কলকাতা ব্যুরো : কি বলবো জানি না। কলকাতার কড়চা না বলে দুর্গাপুজোর কড়চা বলাই ভালো। আশা, আকাঙ্ক্ষা, ভয় , ভাবনা সব মিলে মিশে একাকার এবারের পুজোয়। ১৭ সেপ্টেম্বর মহালয়া গেছে। ২২ শে অক্টোবর ষষ্ঠী। ইতিমধ্যে গতকাল হয়ে গেলো চক্ষুদান। চেতলা অগ্রনী ক্লাবের পুজোয়। সৌজন্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নিজ হাতে এঁকে দিয়ে গেলেন মায়ের তৃতীয় নয়ন। একদিকে দক্ষিণের দেখাদেখি ১৫ অক্টোবর তাদের পূজো উদ্বোধন ঘোষণা করে দিয়েছে উত্তরের শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী এসে উদ্বোধন করবেন। উত্তর আর দক্ষিণ কলকাতায় ১৫ তারিখের মধ্যেই পূজো শুরুর ঘণ্টা পড়ে যাবে। ১৬ তারিখ অমাবস্যা পড়ছে। হিসাব মত ১৭ অক্টোবর প্রথমা। মুখ্যমন্ত্রী গতকাল নজরুল মঞ্চের এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন তৃতীয়া থেকে কলকাতায় সব মণ্ডপ দর্শনার্থীদের জন্য যেনো খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে যা দাঁড়াচ্ছে প্রথমার আগে থেকেই খুলে যাচ্ছে দূর্গা মণ্ডপ দর্শনার্থীদের জন্য। এবার অবশ্য সশরীরে নয়, ১৫ থেকে ১৭ অক্টোবরের মধ্যে নবান্ন থেকে ভার্চুয়ালেই পুজো উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে এসব দেখে শুনে বিজেপি মোদীকে দিয়ে ষষ্ঠীর দিন মন কি বাতের মত পূজা কি বাতে বলে এক অনুষ্ঠান করতে চলেছে। তাতে শোনা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী দূর্গা পূজো সম্পর্কে বক্তব্য রাখবেন। এমন আশা , নিরাশা, ভয়, ভাবনা আর পূজো ঘিরে রাজনীতি বাঙালি আগে দেখেছে কি না জানা নেই। সব পূজা কমিটিকে ৫০,০০০ টাকা করে দেওয়া হয়ে গেছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই। সবসুদ্ধ হিসাব করলে তা ১৮৩ কোটিতে গিয়ে দাঁড়ায়। সেটা শুনেই কিছু নেটিজেনরা চমকে উঠেছেন। ফেসবুকে মন্তব্যে ছড়াছড়ি। অনেকেই বলছেন মানুষের যখন ক্ষুধার জ্বালায় পেটে টান তখন এত টাকা উৎসবে কেন?
এদিকে ডাক্তাররা আর নার্সরা তটস্থ হয়ে আছেন। পুজোর পর কি হারে করোনা বাড়বে তাই নিয়ে। অনেককে আবার বলতে শোনা যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশে পূজো বন্ধ। দিল্লিতেও নামমাত্র। তবে পশ্চিমবঙ্গে কেনো ? সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পূজো ঘিরে যে জমজমাট রাজনীতি শুরু হয়েছে তা বলা বাহুল্য। সামনে দুটো ভোট। প্রথম পুরভোট আর পরের বছর বিধানসভা। পূজো মঞ্চ তাই এবার রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মতো করে ব্যবহারের চেষ্টা করছেন। পুজোয় অ্যাডভান্টেজ থাকলে ভোটের মাঠেও খানিকটা ফসল তুলে নেওয়া যাবে। আর এসবের মাঝে পরে সাধারণ মানুষের ওষ্ঠাগত প্রাণ। পুজোয় ঠাকুর দেখতে বাইরে বেরোনো কতখানি নিরাপদ সেই নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা। শেষ পর্যন্ত ২০২০ র পূজো কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেটা দেখার।