এক নজরে

নতুন হিমশৈলের সন্ধান পাওয়ায় টাইটানিকের স্মৃতি

By admin

January 02, 2021

মৈনাক শর্মা

বিশ্বের বড়ো জাহাজ টাইটানিক এর গল্প মনে আছে সবারই। এমন এক জাহাজ, যা কখনো না ডোবার দাবিও করা হয় জাহাজ নির্মাতাদের দ্বারা। কিন্তু একটি বড় হিমশৈলের সাথে ধাক্কা লেগে ধ্বংস হয় সেই জাহাজ। মৃত্যু হয় কয়েক হাজার মানুষের। কিন্তু মাত্র ৮০ থেকে ১০০ জনেরই মৃত দেহের সন্ধান পাওয়া যায়। টাইটানিকের ঘটনার বহু বছর পরেও এমনই এক হিমশৈলর বিপদের সামনে এন্টার্কটিকা সাগর। এই হিমশৈলের নাম এ-৬৮। যা এন্টার্কটিকা সাগরের বড় হিমশীলা এ-৬৮ র খসে পড়া অন্য অংশ গুলির মধ্যে সব থেকে বড় অঙ্গ। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৫,৮০০ বর্গ কিলোমিটার।এই হিমশৈল মোটামুটি ডেলাওয়্যার রাজ্যের আকারের। যা ২০১৭ সাল থেকে আটলান্টিক মহাসাগরে দক্ষিণ জর্জিয়ার প্রত্যন্ত দ্বীপের দিকে প্রবাহমান। যা নিয়ে এখন দুশ্চিতার কারণ বিজ্ঞানীদের মধ্যে।

এন্টার্কটিকা সাগরের নাম অনুসারে সেই সাগরে বিরাজমান অন্যান্য হিমশিলা গুলির এলাকা অনুসারে এ-৬৮ শৈলসিলার নামকরন করে ইউএস ন্যাশনাল আইস সেন্টার। এই শৈলসিলার খসে পড়া অংশ জর্জিয়ার দ্বীপের কাছাকাছি অবস্থানকে কেন্দ্র করেই এ-৬৮ এ নিয়ে ভয়ের প্রধান কারণ।ব্রিটিশ আন্টার্কটিকে সার্ভের মতে, এটি সমুদ্রের বুকে বসবাসকারী স্থানীয় বন্যজীবনে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে।তাছাড়া আইসবার্গ যদি দ্বীপের কাছে আটকে যায় তাহলে পেংগুইনস এবং সিলগুলিকে খাবারের সন্ধানে আরও বেশি ভ্রমণ করতে হবে এবং খাবারের যোগান না থাকলে তাদের সন্তানদের অনাহারে মারা যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারবে না।

এই হিমশীলা খসেপড়ার কারণ কি ?বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবী তে বাড়তে থাকা উষ্ণতার জন্যই গলছে বরফের পিন্ডগুলি। আর তারই ফল এ-৬৮ এr উত্থান। কিছু বিজ্ঞানীদের মতে, ভবিষতেও উষ্ণতা বৃদ্দির কারণেই এইরূপ ঘটনার আবারো পুনরাবৃত্তি ঘটবে।

পৃথিবীর সর্বত্রই পর্বত থেকে বরফ গলছে। বিখ্যাত পর্বত কিলিমঞ্জারোর বরফ ৮০ শতাংশ গলেছে। যা ১৯১২ সালের তুলনায় অনেক বেশি। ভারতের গাড়ওয়াল হিমালয় অঞ্চলে হিমবাহ এত দ্রুত গলছে, যা গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে বেশিরভাগ মধ্য ও পূর্ব হিমালয়ের হিমবাহটি কার্যত নিখোঁজ হতে পারে ২০৩৫ সালের মধ্যে। এই সব কিছুর দিকে তাকিয়েই বিশ্বের বেশিরবাগ দেশই প্যারিশ জলবায়ু পরিবর্তনে সাক্ষর করে যা শুনতে ভালো লাগলেও কার্যত বাস্তবতায় পরিবর্তন হয়নি। বিশুদ্ধ জল, বাতাস ও স্বাস্থকর পরিবেশ- আমাদের নাগরিক অধিকার। যা সরকারের কাছে দাবির মাধ্যমে আদায়ে সরব হতে হবে। পরিবেশকে ক্ষতি না করে উন্নয়নের পথে এগোতে হবে।