রিভিউ

একা স্বস্তিকা তাসের ঘরে

By admin

September 10, 2020

একা। সারা ছবি জুড়ে শুধুই স্বস্তিকা। ছবিতে নাম সুজাতা। খুব সাধারণ। বাড়ির গৃহবধূ। তবুও অন্যরকম। ঠিক আর পাঁচজন গৃহবধূর মত নয়। সে মুক্তি চায়। স্বামীর শাসন আর দাসত্ব থেকে মুক্তি।

এমন বাংলা ছবি হয় নি। এখানে নায়িকা সারাটা ছবি জুড়ে কথা বলেছেন। নায়িকা আর দর্শক। আর কেউ নেই ছবিতে। ডায়লগ নির্ভর। সুজাতার একান্ত ব্যাক্তিগত কিছু কথা বলে গেছেন দর্শকদের। ওটিটি প্লাটফর্মে কিছুদিন আগে মুক্তি পেয়েছে এই ছবি। নাম ‘তাসের ঘর’। পরিচালনা সুদীপ্ত রায়ের। বলা যেতে পারে সোলো অ্যাক্ট ফিল্ম। নায়িকাকে সুন্দরভাবে ছবিতে ব্যবহার করেছেন সুদীপ্ত। গল্প, চিন্তা, লেখা আর শুটিং লক ডাউনের মধ্যেই। লক ডাউন এসেছে গল্পে বার বার। ৪৭ মিনিটের ছোট ছবি। পুরোটাই ঘরের অন্দরে শুটিং। এর আগে ছবির প্রমোশনও হয়েছে। স্বস্তিকাকে দিয়ে করানো। হইচই টিভি থেকে ইউটিউবে। সেখানে স্বস্তিকা প্রশ্ন ছুরেছেন , ” জীবনটা আমার , জীবনটা আপনার। …. বিয়েটা কি ব্যবসা ? আমরা কি পণ্য ? ” হ্যাঁ, নারী স্বাধীনতার ব্যাপার তো আছেই। অবলা নারী বলেই পুরুষের পেটানি সহ্য করবে বা শাশুড়ির গঞ্জনা?সেটা নারীই পারে পাল্টে দিতে। সুজাতার মত নারী। নারী স্বাধীনতা সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন পর্যায় এসেছে। হেনরি জেমস এর উপন্যাস , এ পোট্রেট অফ আ লেডি তে একরকম । হেনরিক ইবসেনের নাটক এ ডলস হাউস এ একরকম। এখন নারী স্বাধীনতার সংজ্ঞা পাল্টেছে। কি রকম ? তা দেখিয়েছে এবার তাসের ঘরের পরিচালক।

লম্বা চুল , ছোটো টিপ, আটপৌরে অতি সাধারণ নারী সুজাতা। স্বামীর ফরমাইস খাটেন দিনভর। কখনো চা, কখনো ব্রেকফাস্ট। লক ডাউনে অত্যাচার আরোও বেড়েছে। স্ত্রী প্রায় দাসী হয়েছে। এরপর আছে কাপড় কাচা। সুজাতা একা থাকতে ভালবাসে। কাজ করতেও। কিন্তু পান থেকে চুন খসলেই স্বামী রেগে আগুন। চলে শারীরিক নির্যাতন। কিল , চড়, ঘুষি। কিছুই দেখানো হয়নি। সবই সুজাতার মুখে শোনা। রাত হলে খুব তাড়াতাড়িই তার শরীরের ভিতরটা ভিজে যায়। আর স্বামী দিলীপ ? সে সুজাতাকে ভালোবাসে না। তার আলাদা এক বিবাহিত প্রেমিকা আছে। শর্মি। শর্মির সঙ্গে সে বাড়ি বসে সেক্স চ্যাট করে। দরজায় কান পেতে শোনে সুজাতা। যদিও স্বামী আর তার প্রেমিকার ডায়ালগ মুখস্থ সুজাতার। অভিনয় করে দেখায় সে। একবার স্বামী সেজে। আর একবার শর্মি সেজে। এই প্রেমে সুজাতা পুঁজ, রক্তের গন্ধ পায়। নিরুপায় সুজাতা গাছেদের সঙ্গে ভাব জমায়, গল্প করে। গাছেদের পাতার প্রাণ তাকে তার নষ্ট হয়ে যাওয়া সন্তানের কথা মনে করায়।

স্বস্তিকা এই ছবির সব নায়িকা। আর খল নায়িকাও। অ্যান্টি হিরোইন। কেন ? দেখুন তবে ছবিটা নিজেই।