এক নজরে

#SpecialReport : কেন আবার বৌবাজারের বাড়িগুলিতে ফাটল

By admin

May 17, 2022

এক সময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বাড়িছাড়া মানুষগুলিকে হোটেল থেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু কয়েকদিন আগে ফের সেই আতঙ্ক ফিরে আসে ওই এলাকায়। বৌবাজারের দুর্গাপিতুরি লেনের মানুষজন ব্যাপক ক্ষুব্ধ। প্রসঙ্গত, শিয়ালদহ-হাওড়া ময়দান যে মেট্রো যাবে তা শিয়ালদহ হয়েই যাওয়ার কথা। আর সেই ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরের কাজের জেরে ফের বিপত্তি। স্থানীয় মানুষ এমনকি প্রশাসন উভয়েইএই বিপত্তির জন্য দায়ী করছে মেট্রো রেলের সম্প্রসারণের কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সংস্থা কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডকে।প্রশ্ন কেন দু বছর ন’মাস পর ফের একই বিপত্তি?

বৌবাজার অঞ্চলের গৌর দে লেন জায়গাটি সোনাপট্টি নামেই সমধিক পরিচত। এই গলিতেই বেশ কিছু সংস্কার হওয়া বাড়ির পাশাপাশি রয়েছে একটি ছোট বস্তি। গতবার বাড়িগুলিতে ধরা ফাটলের মেরামতি করা হলেও ফের সেই ফাটলের পুনরাবৃত্তি দেখা গিয়েছে আর তার সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন কিছু ফাটলেরও। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির বাসিন্দাদের থেকে জানা যাচ্ছে, গতবারই মেট্রো কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানিয়েছিল, এই সমস্ত বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূর দিয়ে টানেল বোরিং মেশিন নিয়ে গিয়ে কাজ করা হবে। কিন্তু তার পরেও কেন ফাটল ধরলো?

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ২০১৯ সালে এই অঞ্চলে মাটির নীচে সুড়ঙ্গ কাটার কাজ চলাকালীন আচমকা জল ঢুকতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, কলকাতায় মাটির নীচে জলস্তর তিন থেকে পাঁচ মিটার গভীরে। আচমকা জল ঢুকে পড়ায় মাটির উপরের অংশে ধস নামে। তার কারণেই বাড়িগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।জল আটকাতে কার্জন পার্কের দিক থেকে কাজ বন্ধ করে শিয়ালদহের দিক থেকে নতুন করে কাজ শুরু হয়। একটি নতুন দেওয়াল একইসঙ্গে চেম্বার তৈরি করে সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। ইতিমধ্যে সুড়ঙ্গের কাজ অনেকটাই এগোয় কিন্তু কার্জনপার্কের দিকের সুড়ঙ্গের সঙ্গে বৌবাজারের সুড়ঙ্গ জুড়তে গিয়ে ফের সুড়ঙ্গে জল ঢুকে পড়াতেই উপরের মাটি আলগা হয়ে ফের বিপত্তি। তাহলে এখন উপায় কি?

শুধু কি জল ঢোকা বন্ধ করে সুড়ঙ্গ তৈরি করলেই হবে? এরপর যখন মেট্রো সুরঙ্গের ভিতর দিয়ে চলবে তখনও তো মাটির ভিতর কম্পন হবে, সেই কম্পন থেকেও তো মাটির উপরের বাড়িগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে? কার্যত কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন বৌবাজার অঞ্চলের সুড়ঙ্গ নিয়ে বলা যায় দিশেহারা। সেই কারণেই তারা আইআইটি (IIT) রুরকি এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (JU) ইঞ্জিনিয়ারদের সাহায্য চেয়ে ডেকে পাঠিয়েছেন। কীভাবে সমস্যার মোকাবিলা করা যায় সেটা রুরকির ইঞ্জিনিয়াররা পরীক্ষা করে দেখবেন। পরবর্তী কাজের পরিকল্পনার খসড়াও তাদের তৈরি করার কথা। অন্যদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়াররা পুরনো বাড়িগুলির অবস্থা পরীক্ষা করে দেখবেন।

বৌবাজারের বাড়িগুলিতে ফাটল

এলাকাবাসীদের অভিযোগ গতবারের দুর্ঘটনার এই দু বছর ন’মাসের মধ্যে কেএমআরসিএল (KMRCL) কর্তৃপক্ষ একবারের জন্য এলাকা পরিদর্শনে আসেননি ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগও করেনি৷ কেবল তাই নয় কয়েকদিন আগে যখন আগের মতোই ফাটলের ঘটনা ঘটে তখনও কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিক বা ইঞ্জিনিয়র ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছাননি৷