কলকাতা ব্যুরো: একটি জন বসতির কথা ভাবুন নিজের মনে মনেই। সেখানে গান শোনা নিষিদ্ধ। টিভি দেখা নিষিদ্ধ। মোবাইল ব্যবহারও চলবে না। লটারির টিকিট কাটা কিংবা মদ বিক্রি ও নৈব নৈব চ। এমনকি ক্যারাম খেলাতেও আপত্তি।
ভাবছেন, এমন আবার হয় নাকি !
হয় হয়, জান্তি পারো না।
অন্য কোথা নয়। এই বাঙলাতেই রয়েছে এমন একটি গ্রাম। যেখানে অতি সম্প্রতি জারি হয়েছে এমন নির্দেশিকা। মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত আদিত্যনগর। এলাকাটি বাংলা ও ঝাড়খন্ড সীমান্ত লাগোয়া একটি সীমান্তবর্তী সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রাম। লোকসংখ্যা আনুমানিক ১২ হাজার।
শুধুমাত্র নিষেধাজ্ঞা জারি করেই ক্ষান্ত থাকেনি গ্রামের মোড়লরা। কোন ‘অপরাধ’ এর জরিমানা কত, ধার্য করে দেওয়া হয়েছে তাও। ক্যারাম খেলতে গিয়ে ধরা পড়লে জরিমানা ৫০০ টাকা। গান শোনা বা টিভি চালানো? ফাইন কড়কড়ে ১ হাজার টাকা। লটারিতে টাকা মিলুক আর নাই মিলুক, লটারির টিকিট কেটে ধরা পড়লে গুনতে হবে ২ হাজার টাকা জরিমানা। আর মদ বেচতে গিয়ে ধরা পড়লে পাক্কা ৭ হাজার টাকা। সঙ্গে কান ধরে ওঠবস। ইতিমধ্যে লিফলেট বিলি করে তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে গ্রামবাসীদের। গ্রামের আনাচে কানাচে কোথায় কি চলছে তার খোঁজখবর দেওয়ার জন্য নিযোগ করা হয়েছে এজেন্ট। কোন ধরণের ‘অপরাধ’-র খবর তারা দিচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে তাদের দেওয়া হচ্ছে ২০০ থেকে ১ হাজার টাকা।
স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুর রউফের অবশ্য বক্তব্য, এতে অন্যায় কিছু নেই। আজকালকার ছেলেরা মোবাইল ও নানাভাবে বিপথগামী হচ্ছে। সামসেরগঞ্জ-র তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলাম অবশ্য এই ফতোয়াকে সমর্থন করছেন না। তিনি বলেন, ঘটনাটা শুনেছি। অন্যান্য কারণে ব্যস্ত থাকার কারণে যাওয়া হয়নি সেখানে। গ্রামের কিছু অতি উৎসাহী মিলে এটা করেছে। লিফলেটও বিলি করেছে। কাল আমি নিজে ওই এলাকায় যাবো। এটা আমরা রুখবো।