এক নজরে

ফিলিস্তিনে হামলার প্রতিবাদে মাঠে ঢুকলেন দর্শক

By admin

November 19, 2023

ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে ম্যাচের মধ্যেই দেখা গেল এক অন্যরকম ঘটনা। আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ফাইনাল চলাকালে ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে মাঠে ঢুকে পড়েন এক দর্শক।সেই দর্শকের টি-শার্টের সামনের অংশে লেখা ছিল ‘স্টপ বোম্বিং প্যালেস্টাইন’ অর্থাৎ ফিলিস্তিনে বোমা হামলা বন্ধ করুন। আর পেছনে লেখা ছিল ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’। মাঠে ঢুকেই ক্রিজে কোহলির কাছাকাছি চলে যান ওই আগন্তুক। পরে ভারতীয় তারকাকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করতে দেখা যায়। কোহলির সঙ্গে দেখা করতে মাঠে অনুপ্রবেশ ওই সমর্থকের। তবে ফিলিস্তিনপন্থী টিশার্ট ও মুখে মাস্ক দেখে এটা নিশ্চিত যে, বিশ্বকে ফিলিস্তিনের পক্ষে একটা বার্তা দিতে চেয়েছেন। উল্লেখ্য, ইসরাইলি আগ্রাসনে মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। প্রতিদিন শতশত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। লাশের গন্ধে ভারি হয়ে উঠছে বাতাস। বাদ যাচ্ছে না শিশুরাও। এমনকী হামলায় আহতরাও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এর আগে ভারত বিশ্বকাপ চলাকালে মাঠে ফিলিস্তিনি পতাকা বহন করার দায়ে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল বেশ কয়েকজনকে।

সময় নষ্ট না করে তার পেছনে ছোটেন নিরাপত্তাকর্মীরা। ওই দর্শককে ধরে মাঠের বাইরে নিয়ে যান তারা। ভারতের ইনিংস চলাকালীন ১৪তম ওভারে ঘটে ঘটনাটি। অ্যাডাম জাম্পার করা ১৪তম ওভারে তৃতীয় বলটির সময় মাঠে প্রবেশ করেন ওই সমর্থক। এরপর কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ থাকে খেলা। যদিও সম্প্রচারে ক্যামেরায় খুব বেশি দেখানো হয়নি ওই দৃশ্য। এর আগে চলতি আসরে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ চলাকালীন একদল দর্শক গ্যালারিতে ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে প্রবেশ করেছিলেন। বিষয়টি ক্রিকেট পরিচালনা সংস্থা আইসিসির নজরে আসতেই কয়েকজন এসে দর্শকদের কাছে থাকা ফিলিস্তিনের পতাকা কেঁড়ে নেয়। পরবর্তীতে কলকাতার ময়দান থানার পুলিশ এই ঘটনার জেরে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায় যে, ওই ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়।

তবে আসলে খবর হল, এবারও উপমহাদেশে ধরা দিল না বিশ্বকাপ ক্রিকেটের শিরোপা। ২০১১ সালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। এরপর বিশ্বকাপের দুই আসরে অস্ট্রেলিয়া (২০১৫) ও ইংল্যান্ড (২০১৯) ঘরে তুলে নেয় শিরোপা। এবার ভারত  দুর্দান্ত দাপটে খেলে অপরাজিত থেকে ফাইনালে উঠেছিল। অপরদিকে প্রথম দুই ম্যাচ হেরেও যোগ্য দল হিসাবে ফাইনালে জায়গা করে নেয় অস্ট্রেলিয়া।  আহমেদাবাদ নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে চূড়ান্ত লড়াইয়ে ভারতের অপরাজিত থাকার অহঙ্কার চুড়মার করে ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে নিল অস্ট্রেলিয়া। তারা ভারতকে হারিয়ে দেয় ৬ উইকেটের সহজ ব্যবধানে। এই ফাইনাল ম্যাচের মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী বিশ্বকাপের রমরমা আসরের সমাপ্তি ঘটল।

এদিন অস্ট্রেলিয়া টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়। শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে শক্তিশালী ভারত খুব একটা এগুতে পারেনি। ২৪০ রানেই থেমে যায় তাদের ইনিংস। বিরাট কোহলি (৫৪) আর লোকেশ রাহুলের (৬৬)-র পাশাপাশি অধিনায়ক রোহিত শর্মার ৪৭ রানের কল্যাণে এই দলীয় রান পায় ভারত। জয়ের জন্য এই রান টপকাতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি অস্ট্রেলিয়াকে। তবে শুরুটা যে ভাল হয়নি অস্ট্রেলিয়ার, সেটা এক বাক্যে স্বীকার করবেন সমর্থকরা। দলের ৮১ রানে ৩ উইকেটের পতন হওয়ায় ভারতীয় বোলারদের চাপেই ছিল অজিরা। ওপেনার ট্রাভিস হেড আর লাবুশেনের অনমনীয় ব্যাটিংয়ে চাপ কাটিয়ে জয়ের দিকে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন ট্রাভিস হেড। তার ১২০ বলে ১৩৭ রানের অসাধারণ সেঞ্চুরি এবং লাবুশেনের হার না মানা ৫৮ রানে অস্ট্রেলিয়া ৭ ওভার বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়। 

পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বকাপের ফাইনালে সর্বশেষ ৩টি ফাইনালই জিতেছে পরে ব্যাটিং করা দল। ২০১৯ সালে ম্যাচ ও সুপার ওভার টাই হওয়ার পর জেতে ইংল্যান্ড। এবারও ফাইনালে পরে ব্যাটিংয়ে নেমে জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডে ক্রিকেটে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া ১৯৮০ সালে প্রথম মুখোমুখি হয়েছিল। সেই থেকে এখন পর্যন্ত ১৫১টি ম্যাচ খেলে ভারতের ৫৭ জয়ের বিপরীতে অস্ট্রেলিয়ার জয় ৮৪ ম্যাচে। ১০টি ম্যাচ শেষ হয়েছে ফল ছাড়াই। অন্যদিকে, বিশ্বকাপের মঞ্চে দল দুটি একে অপরের মুখোমুখি হলো ১৪বার। যেখানে ভারতের ৫ জয়ের বিপরীতে ৯টিতে জয় অস্ট্রেলিয়ার।