ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী গত দশ বছরে ভারতে রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২.৬ লক্ষ মানুষের। এই হিসেব বিশ্লেষন করলে দাঁড়ায়, প্রতি দিন গড়ে ৭২ জন আর বছরে গড়ে ২৬ হাজার মানুষ রেল দুর্ঘটনার বলি হন। কেন্দ্রীয় সংস্থা এই এনসিআরবি (NCRB) দেশের অপরাধমূলক তথ্য সংগ্রহ করার কাজ করে। তাদের তথ্যই দেখিয়ে দেয় এই সব রেল দুর্ঘটনার বেশিরভাগই ঘটে দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ বা ট্রেনের লাইনচ্যুতি থেকে। অন্যদিকে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে অথবা রেলে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়। ২০১১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ট্রেন দুর্ঘটনার হিসাব তুলে ধরলে দেখা যাচ্ছে ৭০ শতাংশ রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে একই দুর্ঘটনায়।
২০১২ সাল ভারতীয় রেলের ইতিহাসে রেল দুর্ঘটনার দিক থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ।এই বছর প্রায় ১৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছিল।
২০১২ সালের ১০ জুলাই, গুয়াহাটি-পুরী এক্সপ্রেস এবং অবধ-আসাম এক্সপ্রেস, আসামের রাঙ্গিয়া শহরের কাছে সংঘর্ষে পড়ে। দুর্ঘটনায় ১০৮ জনের মৃত্যু হয় এবং বহু আহত হয়।
ওই বছর ৩০ জুলাই, নেলোরের কাছে দিল্লি-চেন্নাই তামিলনাড়ু এক্সপ্রেসের একটি কোচে আগুন লেগে ৩০ জনেরও বেশি লোক মারা যায়
২০১৪ সালের ১ এপ্রিল, তামিলনাড়ুর চেন্নাই বিচ স্টেশনে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন এবং দাঁড়িয়ে থাকা একটি স্ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষে ৯ জনের মৃত্যু এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়।
ওই বছর ২৬ মে, উত্তর প্রদেশের সন্ত কবির নগর এলাকায়, গোরখপুরের দিকে রওনা হওয়া গোরখধাম এক্সপ্রেসটি খলিলাবাদ স্টেশনের কাছাকাছি একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে ২৫ জন মারা যায়।
২০১৫ সালের ২০ মার্চ, রায়বেরেলির বাচরাওয়ান রেলওয়ে স্টেশনের কাছে দেরাদুন থেকে বারাণসীগামী জনতা এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হলে ৩০ জনেরও বেশি লোক মারা যায়।
২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর, ইন্দোর-পাটনা এক্সপ্রেস উত্তরপ্রদেশের কানপুরের কাছে লাইনচ্যুত হলে ১৫০ জন নিহত এবং অসংখ্য আহত হয়।
ওই একই দিনে উত্তরপ্রদেশের পুখরায়নে ইন্দোর-রাজেন্দ্রনগর এক্সপ্রেসের চৌদ্দটি বগি লাইনচ্যুত হলে ১৫২ জন প্রাণ হারায় এবং বহু যাত্রী আহত হয়।
২০১৭ সালের ২১ জানুয়ারী, কুনেরু স্টেশনের কাছে অন্ধ্রপ্রদেশে জগদলপুর-ভুবনেশ্বর হীরাখণ্ড এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হলে ৪১ জনের প্রাণহানি ঘটে এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়।
ওই একই বছর ১৯ আগস্ট, উত্তরপ্রদেশের খাতৌলির কাছে কলিঙ্গ উৎকল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হলে ২৩ জন মারা যায় এবং অসংখ্য আহত হয়।
২০২০ সালের ১৬ অক্টোবর, মহারাষ্ট্রের কারমাদের কাছে হায়দ্রাবাদ-মুম্বাই সিএসএমটি এক্সপ্রেস এবং হুজুর সাহেব নান্দেড-মুম্বাই সিএসএমটি রাজধানী স্পেশাল দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং অনেক আহত হয়।
২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারী, আলিপুরদুয়ারে বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের 12টি বগি লাইনচ্যুত হলে ৯ জন মারা যায় এবং ৩৬ জন আহত হয়।