআরএস সিনহাকে সমর্থন করতে পারে। আগামী ২৭ জুন মনোনয়ন জমা দেবেন তিনি।
উল্লেখ্য, যশবন্ত সিনহা দীর্ঘদিন বিজেপির সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন। বাজপেয়ী মন্ত্রিসভায় একাধিক মন্ত্রক সামলেছেন তিনি। যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল অর্থমন্ত্রক। যদিও নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তাঁর। গতবছরই তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। যদিও রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হওয়ার আগে তৃণমূল থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি।