এক নজরে

#EknathShinde : অটোচালক থেকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী

By admin

July 02, 2022

একজন অটোরিকশা চালক হিসাবে জীবন শুরু করে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেছেন যিনি তিনি আশির দশকে কলেজের পড়া ছেড়ে বালাসাহেবের ডাকে সাড়া দিয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে পা রেখেছিলেন। ঘটনাচক্রে সেই শিন্ডের বিদ্রহের কারণেই বালাসাহেবের পুত্র ক্ষমতা হারিয়েছেন। এখন মহারাষ্ট্রের স্টিয়ারিং শিন্ডের (EknathShinde) হাতেই। কে এই একনাথ? মহারাষ্ট্রের সাতারায় নিম্ন মধ্যবিত্ত মরাঠি পরিবারে জন্ম একনাথ শিন্ডের। পরে তার পরিবার চলে যায় ঠাণেতে। পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অল্প বয়সেই শুরু করেন অটোরিকশা চালানো।

১৯৯৭ সালে ঠাণে পুরসভার নির্বাচনে জিতে তিনি রাজনীতিতে পা দিয়েছিলেন। ২০০৪ সালে প্রথম মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে জেতেন। তারপর ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের বিধানসভা ভোটেও জয়লাভ করেন।তিনি মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার দায়িত্বও পালন করেছেন। ২০১৪ সালে বিজেপি-শিবসেনা জোট সরকারের মন্ত্রীও হন তিনি। ২০১৯ সালে মহাবিকাশ আঘাডী সরকারের নগরোন্নয়ন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী হন। শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বিধান পরিষদের সদস্য হওয়ায় বিধানসভার দলনেতার দায়িত্ব পান।

মুখ্যমন্ত্রী পদে নাম ঘোষণার পর জানা যাচ্ছে প্রায় ১২ কোটি টাকার মালিক তিনি। ১৯৯৭ সালে থানে মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কর্পোরেটর, ২০০২ সালে ফের দ্বিতীয়বার। এরপর থানের কোপারি-পাচপাখাড়ি কেন্দ্র থেকে পরপর চারবার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন। উদ্ধব ঠাকরের মন্ত্রিসভায় তিনি নগরোন্নয়ন বিভাগের মন্ত্রী ছিলেন। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী রিকশাচালক থেকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে পৌঁছনোর পথে তিনি রোজগার করেছেন ১১.৫৬ কোটি টাকারও বেশি। এর মধ্যে ৯.৪৫ কোটি টাকা স্থাবর সম্পদ এবং ২.১০ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ।

একনাথ শিন্ডের মোট সাতটি গাড়ি রয়েছে- দুটি স্করপিও, একটি বোলেরো, দুটি ইনোভা এবং একটি আর্মাডা। এছাড়া একটি টেম্পো। ২০১৯-এ এই সমস্ত গাড়ির সম্মিলিত মূল্য ছিল ৪৬ লক্ষ টাকা।

হলফনামায় শিন্ডে ( EknathShinde ) বলেছেন তিনি ১১০ গ্রাম সোনার মালিক এবং তাঁর স্ত্রী ৫৮০ গ্রাম সোনার মালিক। এছাড়া তাঁর একটি রিভলবার এবং একটি পিস্তল রয়েছে। এই দুটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং সোনার বাজার মূল্য হল ২৫ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা।তিনি বিনিয়োগ করেছেনশিবম পরিবহনে ৩ লক্ষ, শিবম এন্টারপ্রাইযে ১১ লক্ষ, বোম্বে ফুড প্যাকারসে ৮ লক্ষ টাকা। মহাবালেশ্বরের দারে গ্রামে তাঁর নামে প্রায় ১২ একর কৃষি জমি আছে। থানের চিখলগাঁওয়ে তাঁর স্ত্রীর নামে রয়েছে ১.২৬ হেক্টর কৃষি জমি। ২০১৯ সালে ওই দুই জমির বাজার মূল্য ছিল ২৮ লক্ষ টাকা। থানে পশ্চিমের ওয়াগল এস্টেটে তাঁর ৩৬০ বর্গ ফুটের একটি ঘর। ল্যান্ডমার্ক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটিতে ২৩৭০ বর্গ ফুটের একটি ফ্ল্যাট। শিবশক্তি ভবনে তার স্ত্রীর নামে একটি ১০৯০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট রয়েছে। সব মিলিয়ে ২০১৯ সালে বাড়ি ও ফ্ল্যাট সমেত ৯ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। এছাড়া, ওয়াগল এস্টেটে শিন্ডের স্ত্রীর নামে একটি ৩০ লক্ষ টাকার দোকানও রয়েছে।

কট্টর শিব সৈনিক শিন্ডের হঠাৎ বিদ্রোহী মনোভাব তাঁর দলের লোকজনকেও অবাক করেছে। হঠাৎ তার মনোভাবের পরিবর্তণের কারন, গত কয়েকদিন ধরে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এবং সঞ্জয় রাউত উভয়ের উপরই ক্ষুব্ধ এবং তাকে সরিয়ে দিয়ে আদিত্য ঠাকরেকে গুরুত্ব দেওয়ায় ক্ষুব্ধ। শিন্ডে গত সপ্তাহে আদিত্য ঠাকরের সাথে অযোধ্যায় গিয়েছিলেন, কিন্তু শিন্ডেকে তাঁর নগর উন্নয়ন ও পি.ডব্লিউ.ডি বিভাগে অবাধে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় ক্রমাগত তার মন্ত্রকের উন্নয়ন কাজগুলি পর্যবেক্ষণ করে এবং সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদনের প্রয়োজন হচ্ছিল, এবং আদিত্য ঠাকরে শিন্ডের বিভাগে হস্তক্ষেপ করছিলেন। সূত্রের খবর, শরদ পাওয়ার বা এনসিপি বিধায়করা শিন্ডেকে সহযোগিতা করছিলেন না। এমনকি উদ্ধব ঠাকরেও তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি। এই কারণে দলে কোন্দলের সৃষ্টি।

এছাড়া ২০১৯ সালেযখন ঘোষণা করা হয়েছিল যে মুখ্যমন্ত্রী হবেন শিবসেনা, তখন সেই দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন একনাথ শিন্ডে। কিন্তু সঞ্জয় রাউত এবং সুভাষ দেশাই জানিয়েছিলেন ঠাকরে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শিন্দের চেয়ে বেশি যোগ্য। এরপর থেকে তার ক্ষত ক্যানসারে পরিণত হতে থাকে। এর পরে, কফিনে চূড়ান্ত পেরেকটি প্রমাণিত হয়েছিল রাউতের হাতে রাজ্যসভা আসন হস্তান্তর এবং এমএলসির দায়িত্ব।