কলকাতা ব্যুরো: ওমিক্রণের চোখরাঙানিকে মাথায় রেখে শহরের বেশির ভাগ অভিজাত ক্লাব বন্ধ রাখছে বর্ষবরণের উৎসব। ক্যালকাটা ক্লাব, ক্যালকাটা সুইমিং ক্লাব, বেঙ্গল ক্লাব, টলি ক্লাব-সহ বেশ কয়েকটি ক্লাব এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে কলকাতা পুলিশ। ৩১ ডিসেম্বর, ১ জানুয়ারি কলকাতায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। শহরজুড়ে নাকা চেকিং, ওয়াচ টাওয়ার, রিজার্ভ ফোর্সের ব্যবস্থা থাকছে। মেট্রো স্টেশন, বাস স্ট্যান্ডে থাকবে কড়া নজরদারি। গঙ্গাবক্ষে নজরদারিতে থাকবে রিভার পেট্রলিং টিম। পাশাপাশি হোটেল, পানশালা, নাইট ক্লাবে পুলিশ পিকেটিং বসানো হচ্ছে।
রাজ্যে ক্রমশ বাড়ছে ওমিক্রন আক্রান্ত। শঙ্কিত চিকিৎসকরা। বড়দিনেও যা ছিল মাত্র ৫৫২। নতুন বছরের শুরুতেই তা ছাড়িয়ে যেতে পারে হাজারের গণ্ডি। বাংলায় দুর্বার গতিতে ছুটছে করোনা সংক্রমণ। এমন একটা সময় সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী, আর উৎসবের মেজাজে গোটা বাংলা। বড়দিন পেরিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, আর হুড়োহুড়ি নয়। বড়দিনে পার্ক স্ট্রিটের যে ছবি সামনে এসেছে তা মর্মান্তিক। বর্ষশেষের রাতে সমস্ত পার্টি, সেলিব্রেশন মুলতুবি রাখার আবেদন জানাচ্ছেন তাঁরা। এখনও অনেকেই গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ভাবছেন, বাড়ুক না আক্রান্তের সংখ্যা। মৃত্যু তো হবে না। আমজনতার এমন চিন্তাতেই আশঙ্কার কালো মেঘ দেখছেন চিকিৎসকরা।
৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারিতে শহরে পুলিশি নিরাপত্তা এক নজরে
তবে বর্ষবরণ পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। কোভিড পরিস্থিতিতে নতুন বছর উদযাপন কীভাবে হবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আশ্চর্য! নতুন বছরকে আমি কী করে আটকাব? আপনার কাগজের কী উৎসব, আপনার টিভির কী উৎসব! সবসময় নেগেটিভ খেলেন কেন? মুখ্যমন্ত্রীর আরও সংযোজন, আপনারা কী ভাবেন না? কিছু হলে তো বড় বড় করে নিউজ দেখাতে শুরু করবেন, কিন্তু সেটাকে কন্ট্রোল করতে হয় আমাদের। প্লিজ দয়া করে উত্তেজনা ছড়াবেন না। আপনাদের কাছে আমার হাতজোড় করে অনুরোধ। আপনারা দুটো কোভিডে সহযোগিতা করেছেন, আমি মিডিয়ার কাছ থেকে সহযোগিতা পজিটিভ চাইছি।
তবে বুধবারই গঙ্গাসাগরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত দেন ফের সংক্রমণ মাথাচাড়া দিলে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। এমনকী বেসরকারি অফিসে প্রয়োজনে ফের ৫০ শতাংশ উপস্থিতি চালু করতে হবে। এ বিষয়ে একমত চিকিৎসকরা। তাঁদের বক্তব্য, ভিড় এড়িয়ে চলুন। মানতে হবে শারীরিক দূরত্ব। নয়তো আগামীতে মারাত্মক বিপদ।