এক নজরে

LaGaneshan : গনেশনেও থামবে না সরকার বনাম রাজভবন সংঘাত

By admin

July 18, 2022

উল্লেখ্য, বাংলার রাজ্যপাল পদে কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেই জগদীপ ধনখড় ওই পদে আসীন হন। কেন্দ্রের বিজেপি তাঁকে বাংলার রাজ্যপাল করে পাঠিয়েছিলেন যাতে বাংলার অবিজেপি সরকারকে তিনি প্রতি মুহুর্তে ব্যতিব্যস্ত করে তুলতে পারেন। বলা বাহুল্য যে ধনখড় কেন্দ্রের সেই আশা সফল করতে সচেষ্ট ছিলেন। তিনি বিজেপির মুখপাত্র হিসাবে প্রায়শই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা সরকার ও শাসক দলকে নানা ভাবেই আক্রমণ শানিয়ে গিয়েছেন। রাজ্যের বিভিন্ন আমলা থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের হুমকি ধমকি দিয়েছেন। রাজ্য সরকারের বিল আটকেছেন, জবাবদিহি চেয়েছেন। আর প্রতিদিনই মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্য সরকারের কাজের সমালোচনা করে চালিয়েছেন টুইট বন্যা। তাঁর আমলে বাংলার রাজভবন কার্যত হয়ে দাঁড়িয়েছিল বিজেপির পার্টি অফিস। কিন্তু এতসব কর্মকাণ্ডের পরও ধনকড় একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে জেতাতে পারেননি। 

তবে একথাও ঠিক যে মমতা-ধনখড় এতসব দ্বন্দ্বের মধ্যেও তাঁরা সৌজন্যতা রক্ষা করতে মুখোমুখি হয়েছেন বহুবার। জগদীপ ধনখড়কে সস্ত্রীক দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পুজোয়। যাই হোক বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় আপাতত বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়ি টেনে উপরাষ্ট্রপতির দৌড়ে সামিল হয়েছেন। এখন প্রশ্ন কে এই লা গণেশন (LaGaneshan), কেন মোদি সরকার বাংলায় স্থায়ী রাজ্যপাল হিসাবে কাউকে নিয়োগ না করে মণিপুরের রাজ্যপালকে আপাতত বঙ্গের রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্ব দিল? এটা ঘটনা যে ধনখড় যে কাজ শুরু করেছিলেন সেই কাজ যাতে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তার জন্যই বিকল্প ভাবনা। কিন্তু সেই বিকল্প চট জলদিনা মেলায় আপাতত লা গণেশন-কেই বাংলার অস্থায়ী রাজ্যপাল হিসাবে মোদি সরকার নিয়োগ করেছে।

আপাতত বাংলার রাজ্যপালের দায়িত্ব যাঁকে দেওয়া হল সেই তামিলনাড়ুর ব্রাহ্মণ পরিবারে সন্তান লা গণেশন জীবন শুরু করেছিলেন আরএসএস সদস্য হয়ে। তামিলনাড়ু বিজেপির শীর্ষ নেতা ছিলেন। পরে রাজ্যপাল হন। তারপর ধাপে ধাপে উত্থান। সংঘ ঘনিষ্ঠ পরিবারের এই সদস্যটিকে অনেকেই বাড়ির ছেলে বলেও ডাকেন। গনেশন অবিবাহিত থেকে আরএসএস প্রচারক হিসেবে কাজ করতে শুরু করেনছিলেন। নিয়মানুসারে সংঘের প্রচারকরা বিয়ে করতে পারে না। গণেশনও এই নিয়ম মেনে বিয়ে করেননি। তবে সঙ্ঘের নির্দেশেই তিনি রাজনীতিতে আসেন। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সময়তাঁর হলফনামা থেকে জানাযায়, তিনি দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন।

গনেশন গত শতকের সত্তরের দশকের জরুরি অবস্থার সময় আরএসএসের (RSS) প্রচারক ছিলেন। এই পদে তিনি ছিলেন এক বছর। বিজেপি এরপর তাঁকে জাতীয় সম্পাদক করে। এরপর লা গণেশকে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করা হয়েছিল। এমনকি তামিলনাড়ু বিজেপির রাজ্য সভাপতিও করা হয়। ২০১৬সালেতিনি মধ্যপ্রদেশ থেকে বিজেপির হয়ে রাজ্যসভার সদস্য হন। নাজমা হেপতুল্লা তার স্থলাভিষিক্ত হন এরপর ২০২১ সালে তিনি মণিপুরের রাজ্যপাল হন। এবার তিনি পশ্চিমবঙ্গের অতিরিক্ত দায়িত্ব পেলেন। বিগত তিন বছর ধরে বাংলার রাজ্যপাল বনাম শাসকদলের বাগ্‌যুদ্ধে সরগরম ছিল রাজনীতির ময়দান।তবে এটা লক্ষ্য করা গিয়েছে, এরাজ্যের রাজ্যপালদের নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা সব দলেরই অভিযোগ, রাজ্যপাল হলেন কেন্দ্রীয় সরকারের এজেন্ট। তাঁদের একমাত্র কাজ হলো, সেই দলের বা কেন্দ্রীয় সরকারের মর্জিমতো চলা।