এক নজরে

#IPL2022: কামিন্স ম্যাজিকে মুম্বই বধ কেকেআরের

By admin

April 07, 2022

কলকাতা ব্যুরো: এলেন, দেখলেন এবং জয়ও করলেন। তিনি প্যাট কামিন্স। অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের অধিনায়ক। যার আসল কাজ উইকেট নেওয়া। সেই প্যাট কামিন্স অসাধ্য সাধন করলেন। প্রবল চাপের মধ্যে থেকে নাইটদের শুধু সহজ জয়ই এনে দিলেন না, সেই সঙ্গে গড়ে ফেললেন অনবদ্য রেকর্ডও। ৪ ওভার বাকি থাকতেই কেকেআর জিতল ৫ উইকেটে। বুধবার টসে জিতে প্রত্যাশিতভাবেই প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন নাইট অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার এবং আগের ম্যাচগুলির মতোই দ্রুত কেকেআরকে প্রথম উইকেট তুলে দেন উমেশ যাদব। ১২ বলে মাত্র ৩ রান করে আউট হন রোহিত। শুরুর দিকে রান রেটও বাড়াতে পারেনি মুম্বই। এদিন বল হাতে নজর কাড়েন তরুণ রাসিক সালেমও। যার ফলে প্রথম ১০ ওভারেও ৬০ রানের গণ্ডি পেরোতে পারেনি মুম্বই। একটা সময় মনে হচ্ছিল মুম্বই ১৪০ পেরোবে না মুম্বই। তবে, শেষদিকে ডেথ বোলারের অভাব ভোগালো কেকেআরকে। শেষ কয়েক ওভারে দ্রুত রান তুলে মুম্বই পৌঁছে যায় ৪ উইকেটে ১৬১ রানে।

নাইট দলে এদিন দুটো পরিবর্তন হয়। টিম সাউদির জায়গায় খেলেন প্যাট কামিন্স। শিবম মাভির জায়গায় দলে আসেন রাশিখ সালাম। উইকেটে শুরু থেকেই পেস আর বাউন্স পাচ্ছিলেন বোলাররা। আর সেটাকেই কাজে লাগান উমেশ যাদব, প্যাট কামিন্সরা। তবে নবাগত ডিওয়াল্ট ব্রেভিস এদিন ক্রিজে ব্যাট করতে নেমেই প্রথম বলেই বাউন্ডারি মারে। ‘বেবি এবি’ বুঝিয়ে দেন তিনিও আইপিএলে রাজত্ব করতে এসেছেন। তিনি হতে পারেন ভবিষ্যতের তারকাও। ১৯ বলে ২৯ রানের ঝোড়ো ব্যাটিং করেন ব্রেভিস। বরুণ চক্রবর্তীর বলে স্টাম্প আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ব্রেভিস। এর কিছু পরেই প্যাট কামিন্সের বলে শ্রেয়স আইয়ারের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ঈশান কিশান। এ দিন ১৪ রানে আউট হন ঈশান। ৫৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে একটা সময় চাপে পড়ে যায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। কিন্তু সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন সূর্যকুমার যাদব আর তিলক বর্মা।

তিলক এবারের আইপিএলের আবিষ্কার। আর সূর্যকুমার এ বারের আইপিএলে প্রথম মাঠে নেমেই হাফসেঞ্চুরি করলেন। চতুর্থ উইকেটের জুটিতে ওঠে ৮৩ রান। তবে তিলক বর্মার ক্যাচ রাহানে না ফেললে মুম্বইয়ের স্কোরও ১৫০ পার করত কিনা সন্দেহ। ৫২ রানে আউট হন সূর্যকুমার। ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন তিলক। তবে শেষ ওভারে ক্রিজে এসেই ঝড় তোলেন কায়রন পোলার্ড। গত ম্যাচে স্লো ব্যাটিংয়ের ফলে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। প্যাট কামিন্সের শেষ ওভারে ৫ বলে ২২ রানের ঝোড়ো ইনিংস আসে পোলার্ডের ব্যাট থাকে। তার সুবাদেই ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬১ রান তোলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি কেকেআরেরও। প্রথম চার ওভারে মাত্র ১৬ রান তোলে নাইটরা। প্যাভিলিয়নে ফিরে যান রাহানে। টিমাল মিলসের বলে ৭ রানে আউট হন নাইট ওপেনার। এরপর আউট হন নাইট অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। কেকেআর ক্যাপ্টেনকে এখনও আইপিএলে সে ভাবে ছন্দে পাওয়া গেল না। ড্যানিয়েল স্যামসের বলে ১০ রানে আউট হন শ্রেয়স। শুরুতেই জোড়া উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় কেকেআর। ব্যক্তিগত ১৭ রানে আউট হন স্যাম বিলিংস। মুরুগ্গান অশ্বিনের বলে আউট হন বিলিংস। নীতীশ রানাকে ৮ রানে ফিরিয়ে ফের ঝটকা দেন অশ্বিন। আগের ম্যাচও মতো এ দিনও ক্রিজে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী মেজাজে দেখা যায় আন্দ্রে রাসেলকে। কিন্তু একটা ছয় আর একটা চারেই তাঁর ইনিংস শেষ। মিলসের বলে ১১ রানে আউট রাসেল। 

তবে নাইটদের কাজটা সহজ করে দেন প্যাট কামিন্স। ব্যাট হাতে মোক্ষম জবাব প্যাট কামিন্সের। ক্রিজে নেমেই ব্যাটে ঝড় তুললেন অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার। বিধ্বংসী কামিন্সেই উড়ে যায় মুম্বই। ১৪ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন কামিন্স। তাঁর ১৪ বলে অর্ধশতরান করে আইপিএলের ইতিহাসের যুগ্ম দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ডও গড়লেন তিনি। আইপিএলের ইতিহাসে লোকেশ রাহুলের সঙ্গে এক আসনে বসলেন নাইট ক্রিকেটার। যার সুবাদে ৪ ওভার বাকি থাকতে ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতলো নাইটরা।

বুধবার জয়ের ফলে ৪ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ফের লিগ টেবিলের শীর্ষে চলে গেলো কেকেআর। শুধু তাই নয়, বড় জয়ের সুবাদে নেট রান রেটেও অনেকটা এগিয়ে গেলো নাইটরা। তাছাড়া যেভাবে কামিন্স এদিন খেললেন, তাতে বেশ স্বস্তি পাবে কেকেআর শিবির। স্বস্তি পাবে ভেঙ্কটেশ আইয়ারকে রানে ফিরতে দেখেও।

এদিনের জয়ের পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন কেকেআরের অন্যতম কর্ণধার শাহরুখ খানও।