কলকাতা

লোকাল ট্রেনে হকারি কি আর ফিরবে!

By admin

July 02, 2020

কলকাতা 361° ব্যুরো : এয় বাদাম, মিষ্টি বাদাম, ডালমুট, কাঠিভাজা, ঝুড়িভাজা, বাদাম, বাদাম…………..।এই চেনা শব্দগুলো কতদিন শোনেননি বলুন তো! মনে পড়ে অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে দত্তদার নারকেলের কুচি দেওয়া ঝালমুরি না খেলে সন্ধ্যেবেলা পেট ভরতো না। বা শ্যামলদার আলুঝুড়ি না নিয়ে গেলে ছেলে বাড়ি ঢুকতে দিতো না। গত তিনমাসে অভ্যাসগুলো অনেকটাই বদলে গেছে। স্মৃতিগুলো কিছুটা যেন ফেডআপ। লকডাউনে ট্রেন, অফিস, বন্ধ। তাই এই লোকগুলোর গলা আর সংক যায় না। লোকাল ট্রেন চালু হলেই আপনি অফিস যাওয়া শুরু করবেন। কিন্তু ট্রেনে কি আর দেখা যাবে দত্তদা বা শ্যামল দা কে। ব্যান্ডেল লোকালে ভাই দাসের কবিতা শুনে কেউ কি হাত বাড়িয়ে বই কিনবেন! বেশিরভাগেরই উত্তর জানা নেই। আর জানা নেই হাওড়া শিয়ালদা লাইনের লোকাল ট্রেনে হকারি করা মানুষগুলো রুজি রোজগারের ঠিকানা কোথায় হবে তা। সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে ট্রেন চললেও সেখানে আর কি উঠতে দেওয়া হবে হকারদের! যদিওবা তারা ওঠেন সাধারণ মানুষকি সংক্রমণের আশঙ্কা কে দূরে সরিয়ে তাদের হাতে বানানো ঝাল মুড়ি বা ঘটিগরম খাবেন!

এয় বাদাম, মিষ্টি বাদাম, ডালমুট, কাঠিভাজা, ঝুড়িভাজা, বাদাম, বাদাম…………..।এই চেনা শব্দগুলো কতদিন শোনেননি বলুন তো! মনে পড়ে অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে দত্তদার নারকেলের কুচি দেওয়া ঝালমুরি না খেলে সন্ধ্যেবেলা পেট ভরতো না।

না খাবেন না আর তাই লকডাউনেই পেশা বদলেছেন, হাওড়া-বর্ধমান মেন লাইনের ঝালমুড়ি বিক্রেতা অয়ন ঘোষ। প্রায় 15 বছর ধরে এই লাইনে হকারি করে দিনে নয় নয় করেও রোজগার তিনশো থেকে চারশো টাকা। আগে ইউনিয়নকে একটা অংশ দিতে হলেও এখন সেভাবে রেকগনাইজড ইউনিয়ন নেই। তাই সেই খরচও নেই। বলেন, ” মাসখানেক অপেক্ষা করেছিলাম যদি ট্রেন চলে। কিন্তু ট্রেনের চাকা ঘোরে নি। তাছাড়া ট্রেন চালু হলেও আগের মতো লোকে আর খাবেনা। তাই পেশা বদলেছি। এখন সবজি বিক্রি করি।” তবে পেশা বদলাননি ভাই দাস। আশায় আছেন ট্রেন চালুর। লোকাল ট্রেনে বই বিক্রি করেন। হাওড়া-ব্যান্ডেল লাইনে এক ডাকে সবাই চেনে। ভাই দাসের কবিতা। বাড়ি হুগলিতে। বলেন, “বাড়িতে বৃদ্ধা মা স্ত্রী এবং দশ বছরের মেয়ে। আপাতত চলছে ধারদেনা করে। আশায় আছি কবে ট্রেন চালু হবে তার!”

হাওড়া-শিয়ালদা লাইনে লোকাল ট্রেনে এমনই কয়েক হাজার অয়নদা, ভাই দাস রয়েছেন। ট্রেনের চাকা আটকে যেতেই যাদের রুজি রোজগারে ইতি পড়েছে। কেউ বদলেছেন সময়ের চাপে পড়ে পেশা। আবার কারও বা সংসার চলছে ধার দেনা করে। ট্রেন চালু হলেও আদৌ পুরনো পেশাকে আর তারা আঁকড়ে ধরতে পারবেন কি না জানেন না কেউ। জানেন না লোকাল ট্রেনে হকারী নামক পেশাটাই আর থাকব কিনা! চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, করোনা আবহে ট্রেন চালু হলেও বাইরের খাবার একদমই খাওয়া উচিত না। সেখানে ট্রেনে বসে ঝাল মুড়ি, ঘটি গরম তো নৈব নৈব চ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি