আবহাওয়া

Weather Update: প্রবল বৃষ্টি আরও দুদিন পাহাড়ে

By admin

October 20, 2021

কলকাতা ব্যুরো: একটানা বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও ঘোরানো হচ্ছে উত্তরবঙ্গে। বুধবার থেকে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ারে বৃষ্টি আরো প্রবল হবে বলে মঙ্গলবার বিকেলে সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। ইতিমধ্যেই তিস্তা ব্যারেজ থেকে প্রায় চার হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। এর ফলে তিস্তার জলোচ্ছ্বাসে ভাসছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। ফলে দার্জিলিং, কালিম্পং এর পাশাপাশি সিকিমের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী দু’দিন বৃষ্টি আরো প্রবল হবে। ফলে পর্যটকদের সতর্ক করা হয়েছে যে যেখানে আছেন, সেখান থেকে না বেরোতে। এদিন এমনিতেই টানা বৃষ্টিতে দুপুরে পাহাড়ের বেশ কয়েকটি জায়গায় ধ্বস নামে। ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকেলের পরে কিছু জায়গা থেকে পর্যটকদের উদ্ধার করা গেলেও, বৃষ্টির দাপটে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠেছে।

পাশাপাশি তিস্তার জল বিপদসীমার ওপরে চলে যাওয়ায় নজিরবিহীনভাবে প্রায় চার হাজার কিউসেক জল ছাড়ায় প্রবল ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে জলপাইগুড়ি জেলা। জলপাইগুড়ি সদর ব্লক এবং ময়নাগুড়ি ব্লক থেকে এদিন সন্ধ্যের পর থেকেই লোকজনকে নদী তীরবর্তী এলাকা ছেড়ে অন্যত্র সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় আবাসিকরা বলছেন, হাজার ১৯৬৮ সালে একইভাবে তিস্তার জল বিশাল পরিমাণে ছাড়ায় জলপাইগুড়ি শহর জলের তলায় চলে গিয়েছিলো। এবারেও যে পরিমান জল ছাড়া হয়েছে, তা সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এই অবস্থায় জল যত নামবে নিচের দিকে ততই সঙ্কট বাড়বে জলপাইগুড়ি শহরেরও।এদিন দুপুরের পর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ায় রঙ্গীত ও তিস্তা বাজারের মধ্যে ২৯ মাইল এলাকায় জাতীয় সড়ক ডুবে যায়। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আর এর ফলে কালিংপং থেকে গ্যাংটক যাওয়ার গাড়ি আটকে যায় মাঝপথেই। সিকিমের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ একরকম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বহু পর্যটক দার্জিলিং এবং কালিম্পং এর বিভিন্ন এলাকায় আটকে পড়েছেন। পর্যটন সংস্থা গুলি তাদের পর্যটকদের উদ্ধারের জন্য বারবার তাগাদা দিলেও মঙ্গলবার রাতে খোলা আকাশের নিচেই বয়স্ক এবং বাচ্চাদের নিয়ে কয়েক হাজার পর্যটক রাস্তাতে বৃষ্টির মধ্যে রাত কাটাতে বাধ্য হন।

বেশকিছু পর্যটন সংস্থা শুকনো খাবার কোন ভাবে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন পর্যটকদের। তাদের নিয়ে যাওয়া গাড়িগুলিকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে আনার ক্ষেত্রে একটানা বৃষ্টি বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। পর্যটকদের অনেকের আবার মোবাইলে চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ায়, যোগাযোগ করে উঠতে পারেননি। আবার যারা মাঝপথে কোন পাহাড়ি গ্রামে আশ্রয় পেয়েছেন তারা সেখান থেকে শহরে যোগাযোগ করে, তাদের উদ্ধারের আবেদন করেন। এই ভাবেই জোড়থাং এ জাতীয় সড়কে আটকে পড়ে প্রায় শ’দেড়েক গাড়ি। যার অধিকাংশই পর্যটকদের নিয়ে যাচ্ছিল। পাশাপাশি মালপত্র বোঝাই গাড়িও ছিল। পুলিশ এবং স্থানীয়রা কিছু পর্যটককে সেখান থেকে উদ্ধার করলেও রাস্তা বন্ধ হয়ে থাকে রাত পর্যন্ত। ফলে প্রবল দুর্যোগের মধ্যে দূর্ভোগে পড়তে হয় পর্যটকদের।লাগাতার বৃষ্টিতে ২৯ মাইল, ভালুক খোলা, আলগারা, মিরিক, ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে ধস নামে। ফলে দার্জিলিং, কালিংপং এবং মিরিকের বিস্তীর্ণ এলাকায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে। আবহাওয়া দপ্তরের বিকেলের সতর্কতার পর একদিকে পাহাড়, অন্যদিকে সমতলের জেলাগুলিতে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।