এক নজরে

“প্রভাবশালী তত্ত্ব”-ই কাল, ১৪ দিন জেল হেফাজত অনুব্রত মণ্ডলের

By admin

August 24, 2022

কলকাতা ব্যুরো: ধোপে টিকল না অসুস্থতার যুক্তি। গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বীরভূমের জেলে সভাপতিকে। বুধবার মূলত ‘প্রভাবশালী তত্ত্বে’ জামিনের বিরোধিতা করেছিল সিবিআই। পাশাপাশি, অনুব্রতর সম্পত্তির পরিমাণের কথাও জানানো হয়েছে আদালতে। জানা গিয়েছে, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর আদালতে তোলা হবে অনুব্রতকে।

এদিন অনুব্রত মণ্ডলের অসুস্থতার কথা জানিয়ে জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন তাঁর আইনজীবী। উল্লেখ্য, চারদিনের সিবিআই হেফাজত শেষে বুধবার ফের আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। এদিন অনুব্রতর আইনজীবী বিচারককে বলেন, অনুব্রত মণ্ডল শারীরিকভাবে অসুস্থ তাঁকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করানোর সুযোগ দেওয়া হোক। অনুব্রতর যেকোনও মুহূর্তে অক্সিজেন প্রয়োজন হতে পারে। জামিন পাওয়ার পর প্রয়োজনে তিনি বীরভূমে যাবেন না। নিজাম প্যালেসের আশেপাশে কোনও বাড়িতে থাকবেন।

পাশাপাশি এদিন বিচারকের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি চান অনুব্রত। হাতজোড় করে তিনি বলেন, হুমকি চিঠি কে দিল, সিবিআই তার তদন্ত করুক। বিচারক বলেন, এই মামলার সঙ্গে হুমকির কোনও সম্পর্ক নেই। তাই কেউ এ বিষয়ে কথা বলবেন না। তবে প্রভাবশালী তত্ত্বে আরও একবার সিবিআইয়ের আইনজীবী অনুব্রতর জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেন। তাঁর ১৪ দিনের জেল হেফাজতের আবেদন জানায় সিবিআই। এদিন জেলে গিয়ে অনুব্রতকে জেরা করার অনুমতিও চায় সিবিআই।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী বলেন, গরু পাচার মামলার তদন্তে অনেকের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। অনুব্রতর নাম বারবার উঠে এসেছে। তাঁকে ছেড়ে দিলে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে। এদিন অনুব্রতর আইনজীবী বিচারককে জানান, আমার মক্কেল গরু পাচারে কোনওভাবে জড়িত নন। পশুহাট থেকে গরু কিনে সীমান্তে গরু পাচার করা হলে আমার মক্কেলের কী দোষ? সীমান্তে গরুপাচার হলে তার দায় বিএসএফের। দায়িত্ব এড়াতে পারে না বিএসএফ। এখনও পর্যন্ত শুধু একজন বিএসএফ কম্যান্ডান্ট গ্রেপ্তার হয়েছে। আর কেউ নয়। আমার মক্কেলকে টার্গেট করা হচ্ছে।

অনুব্রতর আইনজীবী আরও বলেন, উনি ওয়েল নোন পার্সন। মুখ্যমন্ত্রীও চেনেন। এটাই কি আমার মক্কেলের দোষ? আমার মক্কেলের নাম এফআইআরে নেই। নাম রয়েছে এনামুল হক ও সায়গল হোসেনের। সায়গল তাঁর দেহরক্ষী। সায়গলের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি পাওয়া গিয়েছে। তাঁর নামে কোনও বেনামি সম্পত্তি পেলে আয়কর দপ্তরকে পেনাল্টি দিয়ে দেবেন।

পালটা সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, অনুব্রতর নামে আমরা প্রচুর সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছি। শুধু নিজের নয়, আত্মীয়ের নামে সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তদন্তে এতটুকু সাহায্য করছেন না অনুব্রত। উনি প্রভাবশালী। এটা কোনও টার্গেটেড ইনভেস্টিগেশন নয়। একটাও প্রমাণ দিতে পারবেন যে এটা রাজনৈতিকভাবে করা হচ্ছে? গরু পাচার কোনও ছোটখাটো অপরাধ নয়। এটা একটা চেন বিজনেস। এর পিছনে অনেক ষড়যন্ত্রকারী রয়েছে। ঘণ্টাখানেক সওয়াল জবাব শেষে কিছুক্ষণ রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক। পরে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।