কলকাতা ব্যুরো: বড় বিপাকে পড়েছিলেন বড়বাবু। একদিকে কর্তব্য পালন, অন্যদিকে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা। শেষপর্যন্ত সরকারি কাজ শেষ করতে গিয়ে নিজের ঝুঁকি ডেকে আনলেন তিনি। বিপদ বাড়ালেন নিজের পরিজন, সহকর্মী এবং আরও এমন অনেকের, যাঁরা নিয়মিত থানায় যান। হ্যাঁ, তিনি শামুকতলা থানার বড়বাবু। পদমর্যাদায় অফিসার- ইনচার্জ। আলিপুরদুয়ার জেলায় ভুটান সীমান্তের কাছে এই থানা। করোনায় মৃতের দেহ সৎকার করতে গিয়ে ওই থানার ওসি বিরাজ মুখোপাধ্যায় পিপিই খুলে ফেলেছিলেন। ঘাড়ে গামছা ঝুলিয়ে কার্যত ডোম সেজে গ্রামের শ্মশানে দেহ দাহ করেন তিনি। কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে দাহ আটকাতে গিয়েছিলেন গ্রামের অনেকে। তাঁদের বক্তব্য ছিল, দাহ করলে এলাকায় সংক্রমণ ছড়াবে। দাহ আটকাতে অনড় ছিলেন স্থানীয়রা। এদিকে সৎকারে বাধা সরাতে বলপ্রয়োগ করার হুকুম নেই। দেহ নিয়ে শ্মশানে তখন কালঘাম ছুটছে পুলিশের।
শেষপর্যন্ত কুশলী পদক্ষেপ করলেন ওসি বিরাজ মুখোপাধ্যায়। পিপিই খুলে মৃতদেহ ছুঁয়ে তিনি তাড়া করলেন উপস্থিত জনতাকে। হুমকি দিলেন, এখন আমি আপনাদের সবাইকে ছুঁয়ে দেব। ব্যস, উপস্থিত সকলের ভয়ে আত্মারাম খাঁচাছাড়া। যে যেমন পারলেন, শ্মশান থেকে দে ছুট। সেই সুযোগে বিরাজ দেহটি তুলে দিলেন চিতায়। শনিবার রাতে নির্বিঘ্নে শেষ হল সৎকার। কিন্তু এখন প্রশ্নের মুখে পড়েছেন বিরাজ। পিপিই না পরে করোনায় মৃতের দেহ সৎকার কোভিভ প্রোটোকলের পরিপন্থী। তিনি সরকারি স্বাস্থ্যবিধি ভেঙেছেন। তাছাড়া তিনি নিয়মিত থানায় যাচ্ছেন। ফলে বিপন্ন হতে পারেন তাঁর পুলিশ সহকর্মীরা। থানায় যাঁরা যান, তাঁদেরও ঝুঁকি বাড়বে। নিরাপদ নন এখন বড়বাবুর পরিবারও। কর্তব্য পালন করে এখন মহাফ্যাসাদে শামুকতলা থানার ওসি।