এক নজরে

#pallavidey: আর্থিক কারণে চিন্তিত ছিলেন পল্লবী, দাবি প্রেমিক সাগ্নিকের

By admin

May 16, 2022

কলকাতা ব্যুরো: অভিনেত্রী পল্লবী দের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় টলিপাড়া। আত্মহত্যা না খুন? তা নিয়ে চলছে বিস্তর চর্চা। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে পল্লবীর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে অভিনেত্রীর প্রেমিক সাগ্নিকের বয়ান যাচাই করে দেখছে পুলিশ।

গড়ফার গাঙ্গুলিপুকুর এলাকার বহুতলে থাকতেন পল্লবী। সাগ্নিকের সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন তিনি। দু’জনে একই ফ্ল্যাটে থাকতেন। রবিবার সকালে সাগ্নিকই পল্লবীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। এমআর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তরুণ অভিনেত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রথমে শোনা গিয়েছিল, একই ফ্ল্যাটে দু’টি আলাদা ঘরে থাকতেন সাগ্নিক ও পল্লবী। কিন্তু পরে পুলিশকে সাগ্নিক জানান, তাঁরা একই ঘরে ছিলেন। সকাল ন’টা নাগাদ সিগারেট খেতে বাইরে যান তিনি। ফিরে এসে দেখেন দরজা বন্ধ। জানলা দিয়ে পল্লবীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। দরজা ভেঙে প্রেমিকাকে উদ্ধার করেন।

এদিকে পল্লবীর পরিবারের দাবি, সাগ্নিক দিনকয়েক আগে আচমকা অন্য কাউকে বিয়ে করে ফেলেছিলেন। সে কথা পল্লবী জানতেন না। পরে তা জানতে পেরেই অশান্তি চরমে ওঠে। সাগ্নিকের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগও উঠেছে। নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাগ্নিক। পুলিশকে দেওয়া বয়ানে নাকি পল্লবীর প্রেমিক জানিয়েছেন, আর্থিক কারণেই প্রবল চিন্তিত ছিলেন পল্লবী। গাড়ি-সহ একাধিক জিনিস ইএমআই-তে কিনেছিলেন তিনি। কিন্তু ‘মন মানে না’ সিরিয়ালের পর তেমন কোনও কাজ পাচ্ছিলেন না। তাই ইএমআই কীভাবে শোধ করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তিনি বারবার পল্লবীকে বোঝানের চেষ্টা করেছেন বলেও দাবি সাগ্নিকের।

তবে পল্লবীর এই রহস্যমৃত্যুর পর থেকেই তাঁর সঙ্গী সাগ্নিকের চারিত্র নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। পল্লবীর মৃত্যুর পরই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর সব এমনিতেই পল্লবীর পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয় সাগ্নিক আগে থেকেই বিবাহিত ছিলেন তিনি তাঁর স্ত্রীকে ডিভোর্স না দিয়েই পল্লবীর সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন। তবে এখানেই শেষ নয় পল্লবীর অনুপস্থিতিতে ফ্ল্যাটে আসত সাগ্নিকের অন্য এক বান্ধবী। সেই নিয়ে নাকি বাক বিতন্ডা হয়েছে পল্লবী-সাগ্নিকের মধ্যে। তবে এর মধ্যেই এত চাঞ্চল্যকর তথ্য ঘুরে ফিরে আসছে যে বান্ধবীকে নিয়ে আসতেন সাগ্নিক তিনিও নাকি টলিপাড়ার অভিনেত্রী।

এদিকে, সাগ্নিকের সাথে পল্লবীর বাড়ির লোকের সম্পর্ক ভালো ছিল বলেই জানা যাচ্ছে। শেষ তিনদিন আগে পল্লবী তাঁর বাড়িতে ফোন করেছিল। পল্লবীর বাড়ির লোকজনের অভিযোগ নিয়ে কিছু বলতে নারাজ সাগ্নিকের বাবা সুভাষ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ওঁরা লিভ ইন করতে বলেই জানিয়েছিল আমাদের। যদিও এই লিভ ইন সম্পর্কে বিষয়ে আমাদের মত ছিল না। আমরা চাইতাম ওঁরা বিয়ে করুক।
সাগ্নিকের মা সন্ধ্যা চক্রবর্তী বলেন, মাঝেমধ্যেই পল্লবীর সঙ্গে কথা হত। দু’জনেরই মাথা গরম করার স্বভাব ছিল। সাগ্নিক অনলাইনে কাজ করত। তবে কি পরিবারের মান রাখতেই সম্প্রতি বিয়ে সেরে ফেলেছিলেন অভিনেত্রী পল্লবী।
এদিকে, পল্লবী দের বাবার অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। সেই অভিযোগ নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি সাগ্নিকের বাবা-মা। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে গড়ফা থানার পুলিশ।

তবে সাগ্নিকের এই বক্তব্য যাচাই করছে পুলিশ। পল্লবীর মৃত্যুর যে সময় সাগ্নিক জানিয়েছেন, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে বলেই খবর। অস্বাভাবিক মৃত্যুরই তদন্ত আপাতত করছে পুলিশ। পরে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠলে তা খতিয়ে দেখা হবে।