কলকাতা ব্যুরো: বাঙালির মৎস্য প্রীতি জগৎ জোড়া। এ রাজ্যে মাছের চাষও হয় যথেষ্ট। সামান্য কিছু মাছ বছরে রপ্তানিও করে রাজ্য। যদিও তা খুব বেশি নয়। এবার রাজ্যে সেই মাছের উৎপাদন বাড়াতে বড়সড় প্রকল্প নিলো সরকার। বর্তমান যা মাছ উৎপাদন হয়, প্রকল্প অনুযায়ী আগামী দিনে তা তিন গুণ বাড়বে। রাজ্যে বর্তমানে ১৮ লক্ষ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়। আগামী তিন বছরের মধ্যে তা ৩৫ লক্ষ টন করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
কোনো মাছ চাষ হয় মিষ্টি জলে। কেউবা কালচে জলে বাড়ে, আবার কারো বেড়ে ওঠার জন্য দরকার সমুদ্রের জল। কোন জলে কোন মাছ চাষ করা যাবে তার তালিকা তৈরি করেছে মৎস্য দপ্তর। ইতিমধ্যে জেলাগুলিকে মৎস্য চাষে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা, জলাশয় অধিগ্রহণ, চারা বিলি থেকে মাছ ধরার পরিকল্পনা এবং মাছের রোগ নির্ণয় আর প্রতিরোধে বিশেষ পরিকল্পনার মাধ্যমে এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মৎস্য দপ্তর।
প্রাথমিকভাবে জেলাগুলোতে অন্তত ২০০ টি জলাশয় চিহ্নিত করে অধিগ্রহণের কথা বলা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সেখানেই মাছ চাষ করা হবে। মৎস্য দপ্তর অভিনব ‘ফিশারি ক্যালেন্ডার’ তৈরি করেছে। বছরের কোন সময় কোন জলে কী মাছের চাষ হবে, তার নির্দিষ্ট তথ্য দেওয়া হয়েছে। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ওই ক্যালেন্ডারে। যা ইতিমধ্যেই বিলি করা শুরু হয়েছে।
রোগে আক্রান্ত হয়ে মাছের মৃত্যু আটকাতে মৎস্য দপ্তর ‘ডিডিজ সারভিল্যান্স স্কিম’ হাতে নিয়েছে। রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, মাছের উৎপাদন বাড়ানোর অনেক সুযোগ আছে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে নতুন মৎস্যনীতি নেওয়া হয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে তিন বছরের মধ্যে হাতেনাতে ফল মিলবে বলে আশা মন্ত্রীর। শুধু রাজ্যের মানুষের পাতে পর্যাপ্ত মাছের যোগান নয়, রাজ্য মাছ রপ্তানিতে আরও এগোতে এই প্রকল্পকে পাখির চোখ হিসেবে দেখছে।