অদ্ভুতুড়ে

ভূত ঘুরে বেড়ায় বিলাসবহুল হোটেলে

By admin

June 13, 2023

কম বেশি আমরা সবাই কিন্তু ভূতে বিশ্বাস করি। বিজ্ঞান বলে ভূত বলে কিছু নেই। কিন্তু এও ঠিক পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনাই তো ঘটে যার কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আমরা অনেক দিন পর্যন্ত খুঁজে পাই না। অনেকের মুখে শোনা যায় ভূত নাকি আছে। তাঁরা অশরীরি বা ভূতের উপস্থিতি টের পেয়েছেন। আসলে অমীমাংসিত রহস্যময় ঘটনাগুলি চিরকালই মানুষকে আকর্ষন করে। আর তাই ভূত-প্রেত ভয় পেলেও মানুষ বারবারই জানতে যায় ভূতপ্রেত সম্পর্কে। অশরীরী কোনো কিছুর অস্তিত্ব অনেকেই বিশ্বাস করতে না চাইলেও প্রতিনিয়তই পুরো বিশ্বে ঘটছে নানান রকমের রহস্যময় ঘটনা যার কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া অনেক সময়ে সম্ভব হয়না। আধুনিক যুগের প্রযুক্তিও হার মেনে যায় এসব রহস্যময় ঘটনার কাছে। যাই হোক ভূত আছে কি নেই, সেই তর্ক-বিতর্কে না গিয়ে আপনাদের একটা হোটেলের গল্প বলি।

কথিত আছে, স্ট্যানলি হোটেলের মালিকের স্ত্রী ফ্লোরা স্ট্যানলির ভূত হেঁটে বেড়ায় বিভিন্ন কামরায়। তবে ফ্লোরা স্ট্যানলির ভূত অদৃশ্য নয়, বিভিন্ন সময়ে চোখের সামনেই তাকে অনেকে দেখতে পেয়েছেন। ফ্লোরা স্ট্যানলি ভালো পিয়ানো বাজাতে পারতেন। স্ট্যানলি হোটেলে রাত কাটিয়ে আসা অনেকেই বলেছেন, তারা রাতের বেলা পিয়ানো বাজানোর আওয়াজ শুনতে পেয়েছেন।

এই হোটেলের অদ্ভুত সব কাণ্ডকারখানা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বিখ্যাত থ্রিলার রাইটার স্টিফেন কিং ১৯৭৭ সালে লিখেছিলেন তার বেস্ট সেলার হরর উপন্যাস ‘দ্য সাইনিং’। এক রাতে স্টিফেন কিং সস্ত্রীক স্ট্যানলি হোটেলে রাত কাটিয়েছিলেন। ট্যুরিস্ট সিজন শেষ হয়ে যাওয়ায় ওই সময় হোটেলটিতে আর কোনো অতিথি ছিল না। ট্যুরিস্ট সিজন শেষ হয়ে যাওয়ায় ওই সময় হোটেলটিতে আর কোনো অতিথি ছিল না। হোটেলের নিস্তব্ধ আঙ্গিনা, লম্বা অন্ধকার করিডর, মনুষ্যবিহীন বিশাল ডাইনিং রুমসহ প্রায় সর্বত্রই ভয়ের উপাদান ছড়িয়ে ছিল। স্টিফেন কিং রাতযাপন করেছিলেন হোটেলের ২১৭ নম্বর কামরায়। সারা রাত অদ্ভুত সব আওয়াজ, অদ্ভুত চিৎকার আর পায়ের শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন তিনি। শেষ রাতে ঘুমিয়ে মারাত্মক দুঃস্বপ্ন দেখেন। এই বাস্তব অভিজ্ঞতাই তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন উপন্যাসের পাতায় পাতায়। ২০০৬ সালে টেলিভিশন শো “ঘোস্ট হান্টারের”একটি পর্ব নির্মাণ করা হয় স্ট্যানলি হোটেলের ওপর।

তারও আগে ১৯৮০ সালে স্টিফেন কিংয়ের উপন্যাস অবলম্বনে স্ট্যানলি কুবরিক নির্মান করেন ‘দ্য শাইনিং’। কুবরিক ‘দ্য শাইনিং’-এর শেষে এসেও দর্শকদের স্পষ্ট করে বলেননি হোটেলটির পুরোনো তদারককারী কে ছিলেন? কি ঘটেছিল তার পরিবারের সঙ্গে? কেন হোটেলের লবিতে বয়ে যায় রক্তের বন্যা? সিনেমায় দেখা যায় জ্যাক টরেন্স (জ্যাক নিকলসন) নামে এক লেখক এক জনবিচ্ছিন্ন এলাকায় একটি হোটেলের তদারককারী হিসেবে চাকরি নেন। তুষারঝড়ে নির্জন হোটেলে আটকে পড়া জ্যাক ও তার পরিবারের সঙ্গে ঘটতে থাকে ভুতুড়ে সব ঘটনা। এক পর্যায়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা জ্যাক তার স্ত্রী ও ছেলেকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। এত কিছুর পরও কিন্তু থেমে থাকেনি স্ট্যানলি হোটেলে অতিথিদের আনাগোনা।