এক নজরে

বিধানসভা নির্বাচনের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় লিখল নাগাল্যান্ড

By admin

March 02, 2023

বিভিন্ন ক্ষেত্রে আজ মহিলাদের সাফল্য ও দক্ষতা তর্কাতীত ভাবেই প্রতিষ্ঠিত। চাকরি ও ব্যবসাক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত তারা।গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও মহিলারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন।পঞ্চায়েত ও পুর নির্বাচনের ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য যত আসন সংরক্ষিত রয়েছে তার ইতিবাচক প্রভাবও পড়ছে সামাজিক ক্ষেত্রে। বিভিন্ন রাজ্যে সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত মহিলারা অনেক ক্ষেত্রেই দক্ষতার নজির রাখছেন। সংশ্লিষ্ট ওয়াকিবহাল মহল থেকে তাদের কাজের ভূয়সী প্রশংসাও করা হচ্ছে। কিন্তু এরকম ইতিবাচক সম্ভাবনা সত্ত্বেও ১৯৬৩ সালে স্বতন্ত্র রাজ্যের মর্যাদা পাওয়া নাগাল্যান্ডে আজকের আগে পর্যন্ত ৬০ সদস্যের রাজ্য বিধানসভায় কোনও একজন মহিলা বিধায়ক পা রাখেননি। এমন নয় যে নারীরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি কিন্তু তারা কখনোই ক্ষমতায় আসেননি। এ বছর জাখালু, ক্রুস, রোজি থমসন এবং কাহুলি সেমাযে এই চারজন মহিলা প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। বৃহস্পতিবার এই রাজ্যে প্রথম কোনও মহিলা ‘হেভিওয়েট’ এই নির্বাচনে জয় পেলেন। ডিমাপুর-৩ আসন থেকে হেকানি জাখালু (#Hekani Jakhalu) জয়ী হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ওই কেন্দ্র থেকে হেকানিকে বিজেপি এবং এনডিপিপি জোটের প্রার্থী হিসাবে টিকিট দেওয়া হয়।

পূর্বোত্তরের এই রাজ্যগুলোতে ভোটে মহিলাদের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।কারণ পরম্পরাগত ভাবেই এই অঞ্চলের রাজ্য সমূহে সামাজিক নানা ইস্যুতে মহিলাদের অবস্থান সামনের সারিতে।কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এটাই যে ভোটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও এই অঞ্চলে ক্ষমতার অলিন্দ থেকে মহিলারা কিন্তু অনেক দূরে। মহিলা ভোটারের সংখ্যা বেশি, প্রদত্ত ভোটের হারেও আধিক্য মহিলাদের।কিন্তু তারপরও বিভিন্ন দলের প্রার্থী তালিকায় মহিলাদের উপস্থিতি একেবারেই নগণ্য। স্বাভাবিক ভাবেই বিধানসভায় মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব আরও কয। একটি তথ্যে প্রকাশ পূর্বোত্তরের সাত রাজ্যে বিধানসভার মোট ৪৬৬টি আসনে বর্তমানে ৫ শতাংশ মাত্র মহিলা প্রতিনিধি রয়েছেন।যেখানে বিধায়ক খুবই কম,কিংবা নেই, সেখানে মন্ত্রী থাকবেন কি ভাবে!বর্ত্তমানে মেঘালয়,মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল প্রদেশে কোনো মহিলা মন্ত্রী নেই।সমাজ ও দেশের অগ্রগতির পক্ষে এটা যে মোটেই সুলক্ষণ নয় তাতে নিশ্চই সবাই একমত হবেন।

অথচ পূর্বোত্তরের রাজ্যগুলিতে বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুর ক্ষেত্রে মহিলাদের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে।অনেকেই এমনটা বলেন যে,যদি মহিলারা রাজনৈতিক ক্ষমতা পান তবে অনেক সমস্যাই দক্ষতার সঙ্গে তারা মোকাবেলা করতে পারবেন। বিশেষত পূর্বোত্তরের বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার সমাধান হতে পারে মহিলাদের হাত ধরে।এখানে প্রাসঙ্গিক ভাবেই মণিপুরের কথা উল্লেখ করা যায়।অতীতে আমরা দেখেছি নানা ইস্যুতে মণিপুরে মহিলারা এগিয়ে এসেছেন।তারা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে পথে নেমেছেন। সেই মণিপুরেও পুরুষদের তুলনায় মহিলা ভোটারের সংখ্যা বেশি হলেও তুলনায় বিধানসভায় প্রতিনিধিত্ব অনেক কম।গত বছর মণিপুর বিধানসভার নির্বাচনে মোট প্রার্থী ছিলেন ২৬৫ জন।এর মধ্যে মহিলা প্রার্থী ছিলেন ১৭জন। অবশ্য এর মধ্যে জয়লাভ করেছিলেন ৫ জন। মণিপুরের রাজনৈতিক ইতিহাসে অবশ্য এটি এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা।কোনো কোনো সমাজকর্মী বলছেন, সংসদ ও বিধানসভায় মহিলাদের জন্য যথোপযুক্ত আসন সংরক্ষণ না হলে এই অবস্থার অবসান হবেনা।নির্বাচনে তখনই মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা বাড়বে। প্রশ্ন হচ্ছে, ভোটার বেশি,ভোটদানেও এগিয়ে,এগিয়ে নানা ক্ষেত্রেই, কিন্তু তারপরও ক্ষমতার বৃত্ত থেকে তারা দূরে থাকবেন কেন!