কলকাতা ব্যুরো: দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে ভবানীপুরের উপনির্বাচন নিয়ে বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার ভবানীপুরে উপনির্বাচন। নির্বিঘ্নে সেই ভোট উতরে দিতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলো নির্বাচন কমিশন। যেহেতু আবহাওয়া দফতর ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে, তাই ইতিমধ্যে ইভিএম স্বচ্ছ পলিথিন ব্যাগ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ভোটের কাজে যুক্ত আধিকারিকদেরও রেনকোট দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ভোটারদের সুবিধার জন্য বুথগুলিতে প্রয়োজনীয় ছাউনিরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
কলকাতায় মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে টানা বৃষ্টি চলছে। বেশ কিছু জায়গায় জলও জমেছে। কয়েকদিন আগের বৃষ্টি ভবানীপুরের একটা বড় অংশ জলের তলায় চলে গিয়েছিল। সেই বিষয়টিও মাথায় রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। ইতিমধ্যে ভবানীপুরের বেশ কিছু অংশে জল জমে রয়েছে। যদু বাবুর বাজার, গাঁজা পার্ক, ভুকৈলাস রোড সহ মূলত ৭৭ নাম্বার ওয়ার্ডের বহু এলাকা টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
ভোট পরিচালনায় কর্মরত আই এ এস অফিসার অবনীন্দ্র সিং বলেন, কলকাতা পুরনিগমের টিম জল সরাতে কাজ করছে। ভোট পরিচালনা কেন্দ্র বা ডিসিআরসি তৈরি করা হয়েছে দেড় ফুট উচু জায়গায়। ফলে জল জমার কোনও সমস্যা নেই। আর ভোটের জিনিসপত্র বিলি করতেও কোনও অসুবিধা হচ্ছে না।
তবে কমিশন সূত্রে খবর, ভবানীপুরের যে জায়গায়গুলিতে সব থেকে বেশি জল জমে আছে পৌরনিগমের সহযোগিতায় সেক্টর অফিসাররা সেই সমস্ত জায়গা পরিদর্শন করেন। দ্রুত জমা জল সরাতে ২৪ ঘণ্টা পাম্প চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নিচু জায়গাগুলি যেখানে একটু বৃষ্টি হলেই জল জমে যেতে পারে, সেই জায়গাগুলিতে বাড়তি পাম্প রাখা হয়েছে।
এছাড়া যদি কোনও জায়গায় তিনফুটের বেশি জল জমে যায়, সেক্ষেত্রে ভোটারদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের তরফ থেকে ছোট বোট থাকছে। এছাড়াও সিভিল ডিফেন্সের দু’টি উদ্ধারকারী গাড়িরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই গাড়িগুলিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চার সদস্যের টিমও থাকছে।
পাশাপাশি ডিসিআরসি, সেক্টর অফিস ও ৯৮টি বুথে যাতে কোথাও জল জমে না যায়, সেই বিষয় পৌরনিগমকে নজর রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে। ভবানীপুর অঞ্চলে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে যাতে কোনও রকম দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা না ঘটে, সেই বিষয়ে সিইএসসিকে নজরদারি চালাবার অনুরোধ জানানো হয়েছে। ভোটকর্মীদের সুবিধার জন্য ডিসিআরসি অফিসে অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করা হয়েছে।
৩০ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার রাজ্যের ৩টি বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুর, সামশেরগঞ্জ, জঙ্গিপুরে ভোট কিন্তু এর মধ্যে সবার নজর ভবানীপুর উপনির্বাচন। খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই কেন্দ্রের প্রার্থী। তাই এই হাইভোল্টেজ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কোনওরকম আপস করবে না নির্বাচন কমিশন। ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকে বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করলো কমিশন।
পাশাপাশি কেন্দ্রের সব বুথে ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানা গিয়েছে। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে বিধানসভা কেন্দ্রগুলি ও তার চারপাশ। প্রতিটি বুথের নিরাপত্তায় থাকবে কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী এবং প্রচুর পুলিশ কর্মী।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ২৮৭ টি বুথের জন্য হাফ সেকশন অর্থাৎ ৩ জন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান মোতায়েন করা হবে। এছাড়া এলাকায় টহল দেবে ‘কুইক রেসপন্স টিম’। বুথের বাইরে ও পুরো এলাকার দায়িত্বে থাকছে কলকাতা পুলিশ। এলাকার প্রতিটি থানার নিরাপত্তার দায়িত্বে একজন করে ডেপুটি কমিশনার থাকবেন।