আবহাওয়া

#SpecialReport : উত্তরবঙ্গে চেরাপুঞ্জি, দক্ষিণবঙ্গে ভেজা গেঞ্জি

By admin

June 29, 2022

গোটা দক্ষিণবঙ্গই যেন প্রবল দাবদাহে পুড়ছে। ভোর থেকেই রোদ ঝলমলে আকাশ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই রোদ আরও চড়ছে।অস্বস্তিকর গরমে নাজেহাল হচ্ছে মানুষ। আষাঢ় মাসের বেশ কয়েকটি দিন গড়িয়ে গেলেও দক্ষিনবঙ্গে সেভাবে বৃষ্টির দেখা মেলেনি। বৃষ্টিহীন দক্ষিণে যখন গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা তখন ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ চলছে উত্তরবঙ্গে। দক্ষিণে জুন মাসে যে একেবারেই বৃষ্টি হয়নি তাতো নয়, কিন্তু বিক্ষিপ্ত ভাবে কোথাও বৃষ্টি হলে কোনো লাভ নেই। গত দুদিন ধরেই কলকাতা ও আশপাশের এলাকার আকাশ সকাল থেকেই মেঘলা হয় আবার রোদে ভরে যায়। আবহাওয়া সূত্রে খবর কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে জুন মাসের বাকি দুদিনে আর ভারী বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। বরং আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বাড়বে।

তবে উত্তরবঙ্গ আবার অতিবৃষ্টির মধ্যে পড়বে। আবহাওয়া দফতর তা নিয়ে ইতিমধ্যে সতর্কবার্তা জারি করেছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৯ জুন বুধবার সকালের মধ্যে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর মধ্যে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের কোনও কোনও জায়গায় অতিপ্রবল বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে। সেই কারণে আবহাওয়া দফতরের তরফে এই পাঁচ জেলার জন্য সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে এবং মালদহ জেলার কোথাও কোথাও হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার ছাড়াও কালিম্পং, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের কোথাও ভারী বৃষ্টির কোনও পূর্বাভাস নেই। সবকটি জেলাতেই হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। তবে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ জেলার কোথাও কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হাল্কা বৃষ্টির সম্ভাবনা। দিনের তাপমাত্রার বড় কোনও পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। কলকাতায় আকাশ অংশত মেঘলা থাকবে। কোথাও কোথাও দু-এক পশলা বৃষ্টি কিংবা বজ্রবিদ্যুতের সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ৩৪ ও ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। সর্বোচ্চ আপেক্ষিক আর্জ্রতা ৯০%।

প্রশ্ন, উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গ-এ এতটা বৈষম্য কেন? আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে কলকাতা একটি তাপীয় দ্বীপে পরিণত হয়েছে। আর সেই কারণেই শহর এবং তার আশেপাশের এলাকায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে না।তাঁদের বক্তব্য অনুসারে, এই সময় বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিক উন্মুক্ত রয়েছে। যে কারণে প্রচুর জলীয় বাষ্পভরা বায়ু প্রবেশ করছে। এছাড়াও উত্তরপূর্ব ভারতে নিম্নচাপ রয়েছে। যে কারণে উত্তর পশ্চিম দিক থেকে শুকনো হাওয়া খুব দ্রুত গতিতে উত্তর পূর্ব ভারতের দিকে এগিয়ে আসছে। যে বায়ুর কারণে বঙ্গোপসাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাসকে উত্তর পূর্ব ভারতের দিকে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আর এই কারণে এখানে ঘনীভবন অনেকটা কম হচ্ছে।

তারা এও বলছেন, ইতিমধ্যে যেটুকু মেঘ ঘনীভূত হচ্ছে কলকাতার ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা তাকেও ভেঙে দিচ্ছে।কলকাতার ক্ষেত্রফল ২১০ বর্গকিলোমিটার। আর এইটুকু জায়গা থেকে প্রায় ১৬৬৪ বর্গকিলোমিটার এলাকার তাপমাত্রা বিকিরিত হচ্ছে। এই ছোট এলাকার মধ্যে এতটা তাপমাত্রা মেঘ সহ্য করতে পারছে না। ফলে তা ভেঙে যাচ্ছে।এই কারণেই কলকাতা থেকে দূরবর্তী যেসব এলাকা সেখানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। কিন্তু, কলকাতা ও তার নিকটবর্তী এলাকায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। এভাবে গরম বাড়তে থাকলে, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও কমে যাবে।