নদিয়া জেলার আমঝুপির কাছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর মনোরম পরিবেশে পাগলাখালিতে পলদা বিলের পশ্চিম তীরে অবস্থিত একটি ছোট মন্দির। মাঝখানে একটি অশ্বত্থ গাছ, সেটিকে ঘিরে মন্দির। মন্দিরে ভগবান আশুতোষ বিরাজ করছেন, ভক্তদের কাছে তিনি পাগলাবাবা নামে পরিচিত। তিনি অশ্বত্থ গাছে বিরাজ করছেন। গাছের গোঁড়ায় শিবলিঙ্গ ও গোঁড়ার চারপাশে শিব ও অন্যান্য দেবদেবী। মন্দিরের চারপাশে অনেকটা ফাঁকা চত্বর। সেখানে ভান্ডারা রান্না করার কয়েকটি ঘর ও উনোন আছে। ১৫/১৬ বছর ধরে মন্দির চত্বর ঘিরে চালা দেওয়া পুজোর সামগ্রীর ও বিভিন্ন রকমের দোকান ও ফলের দোকান হয়েছে। এর মধ্যে পঁয়ত্রিশটা পাকাপাকি দোকান।
বৈশাখ মাসে অনেক ভক্ত নবদ্বীপের গঙ্গা থেকে জল নিয়ে এসে বাবার মাথায় জল ঢালে।মন্দির চত্বরে অগ্রহায়ন মাসে ১৩/১৪/১৫ তারিখে তিনদিন লালন মেলা হয়।বহু-কাল আগে পাগলাখালির মন্দির অঞ্চলটি শ্মশান ছিল। আগে এক সাধুর বাস ছিল, এখন কেউ থাকেনা। সন্ধ্যার পর মন্দির চত্বরে কেউ থাকেনা। অনেকে কৌতূহল বশত থেকেছে। সকালে তাদের মৃতদেহ পাওয়া গেছে নয়তো পাগল অবস্থায় পাওয়া গেছে। পাগলা বাবার মন্দির সম্পর্কে অনেক আশ্চর্য আশ্চর্য ঘটনা আছে।
যেমন– এক গরিব মানুষের পাগল, বোবা অসুস্থ ছেলেকে বাবার মন্দিরে রেখে গিয়েছিল, বাবার আশীর্বাদে তার ছেলে যেন সুস্থ হয় সে আশায়। তিনদিন পর মন্দির থেকে ১৫/১৬ মাইল দূরের বাড়িতে সে ছেলে সুস্থ হয়ে ভোর রাতে বাড়ি ফিরে যায়। মন্দির চত্বরে টিউকল আছে, সেটা একবার একজন চুরি করেছিল। যে চুরি করেছিল তার জীবনে অনেক ঘটনা ঘটে, পরে বাবার মন্দিরে এসে কল ফেরত দেওয়ার পর তার সব সমস্যা মেটে। মন্দিরে আসা কোনো ভক্তের চটিও চুরি হয়না, কেননা চটি চুরি করেও একজন নানান সমস্যায় পড়েছিল। এরকম ছোটো বড় নানান ঘটনা লোকমুখে শোনা যায়।
পাগলাখালি মন্দিরের আসেপাশে কোনো জন বসতি নেই। পলদা বিল ও সবুজ ফসলের ক্ষেত। মন্দিরে যাওযার রাস্তাটি মাটির। বর্ষাকালে যাতায়াত করতে অসুবিধা সত্বেও বহু মানুষ যায়।
কৃষ্ণনগর-করিমপুর রুটের দইয়ের বাজার থেকে মাধবপুর, ডাংনা হয়ে পাগলাখালি যাওয়া যায়।আর একটি পথ কৃষ্ণনগর-কৃষ্ণগঞ্জ রুটের ভীমপুর থেকে গ্রামের ভেতর দিয়ে পাগলাখালি।