এক নজরে

Sayan Deb Chatterjee: কলকাতা পুর নির্বাচনে দিদিই জিতবেন

By admin

November 27, 2021

কলকাতা ব্যুরো: তৃণমূলের অন্দরে দলের একনিষ্ঠ সৈনিকরা তবে কি প্রাপ্য মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন? একটি টুইট ঘিরে শুরু হয়েছে এমনই জল্পনা ৷ যিনি এই টুইট করেছেন, তিনি তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক সায়নদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অন্য পরিচয় হল তিনি রাজ্যের মন্ত্রী এবং অন্যতম প্রবীণ বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে। শুক্রবার নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে ইংরাজিতে একটি টুইট করেছেন সায়ন। যার ভাষা অত্যন্ত আবেগঘন এবং ইঙ্গিতবাহী বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। যদিও তাঁর নিজের বক্তব্য হল, ‘‘একেবারে ব্যক্তিগত কারণেই’’ এই টুইট।

যখন ওঁদের ওঁর বলিদান প্রয়োজন ছিল, ওঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আর যখন বলিদান দেওয়া হয়ে গেল, ওঁরা বললেন, এখনও সময় আসেনি। মোদ্দা কথা হল, যতক্ষণ তোমার সময় না আসছে, ততক্ষণ অন্যদের জন্য তালি বাজিয়ে যাও। ২৬ নভেম্বর রাত ১০ টা বেজে ২৯ মিনিটে ইংরেজিতে ঠিক এই টুইটটিই করেছেন সায়ন। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে কাটাছেঁড়া।

তবে শনিবার সন্ধ্যায় খানিকটা ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করতে দ্বিতীয় পোস্টটি করেন তিনি। যদিও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এদিন সন্ধ্যায় সায়নদেব টুইটে লেখেন, ‘আমার আগের পোস্ট নিয়ে নানা মহলে নানাবিধ জল্পনা চলছে। বিষয়টিকে মশলাদার করে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। রাজনৈতিকভাবে আমি তৃণমূল কংগ্রেসের সমস্ত প্রার্থীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’ একইসঙ্গে সায়নদেবের সংযোজন, ‘কলকাতা পুর নির্বাচনে দিদিই জিতবেন। সবুজ আবির খেলা হবে।’

২৬ নভেম্বর অর্থাৎ শুক্রবার বিকেলেই (সায়নের টুইটের কয়েক ঘণ্টা আগে) কলকাতায় আসন্ন পুরভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে তৃণমূল কংগ্রেস। তাতে মহিলা এবং তরুণ প্রার্থীদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ছেঁটে ফেলা হয়েছে অনেক হেভিওয়েটকে। তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, তৃণমূলের এই প্রার্থী তালিকায় এমন বেশ কয়েকটি নাম রয়েছে, যাঁরা কোনও মন্ত্রী বা বিধায়কের ছেলে বা মেয়ে এবং, তাঁদের কয়েকজন রাজনীতিতে রীতিমতো আনকোরা। এক্ষেত্রে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ছেলে সৌরভ ভট্টাচার্য বা শশী পাঁজার মেয়ে পূজা পাঁজার নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। তবে সায়নদেবের সঙ্গে এঁদের একটা ফারাক আছে। সায়ন দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয়ভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। দীর্ঘদিন ছাত্র রাজনীতি করেছেন তিনি। বর্তমানে যুব রাজনীতির একজন রাজ্যস্তরের নেতা। সবথেকে বড় বিষয় হল, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য বড় বলিদান দিয়েছেন তাঁর বাবা। ভবানীপুর আসনে জয়ী হয়েছিলেন শোভনদেব কিন্তু, মমতা নন্দীগ্রামে হেরে যাওয়ায় উপনির্বাচনে তাঁর জিতে আসা দরকার ছিল। আর তার জন্য ভবানীপুরের থেকে নিরাপদ আসন আর ছিল না। তাই বিধায়ক পদে ইস্তফা দেন শোভনদেব। পরে অবশ্য খড়দা থেকে জিতে ফের বিধায়ক হন তিনি।

এই প্রেক্ষাপটে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থেকেও পুর নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারলেন না সায়ন অথচ যাঁদের রাজনীতিতে সেভাবে হাতেখড়িও হয়নি, তাঁরা তৃণমূলের টিকিট পেয়ে গেলেন। ওয়াকিবহাল মহলের অনুমান, দলীয় নেতৃত্বের এই আচরণেই আহত হয়েছেন সায়ন। হয়তো সেই কারণেই এমন আবেগঘন পোস্ট কিন্তু, সায়ন নিজে সেকথা মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, এটা পুরোটাই তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। এমনকী, এর পিছনে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক রয়েছে কিনা, তারও কোনও উত্তর দেননি সায়নদেব।