এক নজরে

আমপান ক্ষতিগ্রস্থ শিল্পীরা পুজোকেই খড়কুটোর মত আকঁড়ে ধরে বাঁচতে চাইছেন

By admin

October 11, 2020

কলকাতা ব্যুরো : আমপান কেড়ে নিয়েছে সবকিছু। পেটের ভাত থেকে মাথার ছাদটা পর্যন্ত। ওরা সবাই ভেবেছিলেন আর বাঁচা হলো না। একসময় ছেলে পরিবার নিয়ে পথে দাঁড়িয়েছিলেন। এখন কলকাতার পুজো একটু আলো দেখাচ্ছে ওই শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোকে। ওদের কেউ প্রতিমা তৈরির বরাত পেয়েছেন। কেউ আবার ব্যস্ত থিম সাজাতে।

কলকাতার পুজো উদ্যোক্তারাও হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ওদের উদ্দেশ্যে। আমপানের দাপটে খিদিরপুর শিল্পী কেষ্ট দাসের ঘর বাড়ি সব নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বাড়ির গোলায় যে অন্নপূর্ণা আর বজরংবলীর মূর্তি ছিল তাও ঝড়ে বৃষ্টিতে ধুয়ে গিয়েছিল। “একেই করোনার জন্য পুজো কম হচ্ছে । ভেবেছিলাম হয়ত কাজ পাবো না।” কিন্তু পড়ারই এক পুজা কমিটি ঠাকুর তৈরির বরাত দিয়েছে। ওই পুজোর উদ্যোক্তারা জানালেন, “কেষ্ট বাবুকে বলেছি কালি, লক্ষ্মী , সরস্বতী মূর্তি তৈরি করে মন্ডপে রাখতে। যদি কোনো দর্শনার্থীর পছন্দ হয় তবে কিনে নিয়ে যাবেন। পুরো টাকাটাই শিল্পী পাবেন”।

এদিকে কাথির মরিশদা গ্রামের এক শিল্পী কাজ পেয়েছেন বিবেকানন্দ রোডের এক পুজোয় । তিনি জানালেন, আমপানে বাড়ি ঘর তছনছ হয়ে গেছে। ভাবিনি কাজ পাবো এবার। কিন্তু পুজোর কর্মকর্তারা তাকে প্রতিবারের মতো এবারেও ডেকে পাঠিয়েছেন। কাজ করছেন দিন রাত এক করে ওই সব শিল্পী। উদ্যোক্তাদের ভাষায় ” বিপদেই তো পাশে দাঁড়াবো। এতে আর বীরত্বের কি আছে “।

শ্যামবাজার মেট্রোর কাছে কলকাতার একটি বড় পুজা মণ্ডপে বেশ কিছু পূর্ব মেদিনীপুরের শিল্পী কাজ করে চলেছেন। কথা হলো তাদেরও একজনের সঙ্গে। জানালেন ” আমপানে বিরাট ক্ষতি হয়েছে। ওখানকার অনেক গ্রামের বাড়ি ঘর ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। অনেক আশা নিয়ে এসেছিলাম কলকাতায়। আগের বছর এখানেই কাজ করেছিলাম। ওনারা আবার বরাত দিলেন। ” মণ্ডপের কাজ চলছে এখন। শিল্পীদের মুখে হাসি। মানবিক কলকাতার উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ দিচ্ছেন প্রায় পথে বসে পড়া শিল্পীরা। শিল্প বেঁচে আছে। মানবতাও । যার সব ভালো তার শেষটাও ভালো হবে। এমনি আশা শিল্পী থেকে উদ্যোক্তাদের।