এক নজরে

প্রেম দিবসে জন্মেও প্রেমে ব্যর্থ

By admin

February 14, 2023

ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে সেরা সুন্দরী হিসেবে তাকে এক বাক্যে মেনে নেয় সবাই। শুধু অসামান্য রূপই নয়, অভিনয় প্রতিভার জোরে পঞ্চাশের দশকে নার্গিস, মীনা কুমারীদের ছাপিয়ে হিন্দি সিনেমায় নিজের সুদৃঢ় অবস্থান তৈরি করে নিয়েছিলেন তিনি। ১৯৪৮- ১৯৬০ সাল পর্যন্ত স্বল্প সময়ের ক্যারিয়ারে তিনি যশ ও খ্যাতির শীর্ষেআরোহণ করেন। কিন্তু এড়াতে পারেননি নিষ্ঠুর নিয়তিকে। সেই দরবেশের কথাই সত্য হয়েছিল যিনি খুব ছোটবেলায় তাঁকে দেখে বলেছিলেন “এ মেয়ে অনেক খ্যাতি লাভ করবে, কিন্তু সুখী হতে পারবে না”

‘তারানা’ ছবিতে দিলীপ কুমারের সঙ্গে অভিনয়ের সময় তাঁরা প্রেমে পড়েন। শুটিং চলাকালীন একদিন মধুবালা তার হেয়ার ড্রেসারকে একটি লাল গোলাপ ও উর্দুতে লেখা চিরকুটসহ দিলীপ কুমারের কাছে পাঠান এবং তাকে ভালবাসলে ফুলটি গ্রহণ করতে বলেন। দিলীপ কুমার মুগ্ধ হয়ে ফুলটি গ্রহণ করেন। অনিন্দ্য সুন্দরী মধুবালার প্রেমপ্রার্থীর সংখ্যা কম ছিল না। আর তিনি এটি বেশ উপভোগও করতেন। কিন্তু সত্যিকার ভাবে ভালবেসেছিলেন দিলীপ কুমারকেই। দিলীপ কুমারও ভালবেসেছিলেন মধুবালাকে।

কিন্তু বাঁধা হয়ে দাঁড়ান মধুবালার বাবা আতাউল্লা খান। তিনি তাঁদের বিয়েতে রাজিও ছিলেন। কিন্তু তিনি পুরো বিষয়টিকে দেখছিলেন ‘একটি বিজনেস ডিল’ হিসেবে। আতাউল্লা খান ততদিনে একটি প্রোডাকশন হাউসের মালিক। তার পরিকল্পনা ছিল দিলীপ কুমার ও মধুবালার বিয়ের পর তারা শুধুমাত্র তার প্রোডাকশনের সিনেমাতেই অভিনয় করবেন। কিন্তু আতাউল্লা খানের এ ধরনের অর্থলোভী আচরণ দিলীপ কুমারের পছন্দ হয়নি। তিনি সরাসরি জানিয়ে দেন সিনেমা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তিনি নিজস্ব মতের বাহিরে যাবেন না, এমনকি তাঁর নিজের প্রোডাকশন হাউস হলেও তিনি এ ধরণের সিদ্ধান্ত নিতেন না। ক্ষুব্ধ আতাউল্লা খান মধুবালার সঙ্গে দিলীপ কুমারের সম্পর্কের বিরোধিতা করতে শুরু করেন। পিতৃভক্ত মধুবালা পড়েন বিপাকে।

বিপাকে পড়েন প্রযোজক ও পরিচালক। শেষে মধুবালার পরিবর্তে বৈজয়ন্তীমালাকে অভিনয় করান এবং মধুবালার বাবার কাছে অগ্রিম টাকা ফেরত চান। কিন্তু তিনি তা দিতে অস্বীকার করায় বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আদালত অবধি গড়ায়। ওই মামলার সাক্ষ্য দেন দিলীপ কুমার। এতে মধুবালা ভীষণ রকম আঘাত পান। তিনি চেয়েছিলেন দিলীপ কুমার যাতে তার বাবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে। কিন্তু দিলীপ কুমার তা করেননি। কারণ তিনি অন্যায় কিছু করেননি, তবে ক্ষমা চাইবেন কেন?

দিলীপ কুমার মধুবালাকে বিয়ে করার জন্য দুটি শর্ত দিয়েছিলেন। প্রথমত, আতাউল্লাহ খানের অর্থলোভী এবং দাম্ভিক আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি তাকে পরিবার ছাড়তে বলেন। আর দ্বিতীয়ত, স্টুডিওর বদ্ধ পরিবেশে মধুবালা প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়তেন বলে অভিনয়ও ছাড়তে বলেন। কিন্তু মধুবালা তা মেনে নিতে পারেননি।

গভীর অভিমান বুকে চেপে তিনি সম্পর্ক ভেঙে দিয়েছিলেন দিলীপ কুমারের সঙ্গে। আর বলা হয়ে থাকে শুধুমাত্র প্রেমিকের ওপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্যই তিনি বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমারকে। প্রতিশোধ নেয়ার জন্য বিয়ে করলেও তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। কিশোর কুমারও বুঝতে পারতেন যে মধুবালা দিলীপ কুমারকেই ভালবাসেন।