এক নজরে

#Vice Presidential Election : উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কাউকেই সমর্থন নয়, ভোটদানে “না” তৃণমূলের

By admin

July 21, 2022

কলকাতা ব্যুরো: এনডিএ সমর্থিত কিংবা বিরোধী প্রার্থী, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে (Vice Presidential Election) কাউকেই সমর্থন করবে না তৃণমূল। ফলে আগামী ৬ অগাস্ট উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদান থেকে বিরত থাকবে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার বিকেলে কালীঘাটের বাড়িতে দলীয় সাংসদদের নিয়ে বৈঠকের পর তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে অভিষেকের পাশেই উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে, সাংবাদিক বৈঠকে সুদীপ কোনও মন্তব্য করেননি।

রাজ্যের শাসকদলের কেন এমন সিদ্ধান্ত? তাও এদিন বিশদে ব্যাখ্যা করলেন অভিষেক। জগদীপ ধনকড় কিংবা মার্গারেট আলভা – রাজনীতির আদর্শ মেনে কাউকেই সমর্থন করা তৃণমূলের পক্ষে সম্ভব নয়, তা এদিন স্পষ্ট করেন অভিষেক। উল্লেখ্য, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে (Vice Presidential Election) এনডিএ শিবিরের প্রার্থী বাংলার সদ্য প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তাঁর নাম প্রস্তাবের পরই রাজ্যপালের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ধনকড়। বাংলার শাসকদল তৃণমূলের সঙ্গে ধনকড়ের সংঘাত বরাবরের। নানা ইস্যুতে তা প্রকাশ্যে এসেছে একাধিকবার। এমনকী শেষবেলাতেও উভয়ের সম্পর্ক মসৃণ হয়নি। এই অবস্থায় ধনকড়কে কোনওভাবেই সমর্থন করছে না তৃণমূল। বৃহস্পতিবার বিকেলে বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠকে এসে এমনই যুক্তিই দেখালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

এরপর তৃণমূলের হাতে থাকে দুটি পথ। প্রথমত, বিরোধী পদপ্রার্থী মার্গারেট আলভাকে সমর্থন দেওয়া। দ্বিতীয়ত, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে (Vice Presidential Election) ভোটদান থেকে বিরত থাকা। দ্বিতীয় রাস্তাই বেছে নিল শাসকদল। এ বিষয়ে অভিষেকের ব্যাখ্যা, যেভাবে কংগ্রেস উপরাষ্ট্রপতি পদে কোনও আলোচনা ছাড়াই মার্গারেট আলভাকে বেছে নিয়েছে, তা সমর্থনযোগ্য নয়। তাই কাউকেই সমর্থন করছে না বাংলার শাসকদল।

তবে অভিষেক এও বলেন, তার মানেই বিরোধী ঐক্যে ফাটল ধরলো তা ভাবলে ভুল হবে। এই একটি ইস্যুতে কংগ্রেস একতরফা প্রার্থী বেছেছে। রাতারাতি বৈঠক ডাকা হয়েছিল, তাই তৃণমূলের পক্ষে তাতে যোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। যদিও বিজেপি বিরোধী বৃহত্তর ইস্যুতে বিরোধী দলগুলি একসঙ্গে রয়েছে বলেই স্পষ্ট করে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তবে তাঁর কথা কংগ্রেস-তৃণমূলের দ্বন্দ্ব আরও বাড়িয়ে দিল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। এদিন অভিষেক জানান, দলের ৩৫ জন সাংসদের মধ্যে ৩৩ জনই এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা প্রত্যেকে নিজেদের মতামত, পরামর্শ পেশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে। আর সেসব কথাকে গুরুত্ব দিয়ে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল তৃণমূল।

উল্লেখ্য, বিজেপি নেতৃত্ব উপরাষ্ট্রপতি পদে (Vice Presidential Election) বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে এনডিএ প্রার্থী ঘোষণা করার পর থেকেই তৃণমূল এই ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছিল। দলনেত্রীর নির্দেশ ছিল উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে কোনও নেতা নেত্রী মুখ খুলতে পারবেন না। ২১ জুলাই সমাবেশ হওয়ার পর দলের সাংসদদের নিয়ে বৈঠক হবে সেই বৈঠকেই এই নির্বাচনে তৃণমূলের কী ভূমিকা হবে তা চূড়ান্ত করা হবে। সেই কারণেই এদিন ধর্মতলার সমাবেশে তৃণমূল নেত্রী বা দলের অন্য কোনও নেতা নেত্রী উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রসঙ্গ উল্লেখই করেননি।

তবে প্রশ্ন উঠেছে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে (Vice Presidential Election) ভোটদানে তৃণমূল বিরত থাকায় কি লাভবান হবে বিজেপি? অভিষেক ওই প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়ে বলেন, আমরা তো কাউকেই ভোট দিচ্ছি না। তাতে বিজেপির লাভের প্রশ্ন উঠছে কী করে?
তবে তৃণমূল কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তের কড়া প্রতিক্রিয়া জানালেন কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জগদীপ ধনকড়কে আরও সাহায্য করতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন সিদ্ধান্ত। পাশাপাশি সম্প্রতি দার্জিলিং-এর রাজভবনে ধনকড়, মমতা ও হিমন্ত বিশ্বশর্মার গোপন বৈঠককে হাতিয়ার করে অধীর চৌধুরী জানান, ওই বৈঠকেই সমস্ত কিছুর ব্লু প্রিন্ট তৈরি হয়ে গিয়েছিল। আর সেই কারনেই শরদ পওয়ারের বাড়িতে বিরোধীদের উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করার বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা।