কলকাতা ব্যুরো: সারা দেশ তাঁকে এখন ভিলেন বানিয়ে দিয়েছে। সমাজ পুলিশরা তাঁকে মোটামুটি সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর এক মাত্র কারণ বলে দেগে দিয়েছে। শুক্রবার প্রায় আট ঘণ্টা ইডি তাঁকে জেরা করেছে। ফলে সোশ্যাল মিডিয়া একরকম অভিনেতার আত্মহত্যায় একমাত্র কারণ হিসেবে ঠাওরে ফেলেছে তাঁর নামই। এখন আর নেপটিজম তত্ত্ব নিয়ে ফিসফসও নেই।
এই অবস্থায় শনিবার দুটি জিনিস আইনজীবীর মাধ্যমে প্রকাশ্যে আনলেন রেহা চক্রবর্তী। গোটা ঘটনাক্রমে তার মূল্য কতটা সময় তার উত্তর দেবে। কিন্তু একটি জলের বোতল ও একটি নোট প্যাড প্রকাশ্যে এনে দাবি করলেন, সুশান্তের থেকে এই দুটি জিনিসই পেয়েছেন তিনি।
নোট প্যাডের একটি পাতায় সুশান্ত সিং রাজপুতের হাতে লেখা কয়েকটি লাইন। তার মূল বক্তব্য, সুশান্ত নিজের এই জীবনের জন্য কৃতজ্ঞ। তিনি কৃতজ্ঞ লিল্লু তাঁর জীবনে আসায়। বেবু তাঁর জীবনে থাকতেও জীবনকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি। স্যার ও মম জীবনে আসাতেও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন নিজেকে। কৃতজ্ঞতার শেষ নেই তাঁর সাধের কুকুর ফুজের জন্যেও। অভিনেতা নোট প্যাডে লেখা শেষ করেছেন, বি এওয়ার লিখে।
এখানে লিল্লু রেহার ভাই সৌভিককে ডাকতেন সুশান্ত। বেবু ডাকতেন রেহাকে। আর স্যার ও মম রেহার বাবা ও মা।
ফলে এমন এক লেখা মিডিয়ার সামনে এনে হয়তো অভিনেত্রী কিছুটা চাপ লাঘব করতে চাইছেন।
এখন আইনজীবিরা মনে করছেন, আইনের চোখে এ গুলির তেমন কোনো গুরুত্ব হয়তো নেই, কিন্তু গোটা দেশ যে ভাবে তাঁকে ভিলেন হিসেবে দেগে দিচ্ছে সেখানে কিছুটা সহানুভূতির হাওয়া এতে যদি ওঠে এই পরিস্থিতিতে সেটাও অভিযুক্তদের কাছে বাড়তি অক্সিজেন।
নোট প্যাডে অভিনেতার নিজের হাতের লেখা বলে জানিয়েছেন রেহা। বিহারের থেকে মুম্বাইয়ে এসে অনেক লড়াইয়ের পর কিছুটা জায়গা করে নেওয়া সেই ছেলের এই কৃতজ্ঞতা কতটা আন্তরিক তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে এই কৃতজ্ঞতার এক ফোঁটাও নিজের বাবা-মায়ের প্রতি প্রকাশ পেল না কেন? না কি দূরে থাকা বাবা-মায়ের থেকে সব সময়ে চোখের সামনে থাকা প্রেমিকাকে খুশি করতেই এমন আবেগের বহিঃপ্রকাশ? মনস্তত্ববিদরা অবশ্য মনে করছেন, অর্থ, যশ সব পেলেও এত বড় শহরে আর গ্ল্যামার জগতের বাইরে কিছুটা একাই ছিলেন সুশান্ত। সেখানে তাঁর উপর অনেকটাই প্রভাব খাটানোর সুযোগ পেতেন বান্ধবী। ফলে তাঁর উপর নির্ভরতাও বেড়ে যায় সুশান্তের। সেই আবেগ থেকেই এমন লেখা বলে ধারনা মনবিদদের।