কলকাতা ব্যুরো: নিম্নচাপ আর বর্ষার বৃষ্টিতে বাংলায় শেষ কবে ভালোভাবে রোদ দেখা গিয়েছে, তা মনে করতে পারছেন না নাগরিকরা। এরইমধ্যে জুলাই মাস জুড়ে এমন বৃষ্টিতে বাংলা ভিজবে বলে প্রাথমিকভাবে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। তবে শুধু বাংলায় নয়, আগামী মাস খানেক দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্য বৃষ্টিতে জনজীবনে বিঘ্ন ঘটবে। একইসঙ্গে দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘন্টা বিহার, ঝাড়খন্ড, উত্তরাখান্ড এবং গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই রাজ্যগুলিকে আবহাওয়া দপ্তর সতর্ক করেছে বাজ পড়ে ক্ষতি ঠেকাতে আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
আগামী সপ্তাহে শুধু এ রাজ্য নয়, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতেও ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গেই সিকিম, অরুণাচল, বিহার, অসম, মেঘালয় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ফলে এই সমস্ত রাজ্যকে সতর্ক করেছেন মৌসম ভবন। মৌসম ভবন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মাসের প্রথম সপ্তাহে কম বৃষ্টি হলেও, দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বাড়বে বৃষ্টি। গোটা মাস ধরে এই বৃষ্টির পরিমাণ কার্যত একই থাকবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
তবে উত্তর পূর্বের রাজ্য আগামী কয়েকদিন জলে ভাসলেও, পাঁচ থেকে ছয় দিন রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশে কম বৃষ্টি হবে। যদিও পরে বাড়বে বৃষ্টি। ইদানিং রাজস্থানে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে উদ্বেগ বেড়েছে আবহাওয়াবিদদের। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রাজস্থানে যে নিম্নচাপ তৈরি হয়, তা ইতিমধ্যেই কম হতে শুরু করেছে।
পশ্চিমবঙ্গে আপাতত সেই রকম কোন লক্ষণ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টি চলছে। এই বর্ষণ আরো বাড়বে বলে মনে করেছেন আবহাওয়াবিদরা। আগামী চার দিন উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি চলবে। দার্জিলিং, কালিম্পংয়ে রবিবার থেকে দুদিন অতি ভারী বৃষ্টির সর্তকতা দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারেও প্রবল বৃষ্টির সর্তকতা জারি করা হয়েছে। তাছাড়া মালদা, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টির সর্তকতা জারি করা হয়েছে।
উত্তরবঙ্গে লাগাতার চলতে থাকা বৃষ্টির ফলে পাহাড়ি এলাকাগুলিতে ধস নামার সম্ভাবনা রয়েছে। কচি এলাকায় ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। যার জেরে নদীর জলস্তর বাড়তে পারে। ইতিমধ্যেই ভারী বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের নদী গুলির জল বেড়েছে। কোথাও তা বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। আবার দক্ষিণবঙ্গে লাগাতার বৃষ্টি এবং ভরা কোটালে সমুদ্রের জলোচ্ছাসে নদী গুলিতে জল উপচে উঠছে। এই অবস্থায় এক মাস ধরে লাগাতার বৃষ্টি হলে অতিবৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।