এক নজরে

#KashmirFilesTruth : কাশ্মীর এবং সমস্যা

By admin

March 26, 2022

এই লেখায় আলোচনা করবো কাশ্মীর কিভাবে সমস্যায় পরিনত হল ।কারন বর্তমানে যে শব্দ কাশ্মীরের সাথে যুক্ত তা হল সমস্যা । সমস্যার বীজ লুকিয়ে ১৯৪৭ এর স্বাধীনতার এবং তারপর ঘটা ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে । ভারত স্বাধীনতা পেয়েছে দেশভাগের দগদগে ঘা কে সাথে নিয়ে । পাকিস্তান নুতন মুসলিম রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে উঠল । স্বাধীনতার সাথে ভারতের কাছে অন্যান সমস্যাগুলির মধ্যে প্রথম সমস্যা ছিল দেশীয় রাজ্যগুলির ভারত ভুক্তি নিয়ে এবং একটি প্রজাতন্ত্র গড়ে তোলা নিয়ে । এই কাজে দেশীয় রাজ্য হিসাবে কাশ্মীর কোথায় যোগ দেবে পাকিস্তানে না ভারতে তা নিয়ে সেই সময়ে ভারতের খুব একটা মাথা ব্যাথা ছিল না । স্বাধীনতার দুমাসের মধ্যেই কাশ্মীর ভূখন্ডে পাকিস্তানি হানাদারি শুরু হয়। এই ঘটনায় ভয় পেয়ে কাশ্মীরের হিন্দুরাজার অনুরোধে ভারত থেকে সৈন্য প্রেরণে সম্মত হন প্রধানমন্ত্রী নেহেরু । ভারতীয় সৈন্যদের প্রবেশ বৈধ করতে মহারাজাই কাশ্মীরের ভারত ভুক্তি সংক্রান্ত চুক্তিতে সাক্ষর করেন । এই হল সমস্যা শুরুর প্রথম ধাপ । সমস্যার দ্বিতীয় ধাপ যখন কাশ্মীর থেকে পাকিস্তানি সৈন্য বিতাড়ন প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে এসেছিল তখন হঠাৎ নেহেরুর নির্দেশে কাশ্মীরে পাকিস্তানি আক্রমন বিষয়টি সম্মিলিত জাতিপুঞ্জে উথাপিত হয় এবং সেখানে স্থির হয় সমগ্র কাশ্মীর ভূখন্ড বিদেশী সেনামুক্ত হলেই সেখানে একটি গনভোটের মাধ্যমে ঐ রাজ্যের ভবিষ্যত ঠিক হবে । কাশ্মীরর বৈধ ভারত ভুক্তির পরেও এমন একটি সিন্ধান্তে রাজি হওয়ার কোনোই দরকার ছিল না । কিন্তু পশ্চিমী শক্তিগুলির মদতে পাকিস্তান কাশ্মীর দখলকৃত অংশে কায়েম রইল বরং গনভোট দিয়ে কাশ্মীরকে পাকিস্তানের দিকে টেনে আনার একটা চেষ্টা চালাতে লাগল নানা ভাবে তার মধ্যে সন্ত্রাসবাদ অন্যতম অস্ত্র । এর মধ্যে খেয়াল রাখতে হবে কাশ্মীরের বেশিরভাগ পপুলেশন মুসলিম ।জাতিপুঞ্জে কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলে ধরে সেই সময় থেকে তাকে একটা আন্তর্জাতিক সমস্যায় পরিণত হতে হয়েছে।

১৯৪৭ এর অক্টোবরে যে ‘সংযুক্তি সাধনপত্র’-এ সই হয়েছিল তাতে জম্বু -কাশ্মীরকে ভারতীয় ইউনিয়ানের বিশে মর্যাদা দেওয়া হয় সংবিধানের ৩৭০ ধারাই । প্রতিরক্ষা ,বৈদেশিক ,যোগাযোগ কেবল এই কটি ক্ষেত্রে ভারতের অধিকার দেওয়া হয় বাকি কাশ্মীর নিজস্ব সংবিধান নিজস্ব পতকা সবই রাখতে পারত এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবেও অ্যাডরেস করা হত । বর্তমানে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়া হয়েছে সেখান থেকে।

৫০এর দশক থেকে কাশ্মীর সাক্ষী থেকেছে সেখানকার রাজনৈতিক নেতাদের পলিটিক্সের । শেখ আবদুল্লার মুখ্যমন্ত্রীর শুরুর দিকে কাশ্মীর ভারতের চিন্তাধারার মতানুসারে স্থিতিশীল ছিল ।কিন্তু ১৯৫৩ সাল নাগাদ শেখ অাবদুল্লা প্রকাশ্যে কাশ্মীরের স্বাধীনতা দাবি করেন । এরপর আবদুল্লাকে বরখাস্ত করা হয় তার জাগায়ই প্রধানমন্ত্রী হলেন বকশি গুলসম মহম্মদ ।

১৯৮২ র পর থেকে বেশিরভাগ সময় শাসন করেছেন ফারুক আবদুল্লা না হয় সেখানে রাষ্ট্রপতির শাসন জাড়ি থেকেছে; জুন ১৯৮৩ র মধ্যবর্তী নির্বাচনে ফারুক বেশ ভালোভাবে জেতেন ।তার সাথে কেন্দ্রীয় সরকারে বিবাদ বেধে গেল অচিরেই । ১৯৮৪তে ফারুকের ভগ্নীপতি জি এম শা এক আন্দোলন ঘটিয়ে ন্যাশানাল ফ্রন্টে ভাঙন আনেন । জি এম শা কাশ্মীরি পন্ডিতদের ওপর সাম্প্রদায়িক আক্রমণ ঠেকাতে ব্যার্থ হলেন ।১৯৮৬ সালে কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করা হয়। এরপরের বছর বিধানসভা নির্বাচনের জন্যে রাজীব গাধী ফারুক আবদুল্লার সাথে জোট বাধেন এবং জয়লাভ ও করেন । কিন্তু তার শাসনব্যবস্থা কাশ্মীরকে সুশৃঙ্খল করতে পারল না । সেখানে অচিরেই দেখা দিল বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ; হিজিবুল মুজাহিদিন ও অন্যান মৌলবাদী গোষ্ঠী সহিংস আন্দোলন শুরু করল ।এই সব গোষ্ঠী গুলি অর্থ ,প্রশিক্ষণ ,অস্ত্র সব দিক থেকে সাহায্য পেতে থাকল পাকিস্তানের কাছ থেকে ।তারা কাশ্মীরি পন্ডিতেরদেও ওপর আক্রমণ করতে লাগল ।পন্ডিতরা ঘর ছাড়া হল যার কিছুটা কাশ্মীর ফাইলে দেখা যাবে ।স্বাধীনতার সময়ের সেই দুটো ধাপের কার্যকলাপ যা প্রথমেই বলছি সেই থেকে কাশ্মীরের স্থিতিশীলতার অভাবটা চীরস্থায়ী হয়ে গেছে ।