কলকাতা ব্যুরো: একদিকে ভারত সরকার ইউক্রেন (#Ukraine)থেকে এ দেশের নাগরিকদের প্রায় পাঁচশ জনের দলকে দুটি বিমানে ফেরাতে শুরু করেছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ট্যুইট করে জানিয়েছেন প্রথম বিমানের পর দ্বিতীয় বিমানে 250 জন কে নিয়ে বুদাপেস্ট থেকে একটি বিমান মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে।অন্যদিকে ইউক্রেনে এখনো থেকে যাওয়া কয়েক হাজার ভারতীওকে আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে। তাদের নিরাপত্তা নেই, নেই জল, খাবারের ব্যবস্থা। একরকম খোলা আকাশের নিচেই দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। ঘরে থাকতেও পারছেন না, দেশে ফেরার পথ খুঁজতে পথে বেরিয়ে পরা ভারতীয়রা।পথে সেনার কনভয়ের সাইরেন, আকাশে যুদ্ধবিমানের শব্দ, আর ভারী বুটের আওয়াজ — তার মধ্যেই দেশে ফেরার জন্য মরিয়া ভারতীয়রা (#Indians)।
এমনকি তাদের সঙ্গে ভারতের তরফে কোনরকম যোগাযোগ করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। এখনো পর্যন্ত ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু থাকায়, তাদের সেইসব হাহাকারের ছবি তারা গণমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। আর তাতেই একদিকে এদেশে তাদের আত্মীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে তেমনি তা বাড়তি চাপ তৈরি করছে সরকারের উপরেও।
যদিও ইউক্রেনের আকাশ পথ বন্ধ হয়ে গেলেও স্থল সীমান্ত দিয়ে শনিবার প্রথম দফায় ২১৯ জন এবং দ্বিতীয় দফায় ২৫০ জনকে নিয়ে বুদাপেস্ট থেকে বিমান মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছে। একইসঙ্গে ইউক্রেন থেকে আশপাশের দেশগুলিতে সীমান্ত পার করে অন্য ভারতীয়দের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। এক্ষেত্রে হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, পোল্যান্ডের সঙ্গে যে সব সীমান্ত রয়েছে, সেখান দিয়েই ইউক্রেন থেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা হচ্ছে ভারতীয় নাগরিকদের। সূত্রের খবর, ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী লেভিভ ও চেরনিভিৎসি এলাকায় ক্যাম্প করা হয়েছে ভারতীয় দূতাবাসের তরফে। সেখান থেকে জিরানী সীমান্ত দিয়ে হাঙ্গেরি, সুচেভা সীমান্ত দিয়ে রোমানিয়া এবং সাহানি মারিকা স্থলবন্দর দিয়ে পোল্যান্ড পাঠানো হচ্ছে ভারতীয়দের। একইসঙ্গে স্লোভাকিয়া রিপাবলিকও ভারতীয়দের ইউক্রেন থেকে দেশে ফেরানোর ক্ষেত্রে সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছে বলে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের দাবি।
এদিন সন্ধ্যায় ভারতের বিদেশ মন্ত্রীর টুইটারে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে ইউক্রেনে থাকা ভারতীয়দের পরিবারগুলিতে। কারণ বিদেশ মন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন, শেষ ভারতীয়কে ইউক্রেন থেকে বের করে না আনা পর্যন্ত, তিনি নিজে গোটা বিষয়টি তদারকি করছেন। ভারতের এই ‘অপারেশন গঙ্গা’ কতদিন অবশ্য চালানো যাবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কারণ রাশিয়ার আক্রমণের মুখে ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের সমস্ত বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বেশ কয়েকটি স্থল সীমান্ত আটকে দিয়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। ইউক্রেনে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত রাহুল শ্রীবাস্তব সেখানকার ভারতীয় পড়ুয়াদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি ছাত্রদের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখা এবং হাই কমিশনের অফিসে তথ্য আদান প্রদানের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু ক্রমশই ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনার বাহিনী (#RussianArmy) বাড়তে থাকায় স্থল সীমান্ত গুলিও কতক্ষণ নিরুপদ্রব থাকবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ে ইউক্রেনের সেনা আধিকারিকরা।
তারপরেও একমাত্র স্থল সীমান্ত গুলি অন্যান্য দেশের ইউক্রেনে বসবাসকারী নাগরিকদের ফেরানোর একমাত্র রাস্তা হিসেবে ধরে নেওয়া হচ্ছে। তাই ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, পোল্যান্ড, বুদাপেস্টের মত দেশগুলির সঙ্গে কথা বলে নাগরিকদের ফেরানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তার পরেও সংশয়, যতক্ষণ না ইউক্রেন থেকে বেরোতে পারছেন সব ভারতীয়।