জানা-অজানা

#GoutamBuddha : পৃথিবীর প্রথম হিলিং মেনটর বোধহয় গৌতম বুদ্ধই ছিলেন

By admin

May 15, 2022

বিভিন্ন বৌদ্ধশাস্ত্র ও বৌদ্ধসাহিত্য থেকে বুদ্ধের জীবনী জানা যায় । নেপালের কপিলাবস্তে শাক্য বংশে বুদ্ধের জন্ম ;তার জন্মে সকলের আশা পূর্ণ হয়েছিল তাই তার নাম হয় সিদ্ধার্থ সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব ৫৬৩-তে সিদ্ধার্থ জন্মগ্রহণ করেছিলেন তাঁর পিতা ছিলেন শাক্য গোষ্ঠীর নেতা শুদ্ধোদন মা ছিলেন মায়াদেবী; শাক্য বংশে জন্মের কারনে সিদ্ধার্থের অপর নাম শাক্যসিংহ । জন্ম কিছুদিনের মধ্যেই তার মা মারা যান তখন মাসি গৌতমীর দ্বারা তিনি পালিত হন তাই তার আর এক না গৌতম ।উচ্চা ক্ষত্রিয় বংশে জন্মগ্রহন করেলেও সিদ্ধার্থের মন জরা-ব্যাধি-মৃত্যুর অবশ্যম্ভাবিতা ও তার দ্বারা উৎপন্ন দুঃখে আচ্ছন্ন থাকত। সিদ্ধার্থের মন সংসারে ফেরানোর জন্যে পিতা তার বিয়ে দেন কিন্তু তাতেও সিদ্ধার্থের মন সেই অবশ্যম্ভাবী ধ্রুব দুঃখ মাধ্যমে আচ্ছন্ন থাকত ।অবশেষে পুত্র রাহুলের জন্মের দিন তিনি গৃহত্যাগী হয়ে কঠোর সাধনা দ্বারাা নির্বাণ লাভের পথ অনুসন্ধানে ব্রতী হন । সিদ্ধার্থের প্রথম গুরু ছিলেন আঢ়ার কালাম ও উদ্রক রামপুত্র।এই দুইজনের কাছে সিদ্ধার্থ আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভের চেষ্টা করেন কিন্তু তাদের সাথে মতবিরোধ হওয়াই তিনি কঠোর আত্মনিগ্রহের পথ অবলম্বন করেন ।শেষে বিভিন্ন পর্বে মাধ্যমে মধ্যপন্হা অবলম্বনের মাধ্যমে তিনি বুদ্ধত্ব লাভ করেন গৌতম হয়ে ওঠেন বুদ্ধ । কিন্তু এই বুদ্ধ কোন একজন ব্যক্তি ছিলেন না ; জৈনধর্মের মতোই এখানেও অনেক বুদ্ধ ছিলেন ।

বুদ্ধের ধর্মমতের কেন্দ্রে ছিল দুঃখবাদ ;এই দুঃখ তাকে বুদ্ধত্ব লাভে সাহায্য করেছিল তিনি কখনোই দুঃখ বিবর্জিত কোন ইউটোপিয়ান পৃথিবী বা পদ্ধতির কথা বলেন নি তিনি বার বার দুঃখের অবশ্যম্ভাবীতা কে স্বীকার করে অষ্টাঈিকমার্গের দ্বারা নির্বাণ লাভের কথা বলেছিলেন । গৌতম তার প্রচারিত ধর্মে আত্মার অবিনশ্বরতা অস্বীকার করেছেন তার মতে পৃথিবীতে কিছুই শ্বাশত নয় ।পালি সাহিত্যে বুদ্ধ ক্ষণিকবাদ কে দীপশিখার উপমা দিয়ে বুঝিয়েছেন সেখানে তিনি বলেছেন -একটি দীপশিখা আপাতদৃষ্টিতে অপরিবর্তনীয় , অখন্ড এবং অবিভাজ্য মনে হয় কিন্তু যখন তা নিভে যায় সেই জায়গাই নুতন দিপশিখা স্থান করে নেয় ; দুঃখও আসলে তাই একটা দুঃখ নিরসন হলে সেইখানে নুতন কোন দুঃখ আসে।

কিন্তু কেন খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ থেকে বৌদিকধর্ম এবং ব্রাহ্মণ্যধর্মের প্রতিবাদীধর্ম হিসাবে বৌদ্ধধর্ম জৈন আজীবিক নামক ধর্ম গুলির তৈরি হল …এর পেছনে অবশ্যই আছে অর্থনৈতিক একটি কারন বৈদিকধর্মের আচারসর্বস যাগ যজ্ঞের গুরুত্ব কমতে থাকে কারন নগরায়ণের সাথে সাথে ব্যবসা বানিজ্যের বারতে থাকে । আর ব্রক্ষণ্য ধর্মে পশুবলি ফলে বানিজ্যিক সম্প্রদায়গুলি ক্ষতি হতে থাকে তাই তাদের প্রয়োজনেই এবং পৃষ্ঠপোষকতায় এই প্রতিবাদীধর্ম গুলি গড়ে উঠেছিল । বৌদ্ধধর্মে জাতপাতের কোন গুরুত্ব ছিলনা অহিংসার পথে জীবন যাপনকেই বৌদ্ধরা শ্রেষ্ঠ বলে মনে করতেন ।এমন একটি ধর্মমত যা গোটা পৃথিবীতে তার ছাপ ফেলতে সক্ষম হয়েছিল সেই বৌদ্ধধর্মের উৎস ও বিকাশলাভ মূলত ভারতবর্ষে ;কিন্তু আজ এই ধর্মমত ভারত থেকে নিচিহ্নি কেন বা অাদৌ কি তার কোন চিহ্ন নেই ..? বোধহয় আছে কারন বৌদ্ধধর্মের অহিংসা, সত্যপথ হিন্দুধর্মের বর্তমান ;বৌদ্ধধর্মের আলাদা একটি ধর্ম হিসাবে থেকে না যাওয়ার কারন হল ব্রাহ্মণ্যধর্মেও সময়ের সাথে সাথে অনেক পরিবর্তন আসে;যাগ-যজ্ঞের তেমন কোন গুরুত্ব থাকেনা তাই বুদ্ধ আর প্রতিপক্ষ ভাবা হল না তাঁকে ব্রাহ্মণ্যদেবতা বিষ্ণু এক অবতার বলে মেনে নেওয়া হল ফলে বৌদ্ধধর্ম আর স্বাতন্ত্র্য হারিয়ে ফেলে।