২১ এর ধর্মযুদ্ধ

তার ঘরে সিদ কাটার আশঙ্কা প্রচারে উল্টো মমতার বুমেরাং হওয়ার আশঙ্কা

By admin

April 07, 2021

কলকাতা ব্যুরো: জেতার থেকেও তার ঘরে সিদ কাটার ভয় এখন ত্রস্ত মমতা ব্যানার্জি। এতদিন জয় পাওয়া এবং রাজ্যে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসা নিয়ে জোরালো প্রচার করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী’। কিন্তু দ্বিতীয় দফার পর থেকেই দু’শোর বেশি আসনে জয় পেতে হবে, এই বার্তাই বিভিন্ন সভায় দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।যদিও ভোটের দামামা বাজার প্রথম থেকেই বিজেপির অমিত শাহ রাজ্যে দু’শোর বেশি আসনে জয়ী হয়ে তারা ক্ষমতায় আসার বার্তা দিচ্ছিলেন। সে ক্ষেত্রে তার মূল বক্তব্য ছিল, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপি এবার রাজ্যপাটে বসবে সেই ঘোষণা। কিন্তু গত কয়েকটি সভায় তৃণমূল নেত্রী যেভাবে কখনো ২২৫ এর বেশি আসন চাই বা দু’শোর বেশি আসন নিয়ে জিততে হবে বলে বার্তা দিচ্ছেন, সেখানে তিনি স্পষ্ট করছেন, কম আসন জিতে ক্ষমতায় আসার মত পরিস্থিতি হলেও বিজেপি দল ভেঙে দেবে। তার আশংকার কথা বলতে গিয়ে, মমতা ভোটের মাঝেই যেভাবে বিজেপি, তার প্রার্থীদের টাকা দিয়ে কেনার জন্য ছক সাজিয়েছে বা টোপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন, সে ক্ষেত্রে দলের মধ্যে মনোবল ভেঙে যাবে কিনা, সেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

রাজ্যে ২৯৪ আসনের বিধানসভায় ক্ষমতায় আসতে হলে ১৪৮ টি আসন পেতে হবে শাসককে। সেই কথা মাথায় রেখে তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্য, ২০০ র কম আসন পেলে বিজেপি তার বিধায়কদের টাকা দিয়ে কিনে নিতে পারে। কিছু বিধায়ক টাকার লোভে চলে গেলেও সরকার রক্ষার জন্য তাই যত বেশি সম্ভব বেশি আসনে জেতার পক্ষে সওয়াল করছেন মমতা। তার লাগাতার এই প্রচারে উঠছে অন্য প্রশ্ন, বিগত দিনে অন্যান্য রাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে বিজেপির বিরুদ্ধে ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু বিজেপিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলছেন তাতে দলের পদপ্রার্থীদের বিরুদ্ধেই তিনি সন্দেহ প্রকাশ করছেন কিনা, সেই প্রশ্নই বড় হয়ে উঠছে। আবার তার এই আশঙ্কার মধ্যে কিছু সত্য আছে বলেই ধরে নেওয়া যায় কিনা, সেই প্রশ্ন রয়েছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, তৃণমূলের হয়ে ভোটে দাঁড়ালে জিতলেই কেউ কেউ বিজেপিতে চলে যেতে পারেন বলে যে ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে, তার মধ্যে কতটা সত্যতা আছে, সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বলতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তার কাছে নির্দিষ্টভাবে কিছু খবর আসাতেই তিনি বারেবারে ২০০ র আসনের বেশি জয় করার পক্ষে সওয়াল করছেন।

তাতে ভোট বাজারে মানুষের মধ্যেই তৃণমূল সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা আরো প্রখর হয় কিনা তা নিয়েও চিন্তিত শাসকদলের কিছু নেতা। তাদের মতে, বিভিন্ন মাপের অন্তত ৪০ জন নেতা ভোটের আগেই বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন। ফলে এখন বিরোধীরা প্রচারে গিয়ে যে তৃণমূল প্রার্থীকে নাগরিকরা ভোট দেবেন, তিনি আদপেই পরে তৃণমূলে থাকবেন, নাকি বিজেপিতে চলে যাবেন, সেই জল্পনা উস্কে দিয়ে প্রচার চালাচ্ছে। তারই মধ্যে দলের নেত্রীর আশঙ্কা বারেবারে প্রকাশ হওয়ায় ভোট বাজারে এর উল্টো ফল হয় কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। বিজেপির তার ঘর ভাঙ্গার আশঙ্কায় মমতার লাগাতার এই প্রচারে আত্মঘাতী গোল হয়ে যায় কিনা সেই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে।