এক নজরে

২৮ দিনে ১৬ কেজি ওজন কমেছে মৃত তরুনীর, অবাস্তব বলল হাইকোর্ট

By admin

December 23, 2020

কলকাতা ব্যুরো: উলুবেরিয়া হাসপাতলে আদুরী রুইদাস নামে ওই তরুণীকে ১৭ এপ্রিল ভর্তির সময়, তার ওজন ছিল ৪১ কেজি। অথচ তার মৃত্যুর পর ১৫ মে যে ওজন ময়নাতদন্তের রিপোর্টে লেখা হয়েছে, তখন তা মাত্র ২৫ কেজি। আদালতের বক্তব্য, মাত্র ২৮ দিনে একজন মানুষের ১৬ কেজি ওজন কমে যাওয়ার ঘটনা অবাস্তব। সে মৃত বা জীবিত যাই হোক না কেন।এই অবস্থায় উলুবেড়িয়ার মৃত ওই তরুনীর দেহের আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আরজি কর হাসপাতালে নতুন করে ময়না তদন্তের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। যেহেতু পরিবারটিকে যে মৃতদেহ তাদের মেয়ের বলে দেখানো হয়েছে, তাকে তারা স্বীকার করেননি, ফলে দেহের ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দিলো হাইকোর্ট। আদালতের বক্তব্য, এক তরুণী কি করে মারা যাওয়ার এতদিন পরেও তার পরিবার কোনভাবে সাহায্য পেল না, তা সত্যি বিস্ময়কর। যেহেতু হাওড়ার সঞ্জীবন হাসপাতালেই ওই তরুণীকে করোনা পরীক্ষার জন্য আনা হয়েছিল, তাই ওই হাসপাতালের রিপোর্ট চেয়েছিল আদালত। অথচ হাসপাতালটি শুধু একটি রোগীর ডিসচার্জ সার্টিফিকেট আদালতে জমা দিয়েছিল। যা দেখে এদিন বেজায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ মাত্র দেড় ঘণ্টার নোটিশে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয় সঞ্জীবন হাসপাতালের কর্তাদের এজলাসে হাজির করতে। বেলা দুটোর সময় হাসপাতালের কর্তারা আদালতে হাজির হয়ে নির্দেশ না মানার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এর পরেই আদালত রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয়।শঙ্কর রুইদাস হাইকোর্টে মামলা করে বলেন, তাঁর মেয়েকে ১৫ এপ্রিল অন্তসত্ত্বা অবস্থায় উলুবেড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তাঁর শরীরে করোনার কিছু লক্ষণ দেখা দেওয়ায় সেখান থেকে তাঁকে হাওড়ার সঞ্জীবনী বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। করোনার চিকিৎসার জন্য সেটি চিহ্নিত। মামলাকারীর আইনজীবী সুকান্ত চক্রবর্তীর অভিযোগ, সেখানে আদুরী রুইদাস একটি সন্তানের জন্ম দেন। ২১ এপ্রিল ওই তরুণীর বাবা ফোন করেন ওই হাসপাতালে। সেখান থেকে জানানো হয়, এখন ভালো আছে দু’জনেই। কিন্তু করোনা চিকিৎসা হওয়ায় সেখানে বাড়ির লোককে যেতে নিষেধ করা হয়। এরপরে ৩০ এপ্রিল ফের সেখানে ফোন করলে জানানো হয়, তাঁর মেয়ের করোনা পাওয়া যায়নি, তাই আবার উলুবেড়িয়া হাসপাতালেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।পরের দিন শঙ্কর রুইদাস উলুবেড়িয়া হাসপাতালে মেয়েকে দেখতে গেলে সেখানকার ওয়ার্ড মাস্টার তাঁর হাতে একটি কাগজ দিয়ে জানান, ২০ এপ্রিল মেয়ে মারা গিয়েছেন। বক্তব্যের সমর্থনে একটি প্লাস্টিক প্যাকেটে মোরা দেহ দেখানো হয়। কিন্তু মুখ না দেখে ওই দেহ নিতে অস্বীকার করেন শঙ্কর। তাঁর মেয়ের কোনও সন্তান হয়নি বলে হাসপাতাল জানানোয় আরও গভীর ষড়যন্ত্রের আশঙ্কায় তার কয়েকদিন পরেই থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু পুলিশ কোনো পদক্ষেপ না করায় হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয় তাতেও কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত মামলা করেন হাইকোর্টে।যদিও সরকারের তরফে এডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত পাল্টা দাবি করেন, ওই মহিলা কোনও সন্তানের জন্ম দেননি। তার আগেই তিনি মারা যান। বাড়ির লোককে নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বরে ফোন করে জানানো হয়। কিন্তু তারপরেও কেউ দেহ নিতে না আসায় তা দাহ করে দেওয়া হয়েছে। আর ওই হাসপাতাল আদালতে জানায় কোনো সন্তান হয়নি। ওই মহিলা কোনো সন্তান প্রসব করেননি।